অভিনয়
পর্বঃ২
রাত্রীর কাছে সব কিছু শুনে তিশা নিজেও কান্না করে দিছে..
রাত্রীঃআরে আপু তুমি কাঁদছ কেনো??
তিশাঃআমাকে একদম আপু বলবে না ভাবি বলবে ভাবি..
রাত্রীঃকিন্তু ভাইয়া..
তিশাঃতোমার ভাইয়া রাজি হোক আর না হোক আমি তোমার ভাবি হতে চলেছি সেটা তুমি জেনে রাখো...
রাত্রী;আপু তুমি আমার ভাইয়াকে চিনো না ও কাওকে বিয়ে করবে না..
তিশাঃআবার আপু বলছি না আমাকে ভাবি বলবে.
আর শোন তোমাদের বাসার ঠিকানা দাও আমি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমার আব্বু আম্মুকে নিয়ে তোমাদের বাসায় যাচ্ছি..
রাত্রী ওদের বাসায় ঠিকানা দিয়ে দিলো//
তিশাঃশোন রাত্রী এইসব কিছুই এখন কাওকে বলবে না,,আমি সব বলবো হ্যা জানি তোমার ভাইয়াকে মানাতে কষ্ট হবে তবে ব্যাপার না তোমার ভাইয়া ঠিক মেনে যাবে..
এই কথা বলে তিশা চলে আসলো..
তিশা ওদের বাসায় এসে ওর আব্বু আম্মুকে ডাকতে শুরু করলো
কিরে মা এমনভাবে চেঁচাচ্ছিস কেনো??
তিশাঃআম্মু আমি বিয়ে করবো..
তিশার আম্মুঃসেটা তো খুব ভালো কথা..
আমি তোর আব্বুকে এখনি বলছি রকির আব্বুর সাথে কথা বলতে..
তিশার আম্মুর কথা শুনে তিশা রেগে একদম আগুন..
তিশাঃআম্মু আমি কি একবারো বলেছি আমি অই রকি বদমাইশকে বিয়ে করবো..পুরো কথা না জেনে না শুনে কেনো অন্যটা ভেবে বস বল তো??
তিশা আম্মুঃতাহলে কি তোর আব্বুকে বলবো তোর জন্য ছেলে দেখতে..
তিশাঃনাহ আম্মু ছেলে আমার দেখাই আছে আমরা সবাই ছেলেদের বাসায় যাবো.
তিশার আম্মুঃসেকিরে কোনন ছেলে ছেলের বাসা কোথায়?ছেলে কি করে??
তিশাঃএতো সব কিছু তোমার এখন জা জানলেও চলবে আপাতত চলো আমরা ছেলের বাসা থেকে ঘুরে আসি..আর আম্মু শোনো তোমার আর আব্বুর ছেলে পছন্দ হোক আর না হোক আমি কিন্তু অই ছেলেকেই বিয়ে করবো।।
তিশার আম্মুঃতাহলে আমাদের যাওয়ার দরকার কি?আর ছেলে দেখারই বা কি দরকার তুই নিজেই তো সব ঠিক করে ফেলেছিস এখন বিয়ে টা তুই নিজেই করেনে,,
তিশাঃআরে আম্মু তুমি রাগ করছ কেনো??
আমি তোমাদের একমাত্র মেয়ে আমার জামাইকে তোমরা দেখবে না সেটা হয়,,আব্বু কে বলো কাল আমরা ছেলের বাসায় যাচ্ছি..
মেয়ের জেদ সম্পর্কে তিশার আম্মু ভালো করেই জানে..তবে সে এই বিষয়ে কিছুতেই সায় দিতে পাড়ছে না.
তার কেনো জানি মনে হচ্ছে তার মেয়ে ভুল করতে যাচ্ছে..?তবে একবার ছেলেকে দেখতে গেলো তো আর বিয়ে হয়ে যাবে না,,তাই তিশার আম্মু বললো আচ্ছা ঠিক আছে কালকে আমরা সবাই যাচ্ছি..?
তিশা আম্মুকে জড়িয়ে ধরে একটা কিস দিয়ে ওর রুমে চলে গেলো..এখন বারবার শুধু মামুনের কথাই মনে পড়ছে..একদিনের দেখাতেই তিশা মামুনকে অনেক ভালোবেসে ফেলেছে
সেদিন রাতে তিশা আর ঘুমাতে পাড়লো না..
পরদিন দুপুরবেলা তিশা ও ওর আব্বু আম্মু মামুনদের বাসায় গেলো..
কলিংবেল চাপতেই রাত্রী এসে দরজা খুলে দিলো..
রাত্রীঃআরে আপু তোমরা??আমি তো ভাবতেই পাড়ছি না তুমি সত্যি সত্যি আমাদের বাসায় আসবে..
আমি তো ভেবেছিলাম তুমি আমার ভাইয়াকে নিয়ে মজা করছো
তিশা;এখন তোমার ভাবনা পাল্টেছে তো??
রাত্রীঃহ্যা আাাাাাা না না ভাবি..
তিশাঃএই তো আমার লক্ষি ননদের মত কথা..
যাও গিয়ে তোমার আব্বু আম্মুকে ডেকে নিয়ে আস..
রাত্রী তিশাদের বসতে দিয়ে মামুনের আব্বু আম্মুকে ডাকতে চলে গেলো..
কিছুক্ষণ পর..
মামুনের আব্বু আম্মু আসলো..
তিশা গিয়ে তাদের সালাম করলো..
আরে থাক থাক মা সালাম লাগবে না..
তিশার আব্বু বললো হ্যা তা যার জন্য আসা
আপনার ছেলে আর আমার মেয়ের চার হাত এক করে দিতে চাই..আসলে আমরা আপনার ছেলেকে দেখিনি..আমাদের মেয়েই আপনার ছেলেকে দেখে পছন্দ করেছে..
আব্বুঃআপনারা কি আমার ছেলের সম্পর্কে সব কিছু বিস্তারিত জানেন??
তিশাঃআব্বু ওনারা না জানলেও চলবে আমি আপনার ছেলেকে নিয়ে সংসার করবো ওনারা না..
মেয়ের এমন কথা শুনে তিশার আব্বু আম্মু আর কিছু বলতে চেয়ে আর কিছু বলতে পাড়লো না,,
আব্বুঃকিন্তু সব কিছু জেনে একটা ডিসিশন নেওয়া দরকার যাতে করে পরে কোনো ফ্যামিলি বলতে না পারে আমরা কিছু লুকিয়েছি.
তিশার আব্বুঃহ্যা সেটাই ভালো হবে বলুন আপনার ছেলেরর সম্পর্কে
আব্বুঃআসলে আমার ছেলে কথা বলতে পারে না,,এমনিতে সব ঠিক আছে শুধু চুপচাপ থাকে।।
আব্বুর কাছে এমন কথা শুনে তিশার আব্বু আম্মু কাশি দিয়ে উঠলো..
তিশার আম্মুঃআচ্ছা আমরা তাহলে আজকে যাই
বাসায় গিয়ে আমাদের সিদ্ধান্তের কথা আপনাদের জানিয়ে দিবো..
তারা আর বেশিক্ষণ দেড়ি না করে চলে গেলো..
আব্বুঃধুর শুধু শুধু অপমানিত হওয়া..আর রাত্রী তোর কি আক্কেল জ্ঞান কিছুই নেই কোথাকার কোন মেয়ে এসে তোকে কি বললো আর তুই ধুর
শোন রাত্রী এরপর থেকে কেও কিছু জিজ্ঞাস করলে
বলবি মামুন বিবাহিত আর ওর সংসার আছে ও নিজের মত করে ওর সংসার সাজিয়ে নিয়েছে..
আর মামুন এখন কোথায় রে??
রাত্রীঃভাইয়া তো একটু আগে বাইরে চলে গেছে..
আব্বুঃআচ্ছা ওকে এই বিষয়ে কিছু বলিস না
বললে আবার মন খারাপ করে বসে থাকবে..
অন্যদিকে তিশাদের বাসায়..
তিশা তুই কি আর কোনো ছেলে খুঁজে পেলি না বিয়ে করার মতন
.
এমন একটা ছেলেকে তুই পছন্দ করলি যে কিনা কথাই বলতে পারে না.
তিশাঃআমি এতো কিছু শুনতে চাই না আমি মামুনকে বিয়ে করবো এটাই আমার শেষ কথা
তিশার আম্মুঃকিন্তু মা অই ছেলেকে বিয়ে করলে তোর জীবন বরবাদ হয়ে যাবে..
তিশাঃবরবাদ নয় আমার জীবন সুন্দর হয়ে উঠবে
তিশার আব্বুঃকিন্ত্ আমরা তো ছেলেটাকে দেখলামইই না..
তিশাঃআমার কাছে ছবি আছে আমি দেখাচ্ছি
সেদিন তিশা যখন মামুনকে দেখেছিলো তখন কয়েকটা ছবি তুলে রেখেছিলো
এই দেখো মামুন..
তিশা আব্বু আম্মু ছবি দেখে বললো এমনিতে তো সব ঠিক আছে কিন্তু কথা
তিশাঃউফফ আব্বু আম্মু এই কথার বিষয়টা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দাও তো.
ও কথা বলতে পারেনা এতে তো
আমারই ভালো হলো আব্বু,,
তিশার আব্বুঃসেটা কিভাবে??
তিশাঃজানোই তো সংসারে একটু আকটু ঝগড়া লাগে সেটা লাগবে না,একদম শান্তিতে সংসার করতে পারবো..তোমরা প্লিজ আর না করো না,,পাড়লে আমাদের বিয়েটা তাড়াতাড়ি করে দিয়ে দাও..
তিশার আব্বুঃপরে কিন্তু এটা বলতে পাড়বি না যে আমরা কেনো তোকে আটকায়নি তোর জীবন আমাদের জন্য নষ্ট হয়ে গেছে..
তিশাঃনাহ আব্বু এই কথা কোনো দিন তোমাদের শুনতে হবে না সেটা আমি তোমাদের বলছি
তিশার আব্বুঃতাহলে আমার কোনো আপত্তি নেই..
ছেলে দেখতে শুনতে ভালো.ফ্যামিলি টাও ভালো
পরদিন আবার তিশা ও ওর আব্বু আম্মু মামুনদের বাড়িতে..
আজ মামুন বাসায় ছিলো..
যখন বিয়ে নিয়ে কথা হচ্ছে মামুন চুপচাপ সব শুনছে..
তিশার আব্বুঃঅনেক ভেবে দেখলাম আর ভাবলাম ওদের চার হাত এক করেই দেওয়া যাক..
আব্বুঃহ্যা আমরাও তাই ভাবছি আপনার মেয়েও অনেক লক্ষি..আর আমাদের মেয়ে আছে আর কয়দিন কয়েকদিন পর তো শশুড় বাড়ি চলে যাবে
রাত্রীঃআব্বু তুমি আমাকে পর করে দিতে চাচ্ছ
আব্বুঃব্যাপার সেটা না মেয়েদের আসল ঠিকানা তার শশুড় বাড়ি বাবা মা যতই আগলে রাখুক একদিন শশুড় বাড়ি যেতেই হয়..
তিশাঃআমি মামুনের সাথে আলাদা করে একটু কথা বলতে চাই..
তিশা মামুনকে নিয়ে চলে গেলো মামুনো মনে হয় এটাই চাচ্ছিলো
তাই তিশার সাথে চলে গেলো ছাদে গেলো দুজনন..
তিশাঃআচ্ছা আমাকে তোমার কেমন লেগেছে?
মামুন কোনো উত্তর দিচ্ছে না.
তিশাঃঅহহ তুমি তো আবার কথা বলতে পারো না,,
আমি বলছি শোন অধরা তো আর বেচে নেই অধরার সৃতি নিয়ে আর কতদিন বাচবে বলো.
তার থেকে ভালো তুমি অধরাকে ভুলে যাও অধরার যায়গাটা আমাকে দাও তোমাকে অনেক সুখে রাখবো
ঠাসসস ঠাসসস
মামুন তিশার দুই গালে দুইটা চড় বসিয়ে দিলো.
কিছু বলতে চাচ্ছে মামুন কিন্তু বলতে পাড়ছে না
তবে চোখ মুখ দেখে মনে হচ্ছে অনেক রেগে আছে
তিশা ভয় পেয়ে
কি করবে সেটা বুঝতে
কিন্তু কি হলো তিশার মাথায় একটা দুষ্টু বুদ্ধি ভর করলো
মামুনের গালে একটা কিস করে দৌড়ে পালিয়ে গেলো
মামুনের কেমন জানি একটা অনুভূতি হলো যেমনটা অধরার ছোয়ায় হতো ঠিক তেমন টাই.
তিশা নিচে চলে আসছে কিছুক্ষণ পর মামুন আসলো.
আব্বু মামুনকে জিজ্ঞাস করলো মামুন তুই বিয়ে করবি
মামুন হ্যা না কিছুই বলছে না
মামুনের নিরবতাকে সবাই হ্যা হিসেবে ধরে নিলো.
মামুন একটা ঘোরের মধ্যে আছে
তিশার ছোয়ার অধরাকে অনুভব করতে পারছিলো তখন
--------------------------------------------
https://banglalovestory247.blogspot.com/
tags:
Banglalovestory247, love story bangla, love story, নতুন রোমান্টিক লাভ স্টোরি, লাভ স্টোরি, রোমান্টিক লাভ স্টোরি বাংলা, ভালোবাসার গল্প, প্রেমের গল্প,নতুন ভালোবাসার গল্প, রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প, সেরা ভালোবাসার গল্প, প্রেমের গল্প ও কবিতা,
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন