গল্পঃ ভালোবেসে বিয়ে❤️
শাড়িও পড়বো বৌ ও সাঁজবো কিন্তু তার আগে কিছু কথা বলবো।
নোমান আর রিফা সিঁড়িতে পাশাপাশি বসলো। রিফা কি বলবে তা মনে মনে সাঁজিয়ে নিলো।
-নোমান ভালোবাসো আমাকে?
--কোন সন্দেহ আছে?
-আমার কিছু খারাপ দিক আছে।
--তোমাকে তো আগেই বলেছি আমার তাতে কিছু যায় আসেনা। তুমি যেমনি হও আমার কোন সমস্যা নেই শুধু আমার প্রতি ভালোবাসা সত্যি থাকলেই হবে।
সমস্যা নেই কারন আমি রূপবতী তাই?
--তুমি এভাবে কথা বলছো কেন?
-নোমান আমি তোমাকে যেটা বলবো সেটা শোনার পরে হয়তো তুমি আমাকে বিয়ে করতে চাইবেনা।
--দেখ রিফা তুমি হয়তো আমাকেও আর দশটা ছেলের মতোই ভাবছো। আমি অন্যসবার থেকে আলাদা।
-না তুমি অন্য সবার থেকে আলাদা সেটা তোমার লেখা পড়েই বুঝা যায়। সেজন্যই তো তোমার প্রেমে পড়েছিলাম। আচ্ছা তাহলে আমার কথাটা বলি, আমি একজন কলগার্ল।
রিফার কথা শুনে নোমান কিছুক্ষনের জন্য বাকরুদ্ধ হয়ে গেলো। কেন যেন তার মনে হচ্ছে রিফা মিথ্যা বলছে তাকে পরিক্ষা করার চেষ্টা করছে। নোমান নিচু গলায় বললোঃ
-আমার কোন আপত্তি নেই।
--ভেবে বলছো?
-হ্যাঁ…
--আমার ধারণা তুমি আমার কথা বিশ্বাস করোনি। ওয়েট এটা দেখ।
-এটা কি?
--আমার রেইপড ভিডিও। এটা দিয়ে ব্লাকমেইল করেই আমাকে এই কাজে নিয়ে আসা হয়েছে। আমার শরিরটাকে তারা নষ্ট করলেও মনটা এখনো পবিত্র আছে। ভিডিওটা সাইডে গিয়ে দেখ আমার সামনে দেখোনা প্লিজ।
নোমানের হাত থেকে ফোনটা পড়ে গেলো। তার শরির থরথর করে কাঁপছে। কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমতে শুরু করেছে। ঠোট আর গলা শুকিয়ে গেছে। বড্ড পানি তেষ্টা পাচ্ছে। নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছেনা সে। রিফা বললোঃ
--এখন বলো সবকিছু মেনে বিয়ে করতে চাও আমাকে?
নোমান চুপ করে আছে। তার মুখে কোন কথা নেই। রিফা আবারো বললোঃ
-চুপ করে রইলে যে। হ্যাঁ না কিছু তো বলো।
--রিফা আমাকে একটু সময় দাও। সবকিছু কেমন যেন এলোমেলো মনে হচ্ছে।
-কেন নোমান এখন ভাবার জন্য সময় লাগবে কেন। তুমি না বলতে আমার কোন অতিত ঘটনায় তোমার কিছু যায় আসেনা।
নোমান চুপ করে আছে। রিফা বললোঃ
-আঁখি মেয়েটা জানে আজ তোমার বিয়ে?
--কোন আঁখি?
-সেই কালো মেয়েটা যার সাথে তোমার দুবছরের সম্পর্ক ছিলো। আমি আসায় যাকে ব্যবহৃত টিস্যুর মতো ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছো।
--আঁখির কথা তোমাকে কে বললো?
-বোকা মেয়েটা তোমাকে সত্যি ভালোবাসে। কোন ভাবে আমাকেই সে খুঁজে বের করেছে। আজ দেখা করে কাঁদতে কাঁদতে শুধু এটুকু বলেছে আপু ওকে ভালো রেখো। তার সাথে কেন প্রতারণা করলে নোমান?
--হ্যাঁ?
-তার দোষটা কি ছিলো, এটাই যে সে আমার মতো রূপবতী ছিলোনা? কিন্তু তুমি তো গল্প লিখতে কিভাবে এক সুদর্শন যুবক কালো একটা মেয়ের প্রেমে পড়ে। তুমি কেন দুবছরে আঁখিকে ভালোবাসতে পারলেনা? একটা পতিতা মেয়ের ভালোবেসে সংসারের গল্প লিখেছিলে তাহলে এখন কেন আমাকে মেনে নিতে পারছোনা? চুপ করে আছো কেন কথা বলো।
--সরি…
-সরি তাইনা। এসব আবেগ নিয়ে লিখা বড্ড সোজা কিন্তু যদি বাস্তব জীবনে এমন হতে না পারো তবে এমন গল্প লিখোনা। ভালো মানুষ হও, ভালো মানুষের মুখোশ পরোনা। এখন চোখের সামনে থেকে যাও তোমাকে দেখতেও ঘৃণা লাগছে।
নোমান চলে গেছে, রিফা বউ সেঁজেছে। রিক্সা চলছে রিক্সার হুড নামানো। লোকজন রিফার দিকে তাকাচ্ছে। রিফার চোখে পানি ছলছল করছে। মুখোশের পেছনের মানুষগুলোকে চেনা বড় দায়।
**********************************
https://banglalovestory247.blogspot.com/
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন