❤️ গল্পঃ অবুঝ ভালোবাসা❤️
ইরার মোবাইলে রাত দেড়টার দিকে হঠাৎ
রিং বেজে ওঠে।ঘুম ভেঙে যায় ইরার।
বিরক্তিতে মোবাইলের দিকে তাকায় ইরা।
নাম্বারটা এত পরিচিত।আজ থেকে চার বছর
আগে,
যে মোবাইল থেকে একটু দেরি করে কল এলে,
যে মানুষটা একটু অবহেলা করলে কান্নায়
এনাটমি,বায়োকেমিস্ট্রি,ফিজিওলজি কত
বইয়ের পাতা একাকার হয়ে যেত, এতো সেই
নাম্বার।অনেকদিন পর আবার বুকের মাঝে সেই
আগের চিরচেনা কাঁপন, তীব্র অনুভতি।
ক্লাস সিক্সে ইরাকে প্রথম দেখে নিলয়।
মায়াবী চেহারার মিষ্টি মেয়ে ইরা। অপূর্ব
তার
চোখ দুটি।এতো সুন্দর মায়া হরিণীর
মতো চোখ,পাগল করে দেয় নিলয়কে।প্রথম
দেখাতেই জীবনের সব রঙ এলোমেলো হয়ে যায়
নিলয়ের।পড়াশুনা যার জগৎ সেই নিলয় বই
নিয়ে বসতে পারে না,দুষ্ট প্রাণোচ্ছ্বল
ছেলেটি একেবারে নিশ্চুপ হয়ে যায়।
কোথা থেকে এতো শূণ্যতা এসে ভর করে বুকের
মাঝে।কার জন্য বুকের
মাঝে এতো রক্তক্ষরণ।'তোমায়
ভালোবাসি ইরা,ভালোবাসি।এ
ভালোবাসা পৃথিবীর আর কেউ তোমায়
দিতে পারবে না।বিশ্বাস কর ইরা, আমি
সত্যিই তোমায় পাগলের মতো ভালোবাসি।'
প্রতিদিন সকাল নয়টার জন্য যেন নিলয়ের
বেঁচে থাকা,সু্খ,আনন্দ,অনুভূতি।ক্যাডেট
কোচিং এর গেটের সামনে দাঁড়িয়ে নিলয়
অপেক্ষা করে ইরার জন্য।একপলক তোমায়
দেখলে জীবনের সব অনুভূতির পুনর্জন্ম হয়।
পৃথিবীটা অনেক সুন্দর মনে হয়।প্রতিদিন দেড়
ঘণ্টা ক্লাসের বেশির ভাগ সময়ই নিলয় ইরার
দিকে চেয়ে থাকে।বলবো বলবো করেও
ইরাকে বলা হয়ে ওঠে নি ভলোবাসি।
দেখতে দেখতে চলে যায় দিন,মাস।ক্যাডেট
কলেজের লিখিত পরীক্ষার আগে হঠাৎ
কোচিং ছেড়ে চলে যায় ইরা।
হৃদয়ের ভেতরের অব্যক্ত রক্তক্ষরণে রক্তস্নাত হয়
নিলয়ের বাম হাত, লেখা হয় ছোট্ট একটি নাম
ইরা। ক্যাডেট কলেজের মেডিকেল চেকআপের সময়
যাতে হাতে লেখা ইরা নাম কেউ
দেখতে না পায়, তাই নিজের হাত পুড়ায় সে।
ভালোবেসে জ্বলে পুড়ে যাওয়ার জন্যই
বুঝি নিলয়ের জীবন।এতো পাগলামি কি কেউ
করতে পারে।
সেই যে ইরা চলে গেল তারপর বছর ধরে
বুকের মাঝে নিলয় সযত্নে লালন করে ইরার নাম।
একতরফা ভালোবেসে যায় নিলয়।
জানে না কোনদিন ইরাকর দেখতে পাবে কিনা,তবুও একমনে করে যায়
ভালোবাসার দেবীর সাধনা।মনের
মন্দিরে আশার দ্বীপ জ্বেলে বছরের পর বছর
আপেক্ষা।কত পহেলা ফাল্গুন,ভেলেন্টাইনস
ডে তে নিভৃতে একা একা পথ চলা।
হাজারো মানুষের ভিড়ে দুঃখ
ফেরী করে বাঁচা।
এর মাঝে নিলয় বুয়েটে ভর্তি হয়।
ইট,কংক্রিটের
জীবনে,যান্ত্রিকতার ভীড়ে একাকী নিভৃত
রাতে কতো যে চোখের জল ফেলা।'শুধু একবার
তোমায় দেখব ইরা,শুধু একবার'।
সত্যিকারের ভালোবাসা ফিরে আসে,হৃদয়
ছোঁয়ে ছোঁয়ে যায়।চার বছর ধরে নিরন্তর
চলেছে ইরাকর খোঁজে পাওয়ার সাধনা।১৮
মার্চ,২…আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয়
ডিবেটিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে নিলয়
বুয়েট থেকে যায় ময়মনসিংহ মেডিকেল
কলেজে।সেই মায়া হরিণী চোখ,সেই পাগল
করা মুখ, যার জন্য এত অপেক্ষা, এত নিলয়ের
ইরা।।
তারপর অনেক কষ্টে মোবাইল নাম্বার নেওয়া।
তারপর কত রাত, কত দিন ইরারকাছে হ্রদয়ের
অনুভূতি ব্যক্ত করা।এত প্রেম,এত
ভালোবাসা অস্বীকার করার
ক্ষমতা হয়তো স্রষ্টা কোন মেয়েকে দেয় নি।
তাই ইরাও একসময় নিলয়কে পাগলের মত
ভালবাসতে শুরু করে।ইরার ধ্যা্ন, জ্ঞান নিলয়।
দুটি হ্রদয় ভালোবেসে একাকার হয়ে যায়।
সপ্নের মত কেটে যায় চারটি বছর।
রমনা পার্ক,জিয়া উদ্যান,গুলশান,
বারিধারা পার্ক কত জায়গায়, কত অজস্র
ভালোবাসা সপ্নের ডানা মেলে।
তারপর……জেদী মেয়ে ইরা বাবা মার
চাপে বিয়ে করে লন্ডন থেকে FRCS করা কোন
এক ডাক্তার পাত্রকে।এইতো জীবন,
এইতো ভালোবাসা।
আর নিলয়…………ও পারে নি ঘুমের ওষুধ
খেয়ে বা ড্রাগ নিয়ে চিরতরে শেষ
হয়ে যেতে।মানসিক আঘাত সহ্য
করতে না পেরে আস্তে আস্তে নির্বাক,নিশ্চুপ
হয়ে যায়। পাবনা মেন্টাল হসপিটালের ২০২ নাম্বার রুম
এখন ওর ঠিকানা।কথা বলতে পারে না,শুধু সবার
দিকে চেয়ে থাকে,মোবাইলটা বুকের
মাঝে আটকে রাখে আর চোখ দিয়ে টপটপ
করে পানি পড়ে। হ্য়তো অপলক দৃষ্টিতে
মানুষের দিকে তাকিয়ে ভাবে,ইরা আসবে,
এই ভাবনাগুলো আর কোনদিন ইরার জানা হয় না।
সেই পরিচিত নাম্বার থেকে অপরিচিত
একটি কণ্ঠস্বর শোনা যায়, 'নিলয় আর
পৃথীবিতে নেই। মারা যাওয়ার আগে ও
কাগজে আপনার মোবাইল নাম্বার আর
একটা কথা লিখে যায়, এই পৃথিবী বা পৃথিবীর পর
যদি আর কোন জগত থাকে,ততদিন তোমায়
ভালোবাসব, ভালো থেকো।'
'কারো ভালোবাসার ভাবনা হ্রদয়ের অলিখিত
কাব্যকে কলমের মাঝে প্রকাশ করার ক্ষমতা
নেই আমার। মাফ করে দিও নিলয়'।
********************************
https://banglalovestory247.blogspot.com/
Tags:
Banglalovestory247,
love story bangla,
love story,
নতুন রোমান্টিক লাভ স্টোরি,
লাভ স্টোরি,
রোমান্টিক লাভ স্টোরি বাংলা,
ভালোবাসার গল্প,
প্রেমের গল্প,
নতুন ভালোবাসার গল্প,
রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প,
সেরা ভালোবাTags:
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন