সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

গল্পঃ ঝগড়াটে বউ💛💛💛



 গল্পঃ ঝগড়াটে বউ

------------------------

গতকাল বউয়ের সাথে হেব্বি ঝগড়া হইছে। এমনকি ঝগড়া এক পর্যায়ে হাতাহাতিতে পৌঁছেছিলো। ফ্রিজে থাকা আলু,বেগুন,টমেটো এইগুলা দিয়া ঢেইলা ঢেলি হইছে,,তারপর শুরু হইছে বালিশ দিয়া পিটানি। বউ দেয় এক বারি আর আমি দেই তিন বারি। বউ আমার সাথে ঝগড়ায় না পেরে রাগ করে হেতির বাপের বাড়ি চলে গেছে। অবশ্য ঝগড়া লাগারও একটা কারন আছে। কারনটা হলো....


সকাল যত ঘনিয়ে আসে ঘুম আমার ততো গাঢ় হয়। আর সেই ঘুম যদি কেউ ভাইঙ্গা দেয় তাইলে তো মেজাজ এমনিতেই খারাপ হইয়া যায়।


নাক ডেকে ঘুমোচ্ছি ঠিক তখনি অনুভব করলাম কে যেন আমার গায়ের মধ্যে পানি ঢেলে দিছে। ধরফর করে উইঠা দেহি বউয়ের হাতে বাল্টি, কোমরে শাড়ী পেছিয়ে রাগি লুক নিয়ে তাকিয়ে আছে। আর একটু দূরে দাড়িয়ে আমার মেয়ে খিলখিল করে হাসতেছে। মেয়ে লাফাচ্ছে আর বলতেছে...


"কি মতা কি মতা আব্বুল ছুলিলে পানি,হিহিহি...কি মতা কি মতা"


ঐ এত্ত সকালে পানি দিলা ক্যান?


-তয় কি করমু,তুমি নাক ডাইকা ঘুমাও ক্যান?


--নাক কি তোমার বাপের,, যে ডাকা যাইবোনা।


-কি কইলা তুমি,, তুমি আমার বাপ তুইলা কথা কইলা? (রাগে)


--ক্যারে আমি আমার শশুরের নামে কি কই কই,,সেইটা আমার ব্যাপার তাই তোমার কি?


বউ আর কিছু কইলো না। রাগে গজগজ করতে করতে রান্না ঘরে চলে গেলো। আর মুই ইতিমের মতো ভেজা শরীর নিয়ে বিছানার উপরে বান্দরের মতো বসে আছি। আমিও উঠে চলে গেলাম ফ্রেশ হতে।


আমি আর টুম্পা(আমার মেয়ে)লুডু খেলছি। আর হাসাহাসি করছি,এই দেখে বউ আমার আরো রেগে গেছে। আহহহহ....কি শান্তি। হঠাৎ টুম্পা বলল....


-আব্বু, আম্মুনা খুব রাগ কলতে।


--আরে তোমার আম্মুর ফকিন্নি মার্কা রাগ বাদ দেও।


-আব্বু পুকিন্নি কি?(উৎসুক দৃষ্টিতে)


--ও কিছুনা, আসো আমরা লুডু খেলি। এই,,গুটি একটা ছয়.......


-না আব্বু তুমি বলো,, পুকিন্নি কি?


--আরে ও কিছুনা বাদ দেও।


অমনি আমার মেয়ে দৌড়ে জান্নাতের (আমার বউ) কাছে গেলো। তাপর বলল...


-আম্মু..আম্মু তোমাকে না আব্বু পুকিন্নি বলেছে?


--কি বলেছে?


-পুকিন্নি... পুকিন্নি। তোমাল নাকি পুকিন্নি মালকা রাগ,,আব্বু বলতে।


মার কাশেম। খাইছে আমারে। জান্নাত রাগে অগ্নি পিন্ড হইয়া তাকাইয়া আছে। আচমকা হেতি তার কাছে থাকা টমেটো দিয়া দিলো ঢিল। টমেটো আইসা লাগলে সরাসরি মোর নাকের মাথায়। যার ফলে টমেটোর ভিতরে আমার নাক ঢুকে পরলো। এই মুহূর্তে দেখতে আমাকে ঠিক মিঃ বিনের মতো লাগছে। আর তা দেখে টুম্পা খিলখিল করে হাসতেছে। বউয়ের রাগ তাতে আরো বেরে গেলো। শুরু হলো আলু,বেগুন,টমেটো দিয়া ঢেলাঢেলি। তারপর বউ রুমে গিয়ে বালিশ এনে শুরু করলো পিটানি। আমিও বালিশ নিয়া আইসা শুরু করলাম পিটনি। একসময় বউ হাফিয়ে উঠলো....


--কি হলো আরো মাইর খাওয়ার ইচ্ছা আছে নাকি?


-করবোনা আর তোমার সংসার সমসময় শুধু জালিয়ে মারো।


এই বলে বউ চলে গেলো হেতির বাপের বাড়ি। বাপের বাড়ি কাছে থাকায় বউয়ের সুবিধা হইছে। রাগ হইলে চলে যায়।


এই হলো কাহিনী। একা একা ভালো লাগেনা, মা মেয়ে কেউ নেই ভালো লাগবে কেমনে। তাই সরম,লজ্জা ভেঙ্গে শশুর বাড়ি যাওয়ার চিন্তা করতেছি। শশুর বাড়ি যামু আবার লজ্জা কিসের।


রাত ১১ টা। আমি এখন আছি শশুর বাড়ির দরজার সামনে। কলিংবেল টিপবো কি টিপবো না ভাবতেছি। বুকে আধা কেজি সাহস নিয়ে কলিংবেল বাজালাম। সাথে সাথে জান্নাত দরজা খুলে দিলো। তারমানে জান্নাত জানতো আমি আসবো। আহারেএএ...আমার জন্য বউয়ের কত্ত দরদ,,কত্ত ভালুসা,থুক্কু ভালোবাসা। জান্নাত আমার দিকে না তাকিয়ে হনহন করে চলে গেলো। বুজলাম বউ হেব্বি রেগে আছে। আমাকে দেখে টুম্পা খুব খুশি। সে হাত তালি দিচ্ছে আর বলছে....


-নানু.. নানু পুকিন্নি এসেছে,পুকিন্নি এসেছে।


আমি হতবাক। টুম্পা আমারে ফকিন্নি কয় ক্যান। নিশ্চই জান্নাত শিখিয়ে দিছে। আমি টুম্পাকে কোলে তুলে নিলাম। কপালে একটা চুমু খেয়ে বললাম...


--এগুলো বলতে হয়না আম্মু,, লোকে খারাপ বলবে।


-আম্মুযে বলল পৃতিবীল সবাই পুকিন্নি। তুমি আমি নানু,নানি সবাই পুকিন্নি,, তাইনা নানু পুকিন্নি।


ছোট বাচ্চা তাই কিছু বললামনা। ফ্রেশ হয়ে চলে গেলাম বউয়ের কাছে। গিয়ে দেখি বউ ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। কেনো জানি নিজের কাছেই খারাপ লাগছে। কোন দুঃখে যে বউকে রাগিয়ে দিলাম। জান্নাতের হাত ধরলাম,,সে আরো জোরে কেঁদে দিলো...


--আচ্ছা সরি এইযে কানে ধরলাম আর কখনও তোমাকে রাগাবো না। এখন একটু কান্না থামাও।


-........(কেঁদেই চলছে)


--আচ্ছা ঠিক আছে চলো।


এই বলে জান্নাতকে কোলে করে নিয়ে বাথরুমে নিয়ে গেলাম। ওকে ফ্রেশ করিয়ে নিয়ে এসে তারপর সবাই মিলে খাওয়া দাওয়া করলাম।


কিন্তু ভেজাল টা বাজলো ঘুমানোর সময়। জান্নাত আমায় তার কাছে

ঘুমুতে দেয়না।


--আরে তাহলে আমি কোথায় ঘুমাবে।


তুমি আজকে বাবার সাথে ঘুমাবে।


--কেনো বাবার সাথে ঘুমাবো কেনো?


-তোমার শাস্তি।


--আচ্ছা সরি বললামতো।


-সরি টরি বলে কোন লাভ নেই। যা বলছি তাই....


কি আর করার,, উপায়ন্তর না পেয়ে শশুরের কাছে ঘুমাতে গেলাম। জান্নাত,টুম্পা আর আমার শাশুরি এক জাগায় ঘুমাবে। আমি আর আমার শশুর আরেক জায়গায়। হায়রে কপালরে শশুর বাড়ি এসে শশুরের সাথে ঘুমানো লাগে। রাগে,দুঃখে,শোকে পোড়া কপাল নিয়ে শুতে গেলাম শশুরের কাছে। যাইয়া দেহি শশুর মোর নাক ডাইকা ঘুমাইতেছে। কি আর করার আমিও সেখানে শুয়ে পরলাম।


আমি গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন । স্বপ্ন দেখছি বিশাল মাঠ,,ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হইছে। আমার গায়ে ১০ নাম্বার জার্সি। তারমানে আমি ভালো খেলোয়ার। খেলা শুরু হলো আর ভাষ্যকার বলা শুরু করলো....


"ফুটবল খেলা হচ্ছে। বল এখন আশিকের কাছে, আশিক বল নিয়ে দৌড়াচ্ছে আশিকের পা থেকে বল চলে গেলে আবিরের কাছে,, আবির বল কিক করে দিলো রুবেলের কাছে। রুবেল বল নিয়ে দৌড়াচ্ছে তাকে বিপক্ষ খেলোয়াড় বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে কিন্তু পারছেনা। রুবেল বল নিয় এগুচ্ছে সেই সাথে বলে কিক করলো বল হয়ে গেলো গোওওওওওওললললল........"


আমি ঘুমের মধ্য থেকেই লাফ দিয়ে উঠলাম বললাম গোওওওললল। আমার চিৎকার শুনে জান্নাত আর আমার শাশুড়ি দৌড়ে চলে আসলো। আর এদিকে আমার শশুর হেতির জিনিষ ধরে চিল্লাচ্ছে। আর বলতেছে....


"ও আল্লাগো আমার জান শেষ। আমার পোতা নষ্ট হইয়া গেলো গো। আমি এখন কি করব....আমার ব্যাটারি যে আর চলবেনা। আল্লাগেওওওওও...


ঘটনার এমন আকস্মিক আমি তব্দা খাইয়া গেলাম। তারমানে আমি বলে কিক করি নাই। করছি শশুরের ঐ খানে কিক। শশুর মশাই,যে জায়গায় কিক করছি সেই জায়গা ধরে চিল্লাচ্ছে,,,জান্নাত হেতির বাবার মাথায় পানি ঢালছে আর শাশুড়ি আমার বলছে....


"কিচ্ছু হবেনা তোমার সব আগের মগো ঠিক হয়ে যাবে। প্লিজ কান্না থামাও "


কিন্তু শশুরের কান্না কোনমতেই থামছেনা। সে সমানে চিল্লাচ্ছে।


আমি সেখান থেমে চোরের মতো চলে আসলাম।

রাস্তা দিয়ে হাটতেছি আর ভাবতেছি আজকের রাতটা ফুটপাতে কাটিয়ে দিলে কেমন হয়?

----_-----------------------------------------------

https://banglalovestory247.blogspot.com/


tags:

Banglalovestory247, love story bangla, নতুন রোমান্টিক লাভ স্টোরি, লাভ স্টোরি, রোমান্টিক লাভ স্টোরি বাংলা, ভালোবাসার গল্প, বউ এর সাথে রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প, ভালোবাসার রোমান্টিক গল্প, সেরা ভালোবাসার গল্প, 







মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

গল্প: ১০ দিনের বউ

গল্প: ১০ দিনের বউ সকালে দরজায় পত্রিকাওয়ালার ডাক শুনে ঘুম ভাঙলো.... ঘুম ঘুম চোখে ঘড়ির দিকে তাকালাম.... ৯:২৫ বাজে... OMG........সাড়ে ন'টা বেজে গেছে... তাড়াতাড়ি শরীরের উপর থেকে কাঁথাটা একপাশে ছুড়ে ফেলে দিয়ে বাথরুমের দিকে দৌড় দিলাম.... যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দাঁতে ব্রাশ ঘষাতে লাগলাম... চোখে মুখে জল দিলাম... অতঃপর ফ্রেস টেস হয়ে রুমে এলাম... একদিকে শার্ট প্যান্ট পড়ে রেডি হচ্ছি.. একইসাথে অন্যদিকে মুখে পাউরুটি ঢুকাচ্ছি... ভালো করে খাওয়ারও সময় নেই.. উফফ অনেক দেরি হয়ে গেছে... শেষে তাড়াতাড়ি মুখের পাউরুটিটা গিলে টাই টা হাতে নিয়েই তাড়াতাড়ি দরজা লক করে বেরিয়ে পড়লাম.. দ্রুত হাটা ধরলাম... ইসস বাইকটা Repair করাতে দিয়েছি.. নাহলে বাইক দিয়েই যাওয়া যেত.. যাই হোক এখন এসব না ভেবে তাড়াতাড়ি বড় রাস্তায় গিয়ে একটা রিকশায় উঠলাম.... রিক্সায় বসে বসে টাই টা বেধে নিলাম.... আজকে অনেকটাই দেরি হয়ে গেছে... ব্যাচেলর মানুষ.. ঢাকায় একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে জব করি.. একটা মেসে একাই থাকি.. সকাল সকাল যে কেউ ঘুম থেকে ডেকে তুলবে সেরকম কেউও তো নেই... যাই হোক, এখন এসব ভাবলে চলবে না.. আমাদের অফিসের বস এমন...

{গল্প: হেড মাষ্টারের দুষ্টু মেয়ে }

  গল্প: হেড মাষ্টারের দুষ্টু মেয়ে জে এস সি পাশ করে আজ নতুন একটা স্কুলে ভর্তি হলাম অবশ্য আগে বাবা মার সাথে থাকতাম এখন ভাইয়ার কাছে আসলাম কারন স্কুল টা কাছে তাই | তো আজ প্রথম স্কুলে গেলাম ক্লাসে ঢুকবো তখনি দেখি কে যানো আমাকে লেং মেরে ফেলে দিছে তখন থাপ্পর দিতে যাবো তখনি দেখি এটা আর কেও না একটা মেয়ে দেখছি হাসছে আর মেয়ে টাও অপূরুপ সুন্দর মনে হলে এক মায়াবতী দূর এই সব চিন্তা করে লাভ নাই তো দেখি মেয়েটা বলতেছে- মেয়ে: এই ছেলে চোখে দেখিস না ? আমি অবাক হয়ে গেলাম কার প্রশ্ন কাকে বলার কথা সে আমাকে বলতেছে তখন আমি বল্লাম- আমি: আজব তো আপনি তো আমাকে লেং মেরে ফেলে দিছেন ? মেয়ে: এই তুই দেখছিস আমি তোকে ফেলে দিছি ? আমি: না আল্লাহ তো আমাকে কানা বানিয়ে দুনিয়া পাঠাইছে কিছু তো দেখি না | দেখি আমার কথা শুন হাসতেছে পরে বল্লো----> মেয়ে: এই তোর সাহস তো কম না বড়দের সাথে এইভাবে কথা বলস ? আমি: বড় মানে আর আপনি এইভাবে তুই তোকারি ভাবে কথা বলতেছেন কেনো? মেয়ে: কি তোর কত্ত বড় সাহস আমার সাথে এরকম ভাবে কথা বলিস তুই আমাকে চিনিস আমি কে ? আমি: কেনো আপনি কি প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে নাকি যে ভালোভাবে কথা...

গল্প::অবশেষে ম্যামের প্রেমে পড়লাম

   Bangla Love story গল্প:: অবশেষে ম্যামের প্রেমে পড়লা আমি রনি অনার্স ফাইনাল ইয়ারে পড়ি। আমাদের কলেজের সব স্যারেরা আমাকে ভালো ভাবেই চেনেন। কারনটা হলো আমি কলেজের টপার।লেখাপড়ায় যেমন ভালো খেলাধুলায় ও তেমন ভালো।তাছাড়া কলেজের যে কোন অনুষ্ঠানেও আমাকে উপস্থাপনা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়।এমনকি আন্ত কেলেজ ক্রিকেট ও ক্যরাটি টুনামেন্টেও আমার জন্যে আমাদের কলেজ চাম্পিয়ন হয়েছে এবার।সব স্যারেরা আমাকে নিয়ে গর্ব করে। আর সারা কলেজের মেয়েরাতো আমার সাথে কথা বলার জন্য পাগল।তবে আমি কারও সাথে মানে মেয়েদের সাথে কথা বলি না। আমি সব বিষয়ে পারদর্শী হলেও একটা বিষয়ে অনেক পিছিয়ে আছি আর তা হলো মেয়েদের কে খুব ভয় পায়। কলেজে কোন মেয়ের সাথে কথা বলিনা যদিও মেয়েরা আমার সাথে কথা বলার জন্য আমার পিছনে পিপড়ার মতো লাইন দিয়ে থাকে সবসময়। ।।আমাদের কলেজের প্রিন্সিপালের মেয়ে নাম মোহনা,আজ আমাদের কলেজেই ইংরেজির টিচার হিসেবে জয়েন করবে।তাকে আজ বরণ করা হবে। সেই জন্য আমাদের কলেজ ক্যাম্পাসে আজ একটা মিলন মেলা বসেছে মানে কলেজের সকল ছাত্র-ছাত্রী এবং সার, আমরা সবাই ক্যাম্পাসে অধীর আগ্রহে বসে আছি কখন নতুন ম্যামকে বরন ...