![]() |
Bangla Love story |
গল্প:- ভুল সবই ভুল
একদিন রাতে অফিস থেকে ফেরার পর বাসায় এসে দেখি তুমোল চিৎকার- চেঁচামেচি। এমন তো হওয়ার কথা না!দ্রুত হেঁটে দরজার কাছে গিয়ে দেখি দরজা খোলা।ভেতরে ঢুকেই অবাক হলাম। আমার স্ত্রী মিতু ফ্লোরের উপর পা ছড়িয়ে বসে আছে।তার কপালের এক পাশ কেটে দরদর করে রক্ত নামছে।আর তার পাশে একটা গোছানো ব্যাগ।ব্যাগের কাছে ফ্লোরের উপর শুয়েই আমার দের বছরের ছেলেটা গড়াগড়ি করে গলা ছেড়ে কাঁদছে।মিতুও কাঁদছে ছেলেও কাঁদছে।পাশে ব্যাগ।ব্যাপার কী? কপাল কাঁটলো কীভাবে?
আমার কাঁধে ঝুলানো ব্যাগটা এক ঢিলে দূরে ছুঁড়ে
ফেলে আমি গেলাম মিতুর কাছে।ওর কপালে ছুঁতে চাইতেই ও দূরে সরে যেতে যেতে
বললো,'সাবধান!আমায় তুমি টাচ্ করবা না বললাম!'
আমি অবাক হয়ে বললাম,'কী হয়েছে তোমার? কপাল কাটলো কীভাবে
মিতু গলা ছেড়ে বললো,'তোমার কাছে এটা বললে তুমি বিশ্বাস করবা কোনদিন?করবা না। উল্টো আমারেই দোষবা।'
বলে আবার কাঁদতে লাগলো মিতু।
আমার
ছেলেটার দিকে তাকিয়ে আমার কী যে মায়া লাগলো! শীতের দিন।ঠান্ডায় ফ্লোরের
উপর এভাবে পড়ে থেকে গড়াগড়ি করে কাঁদছে ছেলেটা!দ্রুত ছেলেটাকে কোলে নিতে
চাইতেই মিতু আবার চেঁচিয়ে উঠলো।বললো,'আমানরে তুমি কোলে নিবা না বললাম
কিন্তু!এরে ধরবা না!'
ওর কথা আমি শুনলাম না। আমানকে কোলে নিয়ে বুকের সাথে মিশিয়ে ধরতেই আমান একেবারে শান্ত হয়ে গেল।
এবার আমি মিতুর কাছে এসে বললাম,'মিতু,কী হয়েছে বলবা তো?না বললে বুঝবো কীভাবে?আর সন্ধি কোথায়?এই সন্ধি?'
আমার
ছোট বোন সন্ধি কোন সাড়া দিলো না। হয়তোবা ও ঘরে নাই। কিন্তু তার ছেলে
ফুয়াদ দৌড়ে এলো আমার কাছে। এসে আমার হাত ধরে বললো,'মামা,মা বিছানায়
শুয়ে থেকে কাঁদছে। মামীর সাথে মার আজ ঝগড়া হয়েছে!'
মিতু তখন চেঁচিয়ে
উঠে ফুয়াদকে বললো,'এই ছেলে তুই চুপ কর।মার পক্ষ নিয়ে কথা বলতে এসেছে
এখানে!কে ঝগড়া করেছে রে?জোর করেই তো তোর মা আমার কপালে প্লেট ছুঁড়ে
মারলো!'
ফুয়াদ মুখ পানসে করে এখান থেকে ঘরের ভেতর চলে গেল।
মিতু
এবার কান্নাভেজা গলায় বললো,'এখন তো শুনেছো কী হয়েছে! তোমার আদরের ছোট
বোন,যে তার হাসব্যান্ডকে খেয়ে এসেছে সে এখন আমাকেও খেতে চায়।এই দেখো আজ
কপাল ফাটিয়েছে। দু'দিন পর আমায় খুনই করে ফেলবে ও।'
আমি মিতুকে একটা ধমক দিলাম।ধমক দিয়ে বললাম,'মিতু,লিমিট ছাড়িয়ে কথা বলা আমি কখনো পছন্দ করি না!'
'এই যে লেগে গেছে। আগেই জানতাম। বোনের বিষয়ে কিছু বললেই তার গায়ে বিষ ধরবে। এই জন্যই সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।'
কথাগুলো বলেই মিতু বসা থেকে উঠলো। তারপর ব্যাগটা হাতে নিয়ে বললো,' আমার ছেলেকে আমার কাছে দাও।'
আমি অবাক হয়ে বললাম,'কোথায় যাবে তুমি?'
'জাহান্নামে।'
'জাহান্নামে গেলে তুমি একা যাও। আমার ছেলেকে তো নিয়ে যেতে দিবো না ওখানে!'
'ছেলেটা তোমার না!'
'ছেলেটা দুজনের। '
'না তোমার মতো কাপুরুষ কখনো ওর বাপ হতে পারে না!'
এবার আমার যথেষ্ট রাগ উঠে গেলো।আমায় কাপুরুষ ডেকেছে ও?
আমি ধমক দিয়ে বললাম,'মিতু, বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু!'
মিতু এবার এক উদ্ভট কান্ড করলো।সে আমার কোল থেকে জোর করে টেনে নিয়ে যেতে চাইছে আমানকে।আমান ভয়ে চিৎকার করে কেঁদে উঠলো তখন।
আমার
যা রাগ পেলো এতে। মিতুর গাল খসে দুটো চড় বসালাম।মিতু এবার আরো জোরে
চিৎকার করে কেঁদে উঠলো।আর আমার মুখের উপর এক দলা থুতু ছিটিয়ে দিয়ে
বললো,'নিজের বোন নিয়েই সংসার কর তাহলে তুই।পারলে কাজী ডেকে বিয়ে পড়িয়ে
নে!'
কথাটা বলে ব্যাগ নিয়ে সে বাসা থেকে বের হয়ে যেতে পা বাড়ালো।আর
আমি আমানকে খাটের উপর দ্রুত রেখে এসে পেছন থেকে মিতুর চুলে মুঠি করে ধরে
ফেললাম।আর বললাম,'অসভ্য মেয়ে,আজ তোকে খুন করে ফেলবো আমি!'
আমায়
রাগতে দেখে আর চিৎকার চেঁচামেচি শুনে ঘরের ভেতর থেকে দৌড়ে এলো সন্ধি। এসে
আমার পায়ে পড়ে গিয়ে বললো,'ভাইয়া, আল্লাহর দোহাই লাগে।আমার মরা মার
কসম।ভাবীরে তুই ছাইড়া দে!'
সন্ধি আমার পায়ে পড়ে কাঁদছে। ওকে দেখে যা
মায়া লাগলো আমার। ইচ্ছে না করলেও ছেড়ে দিলাম মিতুকে আমি।মিতু হাতে ব্যাগ
নিয়ে ওর মুখে যা আসছে তাই বিশ্রি ভাষায় বকতে বকতে চলে গেল আমাদের সামনে
দিয়ে। আমানকে রেখেই চলে গেল।
সন্ধির প্রতি মিতুর রাগটা
অনেকদিন যাবৎ। সন্ধির স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকেই সে এখানে আমার কাছে
থাকে।দু বার ওকে বিয়ে দিতে চাইলেও সে রাজি হয়নি।বলে, ফুয়াদকে ছেড়ে আমি
অন্যের ঘর করতে পারবো না ভাইয়া।
আর এদিকে মিতুর একদম সহ্য হয় না
সন্ধিকে।তার ধারণা সন্ধি আমার বাসায় থেকে আমাদের সম্পত্তিতে ভাগ বসাবে।
কিন্তু ভাগ বসাবার কী আছে এখানে?আইনমতো তার যা অংশ আছে সম্পত্তিতে তা তো সে
নিবেই।আমি তো এমনিতেই থাকে তা দিয়ে দিবো। কিন্তু মিতু এটা বুঝতে পারছে
না।
মেনেও নিতে পারছে না। এই জন্য সে চাইছে যে করেই হোক
সন্ধিকে এ বাড়ি থেকে তাড়াতে হবে। কিন্তু ওর ইচ্ছেতেই তো সব হবে না।
স্ত্রীর প্রতি আমার যেমন দায়িত্ব আছে বোনের প্রতিও তো আমার তেমন দায়িত্ব
আছে।বাবা মা বেঁচে নাই। তাছাড়া স্বামী হারাও সে।একটা ছেলে আছে ছেলের বয়স
মাত্র তিন।আমি যদি ওদের তাড়িয়ে দেই,না দেখি, তবে ওদের দেখবে কে? কোথায়
গিয়ে ওরা আশ্রয় নিবে?
রাতে আমানকে নিয়ে আমি বিছানায় শুয়ে আছি তখন সন্ধি আমার ঘরে এলো। এসে আমার পাশে বসে কান্নাভেজা গলায় বললো---
পর্বঃ ০১
সম্পূর্ণ গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন=
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন