সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

গল্প :- রোমান্টিক বউ

 

Bangla Love story
Bangla Love story



গল্প :-  রোমান্টিক বউ





~গ্রাজুয়েশন শেষ করে সবেমাত্র বাবার ব্যবসায় মন নিবেশ করেছি, সারাদিন যন্ত্রণা সহ্য করে ফিরেই দেখি আম্মু টিভির সামনে মনমরা হয়ে বসে আছে। বুঝলাম তুফান শুরুর  আগের শান্তি।
-কি হয়েছে আম্মু?
-কি আর হবে?
-চুপ করে আছ কেন?
-তাহলে কি চেঁচামেচি করব?
-ইচ্ছা হলে করতে পার।
-থাম তুই।
-আচ্ছা।

কিছু না বলে নিজের রুমে চলে এলাম। কিছুক্ষণ পর আম্মু নিজেই খাবার খেতে ডাকছে। টেবিলে গিয়ে বিড়ালের মত বসে পরলাম, খাবার তুলে দিয়ে শুরু করল,
-তুই আর তোর আব্বু, সারাদিন বাইরে থাকিস, আমি একা  কি করব বাসায়?
-পয়েন্ট। কি করতে পারি?
-বলছিলাম কি বাবা, তুই একটা বিয়ে করে ফেল। গার্লফ্রেন্ড-ঠ্রেন্ড থাকলে বল আমরা দেখে শুনে...
-কি শুরু করলে আম্মু?
-আছে নাকি কেউ?
-না।
-তাহলে চল, কালকে আমরা মিথিলা’দের বাসায় ঘুরে আসি। তোর মামা অনেক দিন ধরে ফোন দিচ্ছে যাওয়ার জন্য।
-তুমি যাও। আমি অফিস শেষ করে চলে আসব। আর আপাতাত বিয়েশাদী করার ইচ্ছা নেই।
-ঠিক আছে বাবা। ভুল করিস না কিন্তু।

কিছু না বলে রুমে চলে আসলাম। মিথিলা, আমার মামাতো বোন, একসাথে বড় হয়েছি, যদিও আমার থেকে বছর তিনেকের ছোট। আসলে তাকে মেয়ে না বলে গুন্ডী বললে বেশি মানাবে। খুব ঝগড়ুটে টাইপ মেয়ে, তবে মানুষ হিসেবে খুব একটা খারপ না। আগে পাশাপাশি থাকতাম তবে ব্যবসার সুবাধে আমাদের ঢাকাতে চলে আসতে হয়েছে। আর মামা তার প্রিয় শহর চিটাগং এ রয়ে গেছেন। প্রায় ৮ বছর দেখা হয় নি তাদের সাথে।

পরের দিন অফিস শেষ করে বিকেলের ফ্লাইটে চিটাগং চলে গেলাম, গাড়ি পাঠিয়েছে তাই সোজা বাড়িতে চলে গেলাম। বাড়িতে ঢোকার আগেই আমার চোয়াল ঝুলে পড়ল, পুরো বাড়ি বিয়ের সাঁজে সাজানো, চারিদিকে আমাদের প্রায় সব আত্মীয়স্বজন দেখতে পাচ্ছি। গাড়ি থেকে নামার সাথে সাথে প্রায় সবাই আমার উপর হামলে পড়ল। তা মামুলি ব্যাপার, অনেক দিন পর দেখা, কিন্তু বাড়ি সাজানো কেন আর সবাই একত্রে এখানে কেন এইটুকু জিজ্ঞাসা করার মানুষ খুঁজে পাচ্ছি না, একটু এগুতেই দেখি আমার বাচ্চাকালের বন্ধু রাফিদ,
-কি রে দোস্ত, কেমন আছিস?
-ভালো ছিলাম

-এখন কি হয়েছে?
-তারপর আব্বু-আম্মু ধরে বিয়ে করিয়ে দিল
-হাহা, ভাবী কেমন আছে, কোথায় সে?
-সে ভালোই আছে, তোর বউ সাজাচ্ছে?
-মজা নিচ্ছিস?
-একটুও না। আন্টিই তো সব করেছে। গিয়ে দেখ আঙ্কেলও উপরে আছে।

মজা হিসেবে নিয়েই উপরে চলে গেলাম, গিয়ে দেখি আব্বু সত্যিই এখানে, ভাবলাম হয়ত মিথিলার বিয়ে তাই সবাই এসেছে, আর রাফিদ, মামার পরিবারের অতি ঘনিষ্টজন, তাই হয়ত এসেছে।
-আব্বু, আপনি এখানে কেন?
-ছেলের বিয়েতে থাকব না?
-আপনিও শুরু করলেন?
-মোটেই না, চল আমার সাথে।

প্রায় আসামীর মত ধরে আমাকে নিয়ে গেল একটা রুমে, গিয়ে দেখি আম্মু সাথে খালামনিরা সবাই ব্যস্ত পাঞ্জাবি পছন্দতে। আমাকে দেখে মনে হয় আকাশে চাঁদ হাতে পেয়েছে। আম্মু কিছু না বলে মিট মিট করে হাসছে। রাগে আমার চেহারা রীতিমত লাল হয়ে গেছে, ভদ্রতার কারণে কিছু বলতেও পারছি না। বুঝলাম যে অবস্থা, সব কিছু আয়ত্বের বাইরে চলে গেছে, এখন হেরে যাওয়া সৈনিকের মত দেখা ছারা কিছু করার নেই। সবাই সাজ সজ্জায় লেগে আছে, একাই বাড়ির ছাদে চলে গেলাম, গিয়ে দেখি মিথিলাও দাঁড়িয়ে আছে,
-ঐ, তুই এখানে কেন?
-কি আর করব?


-সেটাই কথা, এত বড় ষড়যন্ত্র হচ্ছে আমাকে জানাস নি কেন?
-আমি নিজেই জানি না, আজকে সকালে ইংল্যান্ড থেকে ফিরেছি আব্বু বলেছে নানাভাই অসুস্থ তাড়াতাড়ি চলে আসতে, এসে দেখি এই অবস্থা।
-আমি তোকে বিয়ে করতে পারব না!
-আমি কি বসে আছি নাকি তোকে বিয়ে করার জন্য?
-দেখ তোর মত  পিচ্চির সাথে ঝগড়া করার ইচ্ছে নেই। কিছু একটা কর
-কি করব?

-তোর বয়ফ্রেন্ডের নাই?তার সাথে পালিয়ে যা!
-বয়ফ্রেন্ড পাবো কোথায়?
-খারাপ বলিস নি, কে ই বা গুন্ডীর বয়ফ্রেন্ড হতে চাইবে?
-দেখ অভ্র, তোকে সাবধাণ করে দিচ্ছি আমাকে পিচ্ছি আর গুন্ডী বলবি না।
-কি, কি করবি হ্যাঁ?
ও কিছু একটা বলতে চেয়েছিল তার আগে মামা এসে হাজির হয়,
-আরে তোরা এখানে কেন? চল নিচে চল। কত সাঁজ গোঁজ বাকি।

আসলে রাগ টা কার উপর করব বুঝতে পারছি না। সবাই একদিকে, কিছু করার উপায়ও খুঁজে পাচ্ছি না। হাল ছেড়ে দিয়ে যা হচ্ছে হতে দিলাম, যথারীতি আমাকে কোরবানী দুঃখিত বিয়ে দিয়ে দেওয়া হল। রাত্রে মামার বাড়িতেই থাকতে হল, বন্ধু-বান্ধব সবাই ধরে আমাকে একটা ঘরে ঢুকিয়ে দিল, গিয়ে দেখি মিথিলা বঊ সেজে বসে আছে, হুট করে গিয়ে সোফায় বসে পরলাম, চিন্তা করতে পারছি না কি থেকে কি হয়ে গেল। মিথিলা তার ঘোমটা তুলে আমাকে দিকে তাকিয়ে আছে, যাকে বলে অগ্নি দৃষ্টি,
-কিছু বলবা বউ?

-কিসের বউ কার বউ?
-সেটাই হচ্ছে আসল কথা, তোর মত একটা পিচ্ছি মেয়ে কিভাবে আমার বউ হয়?
-অভ্র, তোকে আমি আগেই সাবধান করেছি, আর যাকেই হোক তোকে বিয়ে করার কোনো ইচ্ছে আমার কোনো কালেই ছিল না!
-আমার ছিল মনে হয়?
-তাহলে করলি কেন?
-করলাম কোথায়? ধরে করিয়ে দিল!
-কি রকম পুরুষ একটা বিয়ে ভাঙ্গতে পারলি না!
-সে সময় টুকুই তো পেলাম না
-জাহান্নামে যা

-সেটা পরে দেখা যাবে, এখন সর আমি ঘুমোব, খুব ঘুম পেয়েছে।
-ঘুমা, কে ধরে রাখছে?
-খাট থেকে নাম।
- অসম্ভব, খাটের ধারে কাছে আসলে তোর খবর আছে।
-কি করবি হ্যাঁ?
-খুন করে ফেলব

-গুন্ডী কি আর শখ করে বলি?
কোন কথা না বলে ফ্রেস হয়ে এসে শুয়ে পরে সে,
-এই মিথু, শোন না, আমি সোফায় ঘুমাচ্ছি সমস্যা নেই, তবে ক্ষুদ্র পরিসরে একটা মানবিক আবেদন, তোর কোলবালিশটা একটু দিবি?
-না।
বলেই ঘুমিয়ে পরে। স্বয়ং উপরওয়ালা মালুম, এই মেয়েকে নিয়ে কিভাবে সংসার করব...


পর্বঃ ০১

 সম্পূর্ণ গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন=

                                               ***গল্প :-  রোমান্টিক বউ ***










মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

গল্প: ১০ দিনের বউ

গল্প: ১০ দিনের বউ সকালে দরজায় পত্রিকাওয়ালার ডাক শুনে ঘুম ভাঙলো.... ঘুম ঘুম চোখে ঘড়ির দিকে তাকালাম.... ৯:২৫ বাজে... OMG........সাড়ে ন'টা বেজে গেছে... তাড়াতাড়ি শরীরের উপর থেকে কাঁথাটা একপাশে ছুড়ে ফেলে দিয়ে বাথরুমের দিকে দৌড় দিলাম.... যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দাঁতে ব্রাশ ঘষাতে লাগলাম... চোখে মুখে জল দিলাম... অতঃপর ফ্রেস টেস হয়ে রুমে এলাম... একদিকে শার্ট প্যান্ট পড়ে রেডি হচ্ছি.. একইসাথে অন্যদিকে মুখে পাউরুটি ঢুকাচ্ছি... ভালো করে খাওয়ারও সময় নেই.. উফফ অনেক দেরি হয়ে গেছে... শেষে তাড়াতাড়ি মুখের পাউরুটিটা গিলে টাই টা হাতে নিয়েই তাড়াতাড়ি দরজা লক করে বেরিয়ে পড়লাম.. দ্রুত হাটা ধরলাম... ইসস বাইকটা Repair করাতে দিয়েছি.. নাহলে বাইক দিয়েই যাওয়া যেত.. যাই হোক এখন এসব না ভেবে তাড়াতাড়ি বড় রাস্তায় গিয়ে একটা রিকশায় উঠলাম.... রিক্সায় বসে বসে টাই টা বেধে নিলাম.... আজকে অনেকটাই দেরি হয়ে গেছে... ব্যাচেলর মানুষ.. ঢাকায় একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে জব করি.. একটা মেসে একাই থাকি.. সকাল সকাল যে কেউ ঘুম থেকে ডেকে তুলবে সেরকম কেউও তো নেই... যাই হোক, এখন এসব ভাবলে চলবে না.. আমাদের অফিসের বস এমন...

{গল্প: হেড মাষ্টারের দুষ্টু মেয়ে }

  গল্প: হেড মাষ্টারের দুষ্টু মেয়ে জে এস সি পাশ করে আজ নতুন একটা স্কুলে ভর্তি হলাম অবশ্য আগে বাবা মার সাথে থাকতাম এখন ভাইয়ার কাছে আসলাম কারন স্কুল টা কাছে তাই | তো আজ প্রথম স্কুলে গেলাম ক্লাসে ঢুকবো তখনি দেখি কে যানো আমাকে লেং মেরে ফেলে দিছে তখন থাপ্পর দিতে যাবো তখনি দেখি এটা আর কেও না একটা মেয়ে দেখছি হাসছে আর মেয়ে টাও অপূরুপ সুন্দর মনে হলে এক মায়াবতী দূর এই সব চিন্তা করে লাভ নাই তো দেখি মেয়েটা বলতেছে- মেয়ে: এই ছেলে চোখে দেখিস না ? আমি অবাক হয়ে গেলাম কার প্রশ্ন কাকে বলার কথা সে আমাকে বলতেছে তখন আমি বল্লাম- আমি: আজব তো আপনি তো আমাকে লেং মেরে ফেলে দিছেন ? মেয়ে: এই তুই দেখছিস আমি তোকে ফেলে দিছি ? আমি: না আল্লাহ তো আমাকে কানা বানিয়ে দুনিয়া পাঠাইছে কিছু তো দেখি না | দেখি আমার কথা শুন হাসতেছে পরে বল্লো----> মেয়ে: এই তোর সাহস তো কম না বড়দের সাথে এইভাবে কথা বলস ? আমি: বড় মানে আর আপনি এইভাবে তুই তোকারি ভাবে কথা বলতেছেন কেনো? মেয়ে: কি তোর কত্ত বড় সাহস আমার সাথে এরকম ভাবে কথা বলিস তুই আমাকে চিনিস আমি কে ? আমি: কেনো আপনি কি প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে নাকি যে ভালোভাবে কথা...

গল্প::অবশেষে ম্যামের প্রেমে পড়লাম

   Bangla Love story গল্প:: অবশেষে ম্যামের প্রেমে পড়লা আমি রনি অনার্স ফাইনাল ইয়ারে পড়ি। আমাদের কলেজের সব স্যারেরা আমাকে ভালো ভাবেই চেনেন। কারনটা হলো আমি কলেজের টপার।লেখাপড়ায় যেমন ভালো খেলাধুলায় ও তেমন ভালো।তাছাড়া কলেজের যে কোন অনুষ্ঠানেও আমাকে উপস্থাপনা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়।এমনকি আন্ত কেলেজ ক্রিকেট ও ক্যরাটি টুনামেন্টেও আমার জন্যে আমাদের কলেজ চাম্পিয়ন হয়েছে এবার।সব স্যারেরা আমাকে নিয়ে গর্ব করে। আর সারা কলেজের মেয়েরাতো আমার সাথে কথা বলার জন্য পাগল।তবে আমি কারও সাথে মানে মেয়েদের সাথে কথা বলি না। আমি সব বিষয়ে পারদর্শী হলেও একটা বিষয়ে অনেক পিছিয়ে আছি আর তা হলো মেয়েদের কে খুব ভয় পায়। কলেজে কোন মেয়ের সাথে কথা বলিনা যদিও মেয়েরা আমার সাথে কথা বলার জন্য আমার পিছনে পিপড়ার মতো লাইন দিয়ে থাকে সবসময়। ।।আমাদের কলেজের প্রিন্সিপালের মেয়ে নাম মোহনা,আজ আমাদের কলেজেই ইংরেজির টিচার হিসেবে জয়েন করবে।তাকে আজ বরণ করা হবে। সেই জন্য আমাদের কলেজ ক্যাম্পাসে আজ একটা মিলন মেলা বসেছে মানে কলেজের সকল ছাত্র-ছাত্রী এবং সার, আমরা সবাই ক্যাম্পাসে অধীর আগ্রহে বসে আছি কখন নতুন ম্যামকে বরন ...