সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

গল্পঃ- পাগল (২পর্ব)



পাগল পর্বঃ ২ 

আজমল চেয়ারে বসে মাথা নিচু করে টেবিলের দিকে তাকিয়ে আছে৷ সে আগেই থেকেই হতাশ তার উপর তার কথার কোনো গুরুত্ব না দেওয়ায় সে আরও কিছুটা হতাশ হয়েছে৷ তাকে কি সরাসরি না বলা আমার ঠিক হয়নি? ঠিক বেঠিক পরে কিন্তু আজমলের কথায় একমত হওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না৷ 

- অনিকেত আমি জানি তুই কি ভাবছিস৷ একবার আমার দিক থেকে অন্তত বিষয়টা ভেবে দেখ। এটা কোনো মানুষের কাজ কোনো ভাবেই হতে পারে না৷ 

সে বেশ জোড় গলায় বলছে আমাকে কথাটা বিশ্বাস করানোর জন্য৷ 

- এখানে বসে কি স্মোক করা যাবে? 

- তোর সাথে আমি একটা সিরিয়াস বিষয় নিয়ে কথা বলছি আর তুই আছিস তোর চিন্তা ধারায়৷ আচ্ছা তোর কি ধারণা একটা মানুষ কি কখনও এই কাজ করতো পারে?

আজমলের পারমিশনের অপেক্ষায় থাকলাম না৷ একটা সিগারেট ধরিয়ে লম্বা একটা টান দিয়ে উপড়ের দিকে ধোঁয়া ছেড়ে শান্ত মাথায় বললাম 

- আমি তোর বিষয়টা বুঝতে পারছি৷ মানে তুই বোঝাতে চাচ্ছিস কোনো এক রক্তপিপাসু মেয়েটার শরীর থেকে সব রক্ত চুষে নিয়েছে এইতো? 

- হ্যা 

- তুই একজন ডাক্তার হয়ে এটা বিশ্বাস করতে পারিস? 

- করতাম না তবে আমার নিজের চোখে দেখা এমন একটা ঘটনা আছে যেটা আমাকে এখন এই সব ভুত বা অলৌকিক শক্তির উপর বিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে তোকে একটা ঘটনা বলি..

এতটুকু বলে আজমল একটা লম্বা নিঃশ্বাস নিলো৷ তার চোখে দোখে বোঝা যাচ্ছে সে এখনও সেই বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করতে গেলে তার মাঝে ভয় ভৃতি কাজ করে৷ 

আমি সিগারেটে শেষ টান দিয়ে তার বলা গল্পে একটু মনোযোগ দিলাম৷ কি এমন ঘটনা৷ 

" আমি যখন ডাক্তারি পড়ার জন্য বাইরে গেলাম তখন আমার পাশে এক রুমমেট ছিলো৷ তাকে দেখতে বেশ কিছুটা আজব ধরনের ছিলো এই যেমন ধর তার নাকটা মাঝ থেকে কাঁটা আর মুখের এক পাশ জ্বলা ছিলো মনে হয় আগুনে পুড়ে হয়েছিলো। হোস্টেলের সকলেই তাকে দেখে এড়িয়ে চলতো আর ভয়ও পেতো কিছুটা৷ হঠাৎ করেই একদিন ছেলেটার লাশ হোস্টেলের পিছনে যে বড় গাছটা ছিলো সেখানে ঝুলন্ত অবস্থা পাওয়া যায়৷ ঘটনা বেশ অবাক করেছিলো সবাইকে। এরপর থেকে যেই সেই রুমটাতে থাকতো হয়তো সে কিছুদিন পর মারা যেতো নয়তো পাগল হয়ে যেতো৷ ঘটনাটা জানার জন্য একদিন এক ডিটেকটিভ কে নিয়ে আসা হয়েছিলো৷ আগেই বলেছি আমার রুমটা ছিলো তার পাশে। রাত তখন ৩ টা বাজে হঠাৎ করেই পাশের রুম থেকে লোকটার চিৎকারের আওয়াজ আসতে থাকে৷ দেয়ালে কান পেতে শুনার চেষ্টা করছিলাম আওয়াজটা সেই রুম থেকে দুজন মানুষের আওয়াজ আসছিলো অথচ লোকটা রুমে একা ছিলো৷ কিছুক্ষণ এমন আওয়াজ আসার পর যখন দেখলাম আর আওয়াজ আসছে না তখন একবার ভাবলাম পাশের রুমে গিয়ে একটু দেখবো৷ তবে সাহস হয়নি তাই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম৷ পরের দিন সকালে সেই ডিটেকটিভ এর লাশ আমরা পাশের এক নর্দমায় পড়ে থাকা অবস্থায় পেয়েছিলাম" 

আজমল এতটুকু বলে থামলো৷ তার শরীর কাঁপছে। সে যে এখনো বিষয়টা নিয়ে ভয় পাচ্ছে সেটা বুঝতেই পারছি৷ বিষয়টা আমাকে বিচলিত করছে না। 

- এখন তুই বল এই ঘটনাটাকে তুই কি বলবি? 

আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই রুমে জলিল মিয়া প্রবেশ করলেন৷ 

- কি দেখলে অনিকেত ( কথাটা বলে পাশের চেয়ারটা টেনে নিয়ে বসলেন৷)  

- এখনই কিছু বলতে পারছি না। আজমল ভুতের গল্প বলছিলো সেটাই শুনছিলাম৷ 

- ওহ্ তা আজমল এখন বলো পোস্টমর্টেম রিপোর্টটা কি? 

- স্যার আমি নিজেও ভেবে পাচ্ছি না পোস্টমর্টেম রিপোর্টে কি লিখবো? রক্ত শূণ্যতার অভাবে কিন্তু কিভাবে সেটার কারণটা কোথা থেকে লিখবো? ওই দিকে মেয়ের পরিবারের লোক গুলো এখনও অপেক্ষা করছে৷ 

জলিল মিয়া কি বলবেন ভেবে পাচ্ছে না৷ চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালাম। 

- জলিল স্যার একটা সাহায্য দরকার আপনার 

- কি সাহায্য? 

- একটু আমার সাথে আকবর মোল্লার বাড়িতে যাবেন। তাকে কিছু বিষয় নিয়ে আপনি জিজ্ঞাসা করবেন আর আমি আপনার পাশে থাকবো৷ 

- ঠিক আছে 

- আজমল তুইও চাইলে আমার সাথে আসতে পারিস।  

সে কিছু না বলে লিখায় মনোযোগ দিলো। 

পোস্টমর্টেম রিপোর্টে আজমল কি লিখলো দেখলাম না৷ জলিল মিয়াকে সাথে নিয়ে আকবর মোল্লার বাসায় হাজির৷ আমাদের পিছনেই তার মেয়েকে নিয়ে আসা হচ্ছে। আকবর মোল্লা যে আমাকে দেখে খুশি হননি সেটা বুঝতে পারছি। 


তিনজন মুখোমুখি বসে আছি জলিল মিয়া প্রশ্ন করছেন আর আমি নিশ্চুপ শ্রতা হয়ে শুনছি 

- আপনার ধারণা মতে কে করতে পারে এটা? 

আকবর মোল্লা এক দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে হালকা করে উত্তর দিলেন 

"জানি না " 

- আপনার মেয়ে কখন বাড়ি থেকে বের হয়েছিলো? 

- সন্ধ্যার আগে এই প্রায় ৬ টা মতো বাজে৷ বলছিলো কার নাকি দ্রুত রক্তের প্রয়োজন তাই রক্ত দিতে যাচ্ছে খুব তাড়াতাড়িই ফিরে আসবে৷ 

- আপনি তাকে জিজ্ঞেস করেন নি কোন হাসপাতাল বা কাকে রক্ত দিতে যাচ্ছে ?  

- না! কারণ এর আগেও সে অনেকবার মানুষ কে রক্ত দিয়েছে৷ তার এই ভালো কাজ গুলো আমার বেশ ভালো লাগতো তাই ও-তো জানতে চাইতাম না৷ তবে কে জানতো এবার রক্ত দিতে গিয়ে আর ফিরে আসবে না৷ 

আকবর মোল্লার চোখের কোণায় অশ্রু জমেছে৷ জলিল মিয়াকে ঈশারা করে থামতে বললাম৷ মেয়েটার লাশ নিয়ে আসা হয়েছে। সব মানুষ তাকে ঘিরে লাশটাকে গাড়ি থেকে নামাচ্ছে৷ চারপাশে কান্নার শব্দ ভেসে উঠছে বেশ জোড়ালো ভাবে৷ জলিল মিয়াকে সাথে নিয়ে বাড়ির বাইরে চলে আসলাম৷ মানুষের কান্নার শব্দ আমার কাছে ভালো লাগে না৷ এটা কেমন যেনো নিজেকে বেশ আবেগ প্রবন করে তোলে৷ 

- কি বুঝলে অনিকেত? 

- সঠিক বুঝতে পারছি না৷ তবে এটা নিশ্চিত যে-যে এই খুনটা করেছে সে বেশ ভেবে চিন্তেই করেছে৷ খুনি পর্যন্ত পৌঁছাতে হলে আমাদের অনেক কষ্ট করতে হবে৷ 

- সেটা তো বুঝতেই পারছি! আচ্ছা এখন আসি অফিসে যেতে হবে বিকাল হতে চললো আর তুমি বিষয়টা নিয়ে আর একটু ভেবে দেখো।  

- জ্বী স্যার৷ 


বাসার কাছে আসতে আসতে মাগরিবের আযান দিয়ে দিয়েছে৷ 

- রফিক একটা চা দাও তো 

- দিতাছি....ভাই আজকে সারাদিন কই আছিলেন? 

- এই একটা কাজ নিয়ে ব্যাস্ত ছিলাম কেনো কি হয়েছে? 

- আপনার সাথে একটা মাইয়্যা দেখা করতে আসছিলো আমার এইখানে অনেক্ক্ষণ পর্যন্ত বসেও ছিলো আপনার জন্য৷ 

- ওহ্ 

- জানতে চাইবেন না মেয়েটা কেনো এসেছিলো? 

- না তার দরকার নেই আমি জানি! তুমি চা দাও। 

চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে ভাবছি হঠাৎ করে কি এমন হলো যে টুম্পা আমাকে খুজতে এসেছে? কি দরকার হতে পারে তার? 


সকালে হঠাৎ করেই দরজায় বেশ জোড়ে জোড়ে কেউ কড়া নাড়ছে৷ এতো সকালে কে আসতে পারে? ঘড়ির কাটায় মাত্র ৮ বাজে৷ দরজা খুলতেই দেখলাম জলিল মিয়া আমার সামনে দাড়িয়ে আছে৷ 

- স্যার আপনি তাও এতো সকালে? 

- সকাল দেখছো দ্রুত আমার সাথে এসো 

- কেনো কি হয়েছে? খুনিকে পেয়েছেন মনে হচ্ছে। 

- না আজকের পত্রিকা পড়েছো? 

কথাটা বলেই আমার দিকে পত্রিকা এগিয়ে দিলেন৷ 

" শহরে আরও একটি বিবস্ত্রহীন এক নারীর লাশ পাওয়া গিয়েছে"  


হেড লাইনটা পড়ে বেশ অবাক হলাম৷ 

দ্রুত রেডি হয়ে জলিল মিয়ার সাথে আজমল এর কাছে চলে আসলাম৷ এটার পোস্টমর্টেমের দ্বায়িত্বটাও তাকে দেওয়া হয়েছে৷ আজমলকে দেখে বেশ খুশি মনে হচ্ছে সে কি আজ কোনো ক্লু পেয়েছে ? 

- অনিকেত তুই এসেছিস আয় তোকে কিছু দেখানোর আছে৷ 

আজমল আমাদের দুজনকে নিয়ে পোস্টমর্টেম রুমে নিয়ে আসলো। 

- এই খুনটাও কি আগেরটার মতো করা হয়েছে? 

 আজমল কে প্রশ্ন করলাম। 

সে উত্তর না দিয়ে লাশটার উপর থেকে সাধা কাপড়টা সরিয়ে দিলো৷ মেয়েটার গলার কাছে এক সরু দাগ দেখেই বোঝা যাচ্ছে তার গলা কেটে খুন করা হয়েছে৷ বুকের উপরেও বেশ কিছু নখের আঁচড়ের দাগ রয়েছে৷ 

- এই খুনটাও কি একই ব্যাক্তি করেছে? 

- তোর কি এসব দেখার পরও মনে হচ্ছে এটা কোনো মানুষের কাজ৷ এই যে বুকের উপর যে নখের আঁচড়ের দাগ দেখছিস এটা কিন্তু মানুষের না। 

আজমলের কথায় বেশ অবাক হলাম এটা কিভাবে হতে পারে? 

-আর তার গলায় কোনো চুরি বা চাকু দিয়ে নয় সেই নখ দিয়েই কাঁটা হয়েছে৷ তোকে বলেছিলাম না অলৌকিক শক্তি আছে এমন কিছু এই খুন গুলো করছে৷ আগের বার রক্ত গায়েব করে দিলো আর এবার তোর সামনেই দেখতে পারছিস৷ 

- ওহ্ আচ্ছা ( বেশ আগ্রহ দেখিয়ে জবাব দিলাম)

আজমল থামলো তার ঠোঁটের কোনে হালকা মৃদু হাসি হতাশার কোনো চিহ্ন নেই৷ এটা মানুষের কাজ না এটা যেনো আমাকে সে বিশ্বাস করাতে পেরে খুশি হয়েছে৷ 

জলিল মিয়া আর আমি সেখান থেকে বের হয়ে আসলাম৷ 

- মেয়েটাকে জানতে পেরেছেন? 

- হ্যা আরও এক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বরকত আলীর ছোট মেয়ে এটা।  

- তার পরিবারের সাথে কথা বলেছেন? 

- হ্যা সে ও নাকি রক্ত দেওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়েছিলো৷ 

- ওহ্ কেসটা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আজমলেরও মাথা ঠিক নেই কি সব উল্টা পাল্টা কথা বলছে আমার মনে হয় লাশটাকে অন্য কাউকে দিয়ে পোস্টমর্টেম করানো উচিত। এটা কোনো ভুত বা অলৌকিক শক্তির কোনো কাজ না মানুষেরই কাজ আর যে কাজটা করছে সে একটা সাইকো নয়তো পাগল৷ তবে সে তার প্রমাণ গুলো লুকিয়ে রাখতে সক্ষম। খুনিকে ধরতে হলে আমাদেরকে অনেক দূর পর্যন্ত যেতে হবে৷ 

- সেটাই দেখছি কেসটা বোধ হয় আর আমার হাতে থাকছে না। সি আই ডি এর হাতে চলে যেতে পারে৷ একদিক দিয়ে ভালোই হবে এই মিডিয়াকে সামাল দেওয়া আমার জন্য কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। 

জলিল মিয়া কথাগুলো শেষ করে থামলেন৷ 

-অনিকেত তুমি চাইলে কেসটা নিয়ে তোমার মতো কাজ করতে পারো কোনে প্রকাপাগল

পর্বঃ ২ 


আজমল চেয়ারে বসে মাথা নিচু করে টেবিলের দিকে তাকিয়ে আছে৷ সে আগেই থেকেই হতাশ তার উপর তার কথার কোনো গুরুত্ব না দেওয়ায় সে আরও কিছুটা হতাশ হয়েছে৷ তাকে কি সরাসরি না বলা আমার ঠিক হয়নি? ঠিক বেঠিক পরে কিন্তু আজমলের কথায় একমত হওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না৷ 

- অনিকেত আমি জানি তুই কি ভাবছিস৷ একবার আমার দিক থেকে অন্তত বিষয়টা ভেবে দেখ। এটা কোনো মানুষের কাজ কোনো ভাবেই হতে পারে না৷ 

সে বেশ জোড় গলায় বলছে আমাকে কথাটা বিশ্বাস করানোর জন্য৷ 

- এখানে বসে কি স্মোক করা যাবে? 

- তোর সাথে আমি একটা সিরিয়াস বিষয় নিয়ে কথা বলছি আর তুই আছিস তোর চিন্তা ধারায়৷ আচ্ছা তোর কি ধারণা একটা মানুষ কি কখনও এই কাজ করতো পারে?

আজমলের পারমিশনের অপেক্ষায় থাকলাম না৷ একটা সিগারেট ধরিয়ে লম্বা একটা টান দিয়ে উপড়ের দিকে ধোঁয়া ছেড়ে শান্ত মাথায় বললাম 

- আমি তোর বিষয়টা বুঝতে পারছি৷ মানে তুই বোঝাতে চাচ্ছিস কোনো এক রক্তপিপাসু মেয়েটার শরীর থেকে সব রক্ত চুষে নিয়েছে এইতো? 

- হ্যা 

- তুই একজন ডাক্তার হয়ে এটা বিশ্বাস করতে পারিস? 

- করতাম না তবে আমার নিজের চোখে দেখা এমন একটা ঘটনা আছে যেটা আমাকে এখন এই সব ভুত বা অলৌকিক শক্তির উপর বিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে তোকে একটা ঘটনা বলি..

এতটুকু বলে আজমল একটা লম্বা নিঃশ্বাস নিলো৷ তার চোখে দোখে বোঝা যাচ্ছে সে এখনও সেই বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করতে গেলে তার মাঝে ভয় ভৃতি কাজ করে৷ 

আমি সিগারেটে শেষ টান দিয়ে তার বলা গল্পে একটু মনোযোগ দিলাম৷ কি এমন ঘটনা৷ 

" আমি যখন ডাক্তারি পড়ার জন্য বাইরে গেলাম তখন আমার পাশে এক রুমমেট ছিলো৷ তাকে দেখতে বেশ কিছুটা আজব ধরনের ছিলো এই যেমন ধর তার নাকটা মাঝ থেকে কাঁটা আর মুখের এক পাশ জ্বলা ছিলো মনে হয় আগুনে পুড়ে হয়েছিলো। হোস্টেলের সকলেই তাকে দেখে এড়িয়ে চলতো আর ভয়ও পেতো কিছুটা৷ হঠাৎ করেই একদিন ছেলেটার লাশ হোস্টেলের পিছনে যে বড় গাছটা ছিলো সেখানে ঝুলন্ত অবস্থা পাওয়া যায়৷ ঘটনা বেশ অবাক করেছিলো সবাইকে। এরপর থেকে যেই সেই রুমটাতে থাকতো হয়তো সে কিছুদিন পর মারা যেতো নয়তো পাগল হয়ে যেতো৷ ঘটনাটা জানার জন্য একদিন এক ডিটেকটিভ কে নিয়ে আসা হয়েছিলো৷ আগেই বলেছি আমার রুমটা ছিলো তার পাশে। রাত তখন ৩ টা বাজে হঠাৎ করেই পাশের রুম থেকে লোকটার চিৎকারের আওয়াজ আসতে থাকে৷ দেয়ালে কান পেতে শুনার চেষ্টা করছিলাম আওয়াজটা সেই রুম থেকে দুজন মানুষের আওয়াজ আসছিলো অথচ লোকটা রুমে একা ছিলো৷ কিছুক্ষণ এমন আওয়াজ আসার পর যখন দেখলাম আর আওয়াজ আসছে না তখন একবার ভাবলাম পাশের রুমে গিয়ে একটু দেখবো৷ তবে সাহস হয়নি তাই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম৷ পরের দিন সকালে সেই ডিটেকটিভ এর লাশ আমরা পাশের এক নর্দমায় পড়ে থাকা অবস্থায় পেয়েছিলাম" 

আজমল এতটুকু বলে থামলো৷ তার শরীর কাঁপছে। সে যে এখনো বিষয়টা নিয়ে ভয় পাচ্ছে সেটা বুঝতেই পারছি৷ বিষয়টা আমাকে বিচলিত করছে না। 

- এখন তুই বল এই ঘটনাটাকে তুই কি বলবি? 

আমি কিছু বলতে যাবো তার আগেই রুমে জলিল মিয়া প্রবেশ করলেন৷ 

- কি দেখলে অনিকেত ( কথাটা বলে পাশের চেয়ারটা টেনে নিয়ে বসলেন৷)  

- এখনই কিছু বলতে পারছি না। আজমল ভুতের গল্প বলছিলো সেটাই শুনছিলাম৷ 

- ওহ্ তা আজমল এখন বলো পোস্টমর্টেম রিপোর্টটা কি? 

- স্যার আমি নিজেও ভেবে পাচ্ছি না পোস্টমর্টেম রিপোর্টে কি লিখবো? রক্ত শূণ্যতার অভাবে কিন্তু কিভাবে সেটার কারণটা কোথা থেকে লিখবো? ওই দিকে মেয়ের পরিবারের লোক গুলো এখনও অপেক্ষা করছে৷ 

জলিল মিয়া কি বলবেন ভেবে পাচ্ছে না৷ চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালাম। 

- জলিল স্যার একটা সাহায্য দরকার আপনার 

- কি সাহায্য? 

- একটু আমার সাথে আকবর মোল্লার বাড়িতে যাবেন। তাকে কিছু বিষয় নিয়ে আপনি জিজ্ঞাসা করবেন আর আমি আপনার পাশে থাকবো৷ 

- ঠিক আছে 

- আজমল তুইও চাইলে আমার সাথে আসতে পারিস।  

সে কিছু না বলে লিখায় মনোযোগ দিলো। 

পোস্টমর্টেম রিপোর্টে আজমল কি লিখলো দেখলাম না৷ জলিল মিয়াকে সাথে নিয়ে আকবর মোল্লার বাসায় হাজির৷ আমাদের পিছনেই তার মেয়েকে নিয়ে আসা হচ্ছে। আকবর মোল্লা যে আমাকে দেখে খুশি হননি সেটা বুঝতে পারছি। 


তিনজন মুখোমুখি বসে আছি জলিল মিয়া প্রশ্ন করছেন আর আমি নিশ্চুপ শ্রতা হয়ে শুনছি 

- আপনার ধারণা মতে কে করতে পারে এটা? 

আকবর মোল্লা এক দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে হালকা করে উত্তর দিলেন 

"জানি না " 

- আপনার মেয়ে কখন বাড়ি থেকে বের হয়েছিলো? 

- সন্ধ্যার আগে এই প্রায় ৬ টা মতো বাজে৷ বলছিলো কার নাকি দ্রুত রক্তের প্রয়োজন তাই রক্ত দিতে যাচ্ছে খুব তাড়াতাড়িই ফিরে আসবে৷ 

- আপনি তাকে জিজ্ঞেস করেন নি কোন হাসপাতাল বা কাকে রক্ত দিতে যাচ্ছে ?  

- না! কারণ এর আগেও সে অনেকবার মানুষ কে রক্ত দিয়েছে৷ তার এই ভালো কাজ গুলো আমার বেশ ভালো লাগতো তাই ও-তো জানতে চাইতাম না৷ তবে কে জানতো এবার রক্ত দিতে গিয়ে আর ফিরে আসবে না৷ 

আকবর মোল্লার চোখের কোণায় অশ্রু জমেছে৷ জলিল মিয়াকে ঈশারা করে থামতে বললাম৷ মেয়েটার লাশ নিয়ে আসা হয়েছে। সব মানুষ তাকে ঘিরে লাশটাকে গাড়ি থেকে নামাচ্ছে৷ চারপাশে কান্নার শব্দ ভেসে উঠছে বেশ জোড়ালো ভাবে৷ জলিল মিয়াকে সাথে নিয়ে বাড়ির বাইরে চলে আসলাম৷ মানুষের কান্নার শব্দ আমার কাছে ভালো লাগে না৷ এটা কেমন যেনো নিজেকে বেশ আবেগ প্রবন করে তোলে৷ 

- কি বুঝলে অনিকেত? 

- সঠিক বুঝতে পারছি না৷ তবে এটা নিশ্চিত যে-যে এই খুনটা করেছে সে বেশ ভেবে চিন্তেই করেছে৷ খুনি পর্যন্ত পৌঁছাতে হলে আমাদের অনেক কষ্ট করতে হবে৷ 

- সেটা তো বুঝতেই পারছি! আচ্ছা এখন আসি অফিসে যেতে হবে বিকাল হতে চললো আর তুমি বিষয়টা নিয়ে আর একটু ভেবে দেখো।  

- জ্বী স্যার৷ 


বাসার কাছে আসতে আসতে মাগরিবের আযান দিয়ে দিয়েছে৷ 

- রফিক একটা চা দাও তো 

- দিতাছি....ভাই আজকে সারাদিন কই আছিলেন? 

- এই একটা কাজ নিয়ে ব্যাস্ত ছিলাম কেনো কি হয়েছে? 

- আপনার সাথে একটা মাইয়্যা দেখা করতে আসছিলো আমার এইখানে অনেক্ক্ষণ পর্যন্ত বসেও ছিলো আপনার জন্য৷ 

- ওহ্ 

- জানতে চাইবেন না মেয়েটা কেনো এসেছিলো? 

- না তার দরকার নেই আমি জানি! তুমি চা দাও। 

চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে ভাবছি হঠাৎ করে কি এমন হলো যে টুম্পা আমাকে খুজতে এসেছে? কি দরকার হতে পারে তার? 


সকালে হঠাৎ করেই দরজায় বেশ জোড়ে জোড়ে কেউ কড়া নাড়ছে৷ এতো সকালে কে আসতে পারে? ঘড়ির কাটায় মাত্র ৮ বাজে৷ দরজা খুলতেই দেখলাম জলিল মিয়া আমার সামনে দাড়িয়ে আছে৷ 

- স্যার আপনি তাও এতো সকালে? 

- সকাল দেখছো দ্রুত আমার সাথে এসো 

- কেনো কি হয়েছে? খুনিকে পেয়েছেন মনে হচ্ছে। 

- না আজকের পত্রিকা পড়েছো? 

কথাটা বলেই আমার দিকে পত্রিকা এগিয়ে দিলেন৷ 

" শহরে আরও একটি বিবস্ত্রহীন এক নারীর লাশ পাওয়া গিয়েছে"  


হেড লাইনটা পড়ে বেশ অবাক হলাম৷ 

দ্রুত রেডি হয়ে জলিল মিয়ার সাথে আজমল এর কাছে চলে আসলাম৷ এটার পোস্টমর্টেমের দ্বায়িত্বটাও তাকে দেওয়া হয়েছে৷ আজমলকে দেখে বেশ খুশি মনে হচ্ছে সে কি আজ কোনো ক্লু পেয়েছে ? 

- অনিকেত তুই এসেছিস আয় তোকে কিছু দেখানোর আছে৷ 

আজমল আমাদের দুজনকে নিয়ে পোস্টমর্টেম রুমে নিয়ে আসলো। 

- এই খুনটাও কি আগেরটার মতো করা হয়েছে? 

 আজমল কে প্রশ্ন করলাম। 

সে উত্তর না দিয়ে লাশটার উপর থেকে সাধা কাপড়টা সরিয়ে দিলো৷ মেয়েটার গলার কাছে এক সরু দাগ দেখেই বোঝা যাচ্ছে তার গলা কেটে খুন করা হয়েছে৷ বুকের উপরেও বেশ কিছু নখের আঁচড়ের দাগ রয়েছে৷ 

- এই খুনটাও কি একই ব্যাক্তি করেছে? 

- তোর কি এসব দেখার পরও মনে হচ্ছে এটা কোনো মানুষের কাজ৷ এই যে বুকের উপর যে নখের আঁচড়ের দাগ দেখছিস এটা কিন্তু মানুষের না। 

আজমলের কথায় বেশ অবাক হলাম এটা কিভাবে হতে পারে? 

-আর তার গলায় কোনো চুরি বা চাকু দিয়ে নয় সেই নখ দিয়েই কাঁটা হয়েছে৷ তোকে বলেছিলাম না অলৌকিক শক্তি আছে এমন কিছু এই খুন গুলো করছে৷ আগের বার রক্ত গায়েব করে দিলো আর এবার তোর সামনেই দেখতে পারছিস৷ 

- ওহ্ আচ্ছা ( বেশ আগ্রহ দেখিয়ে জবাব দিলাম)

আজমল থামলো তার ঠোঁটের কোনে হালকা মৃদু হাসি হতাশার কোনো চিহ্ন নেই৷ এটা মানুষের কাজ না এটা যেনো আমাকে সে বিশ্বাস করাতে পেরে খুশি হয়েছে৷ 

জলিল মিয়া আর আমি সেখান থেকে বের হয়ে আসলাম৷ 

- মেয়েটাকে জানতে পেরেছেন? 

- হ্যা আরও এক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বরকত আলীর ছোট মেয়ে এটা।  

- তার পরিবারের সাথে কথা বলেছেন? 

- হ্যা সে ও নাকি রক্ত দেওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়েছিলো৷ 

- ওহ্ কেসটা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আজমলেরও মাথা ঠিক নেই কি সব উল্টা পাল্টা কথা বলছে আমার মনে হয় লাশটাকে অন্য কাউকে দিয়ে পোস্টমর্টেম করানো উচিত। এটা কোনো ভুত বা অলৌকিক শক্তির কোনো কাজ না মানুষেরই কাজ আর যে কাজটা করছে সে একটা সাইকো নয়তো পাগল৷ তবে সে তার প্রমাণ গুলো লুকিয়ে রাখতে সক্ষম। খুনিকে ধরতে হলে আমাদেরকে অনেক দূর পর্যন্ত যেতে হবে৷ 

- সেটাই দেখছি কেসটা বোধ হয় আর আমার হাতে থাকছে না। সি আই ডি এর হাতে চলে যেতে পারে৷ একদিক দিয়ে ভালোই হবে এই মিডিয়াকে সামাল দেওয়া আমার জন্য কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। 

জলিল মিয়া কথাগুলো শেষ করে থামলেন৷ 

-অনিকেত তুমি চাইলে কেসটা নিয়ে তোমার মতো কাজ করতে পারো কোনে প্রকার সাহায্যে লাগলে আমাকে জানাবে৷ 

কথা গুলো বলে জলিল মিয়া সেখান থেকে চলে গেলেন৷ 


র সাহায্যে লাগলে আমাকে জানাবে৷ 

কথা গুলো বলে জলিল মিয়া সেখান থেকে চলে গেলেন৷ 








মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

গল্প: ১০ দিনের বউ

গল্প: ১০ দিনের বউ সকালে দরজায় পত্রিকাওয়ালার ডাক শুনে ঘুম ভাঙলো.... ঘুম ঘুম চোখে ঘড়ির দিকে তাকালাম.... ৯:২৫ বাজে... OMG........সাড়ে ন'টা বেজে গেছে... তাড়াতাড়ি শরীরের উপর থেকে কাঁথাটা একপাশে ছুড়ে ফেলে দিয়ে বাথরুমের দিকে দৌড় দিলাম.... যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দাঁতে ব্রাশ ঘষাতে লাগলাম... চোখে মুখে জল দিলাম... অতঃপর ফ্রেস টেস হয়ে রুমে এলাম... একদিকে শার্ট প্যান্ট পড়ে রেডি হচ্ছি.. একইসাথে অন্যদিকে মুখে পাউরুটি ঢুকাচ্ছি... ভালো করে খাওয়ারও সময় নেই.. উফফ অনেক দেরি হয়ে গেছে... শেষে তাড়াতাড়ি মুখের পাউরুটিটা গিলে টাই টা হাতে নিয়েই তাড়াতাড়ি দরজা লক করে বেরিয়ে পড়লাম.. দ্রুত হাটা ধরলাম... ইসস বাইকটা Repair করাতে দিয়েছি.. নাহলে বাইক দিয়েই যাওয়া যেত.. যাই হোক এখন এসব না ভেবে তাড়াতাড়ি বড় রাস্তায় গিয়ে একটা রিকশায় উঠলাম.... রিক্সায় বসে বসে টাই টা বেধে নিলাম.... আজকে অনেকটাই দেরি হয়ে গেছে... ব্যাচেলর মানুষ.. ঢাকায় একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে জব করি.. একটা মেসে একাই থাকি.. সকাল সকাল যে কেউ ঘুম থেকে ডেকে তুলবে সেরকম কেউও তো নেই... যাই হোক, এখন এসব ভাবলে চলবে না.. আমাদের অফিসের বস এমন...

{গল্প: হেড মাষ্টারের দুষ্টু মেয়ে }

  গল্প: হেড মাষ্টারের দুষ্টু মেয়ে জে এস সি পাশ করে আজ নতুন একটা স্কুলে ভর্তি হলাম অবশ্য আগে বাবা মার সাথে থাকতাম এখন ভাইয়ার কাছে আসলাম কারন স্কুল টা কাছে তাই | তো আজ প্রথম স্কুলে গেলাম ক্লাসে ঢুকবো তখনি দেখি কে যানো আমাকে লেং মেরে ফেলে দিছে তখন থাপ্পর দিতে যাবো তখনি দেখি এটা আর কেও না একটা মেয়ে দেখছি হাসছে আর মেয়ে টাও অপূরুপ সুন্দর মনে হলে এক মায়াবতী দূর এই সব চিন্তা করে লাভ নাই তো দেখি মেয়েটা বলতেছে- মেয়ে: এই ছেলে চোখে দেখিস না ? আমি অবাক হয়ে গেলাম কার প্রশ্ন কাকে বলার কথা সে আমাকে বলতেছে তখন আমি বল্লাম- আমি: আজব তো আপনি তো আমাকে লেং মেরে ফেলে দিছেন ? মেয়ে: এই তুই দেখছিস আমি তোকে ফেলে দিছি ? আমি: না আল্লাহ তো আমাকে কানা বানিয়ে দুনিয়া পাঠাইছে কিছু তো দেখি না | দেখি আমার কথা শুন হাসতেছে পরে বল্লো----> মেয়ে: এই তোর সাহস তো কম না বড়দের সাথে এইভাবে কথা বলস ? আমি: বড় মানে আর আপনি এইভাবে তুই তোকারি ভাবে কথা বলতেছেন কেনো? মেয়ে: কি তোর কত্ত বড় সাহস আমার সাথে এরকম ভাবে কথা বলিস তুই আমাকে চিনিস আমি কে ? আমি: কেনো আপনি কি প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে নাকি যে ভালোভাবে কথা...

গল্প::অবশেষে ম্যামের প্রেমে পড়লাম

   Bangla Love story গল্প:: অবশেষে ম্যামের প্রেমে পড়লা আমি রনি অনার্স ফাইনাল ইয়ারে পড়ি। আমাদের কলেজের সব স্যারেরা আমাকে ভালো ভাবেই চেনেন। কারনটা হলো আমি কলেজের টপার।লেখাপড়ায় যেমন ভালো খেলাধুলায় ও তেমন ভালো।তাছাড়া কলেজের যে কোন অনুষ্ঠানেও আমাকে উপস্থাপনা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়।এমনকি আন্ত কেলেজ ক্রিকেট ও ক্যরাটি টুনামেন্টেও আমার জন্যে আমাদের কলেজ চাম্পিয়ন হয়েছে এবার।সব স্যারেরা আমাকে নিয়ে গর্ব করে। আর সারা কলেজের মেয়েরাতো আমার সাথে কথা বলার জন্য পাগল।তবে আমি কারও সাথে মানে মেয়েদের সাথে কথা বলি না। আমি সব বিষয়ে পারদর্শী হলেও একটা বিষয়ে অনেক পিছিয়ে আছি আর তা হলো মেয়েদের কে খুব ভয় পায়। কলেজে কোন মেয়ের সাথে কথা বলিনা যদিও মেয়েরা আমার সাথে কথা বলার জন্য আমার পিছনে পিপড়ার মতো লাইন দিয়ে থাকে সবসময়। ।।আমাদের কলেজের প্রিন্সিপালের মেয়ে নাম মোহনা,আজ আমাদের কলেজেই ইংরেজির টিচার হিসেবে জয়েন করবে।তাকে আজ বরণ করা হবে। সেই জন্য আমাদের কলেজ ক্যাম্পাসে আজ একটা মিলন মেলা বসেছে মানে কলেজের সকল ছাত্র-ছাত্রী এবং সার, আমরা সবাই ক্যাম্পাসে অধীর আগ্রহে বসে আছি কখন নতুন ম্যামকে বরন ...