সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

গোপনে বিয়ে (৪র্থ পর্ব)



 গোপন বিয়ে (৪র্থ পর্ব)

এলিজার সে প্রেমিক ছিল আমার স্ত্রী বিন্দুর বড় ভাইয়ের বন্ধু।তার প্রেমিকের নাম ছিল পুণম।পুণম যে বিন্দুর পরিচিত তাও জানতো না এলিজা। এলিজা শুধু জানতো পুণম তার বয়ফ্রেন্ড এছাড়া আর কিচ্ছু না।'

'তারপর? তারপর কী হলো বলুন!'

ইমতিয়াজ তার কপালের ঘাম মুছলেন। অগ্রহায়ণের বাতাস বইছে গাছের পাতায় পাতায়। তবুও যে তিনি কেন ঘামছেন কী জানি!

ইমতিয়াজ এবার বললেন,'পুণমকে পাগলের মতো ভালোবাসতো এলিজা।মা তার রিলেশনের ব‍্যাপারে জানতে পেরে এলিজাকে অনেক বকেন। মারধোর পর্যন্ত করেন। চেম্বার থেকে বাসায় ফিরে এসব শুনে আমি মাকে বোঝায়।বলি,'মা,যোগ পাল্টেছে। এখনকার ছেলেমেয়েরা নিজেদের পছন্দেই প্রেম বিয়ে করছে এবং তারা হ‍্যাপিও হচ্ছে।আর এলিজা এখন যথেষ্ট ম‍্যাচিউ‍্যর।সো, তাকে বাঁধা না দেয়ায় উত্তম হবে আমাদের জন্য।ও যদি কাউকে ভালোবেসে হ‍্যাপি হতে পারে তাতে আমাদের সমস্যা কোথায়?'

মা আমার কথা শুনলেন। তারপর এলিজাকে মা বললেন,'ছেলেকে বল তার বাবাকে বলতে  আমাদের বাসায় এসে কথা বলার জন্য।'

এলিজা পুণমকে জানালো।তার দুদিন পরেই পুণমের বাবা এলেন আমাদের বাড়িতে। এবং তিনি এসে কথাবার্তা বলে এলিজার হাতে আংটি পরিয়ে দিয়ে গেলেন।এর কদিন পরই বিয়ে পড়িয়ে দেয়া হলো ওদের। এরপর থেকে পুণম নিয়মিত আসা যাওয়া করতে লাগলো আমাদের বাড়িতে।আর এলিজা ছিল তখন অনেক হ‍্যাপি।'

আমি ইমতিয়াজ সাহেবের কথাগুলো শুনছিলাম খুব মনোযোগ সহকারে।শুনতে আমার ভালো লাগছিলো। আমি এবার পরবর্তী অংশ শোনার জন্য আগ্রহ ভরা গলায় বললাম,'তারপর কী হলো? এলিজা মারা গেল কীভাবে?আর পুণমই বা কোথায়? আপনার ওয়াইফ এর কথা বলছিলেন  তিনি এখন কোথায়?আর আপনার মা! তিনি এখন কোথায় আছেন?'

ইমতিয়াজ বললেন,'আমার মাথা ব্যথা করছে। প্রতিদিন রাতে আমার এমন হয়। এখন উঠতেও পারবো না। তুমি আমার জন্য এক গ্লাস পানি আনতে পারবে বোন?তেষ্ঠা পেয়েছে খুব!'

আমি বললাম,'এক্ষুনি এনে দিচ্ছি।'

বলে আমি সিঁড়ি ভেঙে দৌড়ে নীচে গেলাম এবং জগ ভর্তি করে পানি নিয়ে এলাম। কিন্তু ছাদে এসে আমি হতবাক হয়ে গেলাম। ইমতিয়াজ সাহেব শুয়ে আছেন ছাদের ধুলো বালির উপর। আমি দ্রুত জগটা মাটিতে রেখে তার কাছে গেলাম। গিয়ে দেখি তার জ্ঞান নেই। মুখ দিয়ে কেমন ফেনা ফেনা বের হচ্ছে। আমি কী করবো বুঝতে পারছি না। আমার কপালেই কেন শুধু বিপদ আর বিপদ?

 ইচ্ছে করছে চিৎকার করে কাঁদতে। কিন্তু কেঁদে আর কী লাভ হবে। তারচেয়ে কিছু একটা করতে হবে। কিন্তু কী করবো আমি?

ইমতিয়াজ সাহেবের কাছে এসে তাকে ডাকতে চাইলাম। কিন্তু কী বলে ডাকবো ঠিক করতে পারছিলাম না। ডাক্তার কিংবা স‍্যার বলে ডাকা ঠিক হবে না।নাম ধরে ডাকাও ঠিক হবে না। কারণ তিনি আমায় বোন ডেকেছেন। ফস করে তখন আমার মুখ থেকে ভাই শব্দটিই বেরিয়ে এলো। আমি তার হাত ধরে নাড়া দিয়ে জোরে ডাকতে লাগলাম,'ভাইয়া,এই ভাইয়া?'

ইমতিয়াজ সাহেব সাড়া দিচ্ছেন না। আমি দ্রুত তার মাথায় জগের পানিটা ঢাললাম। চোখে মুখেও পানি ছিটিয়ে দিলাম।এতেও কাজ হলো না। ভয়ে আমার শরীর কাঁপছে। মনে মনে আল্লাহকে ডেকে ডেকে আবার নীচে নামলাম আর নীচ থেকে বড় দুটো বোতল ভরে নিয়ে দৌড়ে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে ইমতিয়াজ সাহেবের মাথায় পানি ঢালতে লাগলাম। দের বোতল পানি ঢালার পর ইমতিয়াজ সাহেবের হাতের একটা আঙ্গুল নড়লো। তারপর চোখের পাতা। আমি এবার তার হাত ধরে কেঁদে ফেললাম। কাঁদতে কাঁদতে তখন আমি শুধু বলছিলাম,'ভাইয়ারে,এই ভাইয়া,কথা বলো ভাইয়া!'

ইমতিয়াজ সাহেব ঝাঁপসা চোখে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,'এলিজা! এই এলিজা।'

তিনি আমার নাকে মুখে তার হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন,'তুই কোথায় চলে গিয়েছিলে এলিজা!'

আমি তখনও কাঁদছি।কী সব বিপদে পড়ছি বারবার আমি। আমি আর আধ বোতল পানি দিয়ে ভালো করে ইমতিয়াজ সাহেবের চোখ মুখ ধুয়ে দিলাম। ইমতিয়াজ সাহেবের মাথাটা মনে হয় এখন ঠিক হয়েছে। তিনি এখন আমায় চিনতে পারছেন। ইমতিয়াজ সাহেব আস্তে আস্তে উঠে বসে বললেন,'তোমাকে ধন্যবাদ বোন। আমার হঠাৎ মাথাটা ঘুরে গিয়েছিল। তারপর কী হলো আর জানি না। 

আমি বললাম,'আপনার কী এমন আরো হয়েছে কখনো?'


মাথায় ব‍্যাথা হয় প্রতিদিন কিন্তু আজই প্রথম ঢলে পড়েছি।'

'আপনি টেস্ট করান ভাইয়া!'

'আমায় ভাইয়া ডেকেছো তুমি!'

খুশিতে আত্মহারা হয়ে উঠলেন ইমতিয়াজ।আর তিনি আমার একটা হাত টেনে নিয়ে বললেন,'ভেবেছিলাম পৃথিবীতে আমার আর কেউ নেই তাই আমি ধুঁকে ধুঁকে শেষ হয়ে যাবো। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে বেঁচে থাকাটাও মন্দ না।যার কেউ না থাকে তারও কেউ জুটে যায়! আমারও জুটে গেছে। আমার বোন জুটে গেছে!'

ইমতিয়াজ ভাইয়া পরবর্তী ঘটনাটা তখনই বলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমি তাকে শাসনের গলায় বললাম,'আগে খাওয়া দাওয়া করে ঘুম হোক। সকাল বেলা যখন আপনার শরীর ভালো লাগবে তখন বলবেন।'

ইমতিয়াজ ভাইয়া বললেন,'আচ্ছা।'

*★**★★*********★***★★★***★**

সম্পূর্ণ গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন=




মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

গল্পঃ 💚💚 খালাতো বোন যখন বউ। 💚💚💚

গল্পঃ খালাতো বোন যখন বউ। 💚 এই মাত্র বাসায় আসলাম। আজকে মাথার ওপর দিয়ে অনেক ধকল গেছে। মা: ফারুক এদিকে আয়।  তোকে আমি কি বলছিলাম, তুই আমার কথা কেন শুনিস না। আজকে এই মুহুর্তে তুই  তোর খালার বাসায় জাবি  আমি : না মানে আম্মু  মা : না মানে  কি জাবি কি না তুই?  আমি :জাবো তো যাব। (হাফ ছেরে বাঁচলাম) তার পর আরকি বেরিয়ে পরলাম খালামনিদের বাসার উদ্দেশ্যে ।আমার পরিচয় টা দিয়ে নেই, আমি মোঃ ওমর ফারুক। বয়স ১৭, ক্লাস ১০ এ পরি।বাট নাম মাত্র স্কুল😀। সারা বসরে মাত্র ২ দিন স্কুল এ গেছি তাও আবার শুধু মাত্র ফি জমা দেয়ার জন্য। সারাদিন শুধু মারামারি ফাটাফাটি এই সব করে দিন কাটে।  ভাবচেন কেন 🤔আসলে আমার ভাই রাজনৈতিক দলের অনেক বড়ো নেতা। তাই আমি একটু এরকমি। বাস্তবে ফিরে আসি খালামনির বাসায় বাসে করে জেতে সময় লাগে ৩ থেকে ৪ ঘনটা, আমি বাইক নিয়ে সেখানে ২ ঘন্টার মদ্ধে পৌছে গেছি😀।  কিন্তু একি এতো সুন্দরী একটা মেয়ে, আমি জিবনেও এতো সুন্দর মেয়ে দেখি নাই। গাল গুলো কি সুন্দর আহহা😍, চোখ দুটো তো নাহ আমি আর বলতে পারবোনা😘।  একি ঐ ছেলেটা আবার কোথায় থেকে আসলো। সালার জীবনের এতোগুলা বছর পার ...

গল্প: ১০ দিনের বউ

গল্প: ১০ দিনের বউ সকালে দরজায় পত্রিকাওয়ালার ডাক শুনে ঘুম ভাঙলো.... ঘুম ঘুম চোখে ঘড়ির দিকে তাকালাম.... ৯:২৫ বাজে... OMG........সাড়ে ন'টা বেজে গেছে... তাড়াতাড়ি শরীরের উপর থেকে কাঁথাটা একপাশে ছুড়ে ফেলে দিয়ে বাথরুমের দিকে দৌড় দিলাম.... যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দাঁতে ব্রাশ ঘষাতে লাগলাম... চোখে মুখে জল দিলাম... অতঃপর ফ্রেস টেস হয়ে রুমে এলাম... একদিকে শার্ট প্যান্ট পড়ে রেডি হচ্ছি.. একইসাথে অন্যদিকে মুখে পাউরুটি ঢুকাচ্ছি... ভালো করে খাওয়ারও সময় নেই.. উফফ অনেক দেরি হয়ে গেছে... শেষে তাড়াতাড়ি মুখের পাউরুটিটা গিলে টাই টা হাতে নিয়েই তাড়াতাড়ি দরজা লক করে বেরিয়ে পড়লাম.. দ্রুত হাটা ধরলাম... ইসস বাইকটা Repair করাতে দিয়েছি.. নাহলে বাইক দিয়েই যাওয়া যেত.. যাই হোক এখন এসব না ভেবে তাড়াতাড়ি বড় রাস্তায় গিয়ে একটা রিকশায় উঠলাম.... রিক্সায় বসে বসে টাই টা বেধে নিলাম.... আজকে অনেকটাই দেরি হয়ে গেছে... ব্যাচেলর মানুষ.. ঢাকায় একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে জব করি.. একটা মেসে একাই থাকি.. সকাল সকাল যে কেউ ঘুম থেকে ডেকে তুলবে সেরকম কেউও তো নেই... যাই হোক, এখন এসব ভাবলে চলবে না.. আমাদের অফিসের বস এমন...

{গল্প: হেড মাষ্টারের দুষ্টু মেয়ে }

  গল্প: হেড মাষ্টারের দুষ্টু মেয়ে জে এস সি পাশ করে আজ নতুন একটা স্কুলে ভর্তি হলাম অবশ্য আগে বাবা মার সাথে থাকতাম এখন ভাইয়ার কাছে আসলাম কারন স্কুল টা কাছে তাই | তো আজ প্রথম স্কুলে গেলাম ক্লাসে ঢুকবো তখনি দেখি কে যানো আমাকে লেং মেরে ফেলে দিছে তখন থাপ্পর দিতে যাবো তখনি দেখি এটা আর কেও না একটা মেয়ে দেখছি হাসছে আর মেয়ে টাও অপূরুপ সুন্দর মনে হলে এক মায়াবতী দূর এই সব চিন্তা করে লাভ নাই তো দেখি মেয়েটা বলতেছে- মেয়ে: এই ছেলে চোখে দেখিস না ? আমি অবাক হয়ে গেলাম কার প্রশ্ন কাকে বলার কথা সে আমাকে বলতেছে তখন আমি বল্লাম- আমি: আজব তো আপনি তো আমাকে লেং মেরে ফেলে দিছেন ? মেয়ে: এই তুই দেখছিস আমি তোকে ফেলে দিছি ? আমি: না আল্লাহ তো আমাকে কানা বানিয়ে দুনিয়া পাঠাইছে কিছু তো দেখি না | দেখি আমার কথা শুন হাসতেছে পরে বল্লো----> মেয়ে: এই তোর সাহস তো কম না বড়দের সাথে এইভাবে কথা বলস ? আমি: বড় মানে আর আপনি এইভাবে তুই তোকারি ভাবে কথা বলতেছেন কেনো? মেয়ে: কি তোর কত্ত বড় সাহস আমার সাথে এরকম ভাবে কথা বলিস তুই আমাকে চিনিস আমি কে ? আমি: কেনো আপনি কি প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে নাকি যে ভালোভাবে কথা...