সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

গল্প:- ভুল সবই ভুল -- ৩য় পর্ব

 

গল্প:- ভুল সবই  ভুল
 

৩য় পর্ব






অফিসে বসে আছি তখন হঠাৎ করে দপ্তরি মিরাজ এসে বললো,'ছার,আফনের সাথে দেখা করনের লাইগা দুইজন লোক আসছে।'
আমি অবাক হয়ে বললাম,'কারা আসছে?নাম কী ওদের?'
'নাম জানি না ছার। পুলিশের লোক।ডেরেস পরা পুলিশের। আপনি তারাতাড়ি যান।'
কথাটা বলে চলে গেল মিরাজ।



এবার আমার ভয়ে শরীর কেঁপে উঠলো। তবে কী মিতু থানায় ইনফর্ম করেছে?
আমার হাতের ফাইলটা ফিতে দিয়ে বেঁধে রেখে ভয়ে ভয়ে অফিস থেকে বের হয়ে এলাম। এসে দেখি গেটের কাছে একটা চায়ের স্টলে বসে আছে দুজন‌ পুলিশের লোক। একজন দারোগা। অপরজন কনস্টেবল। দারোগার নাম তৈমুর গাজী।সে আমায় দেখেই সালাম দিল।
আমি অবাক হলাম। আসামিকে দেখে তো দারোগার সালাম দেয়ার কথা না!
আমি কাছে যেতেই তৈমুর বললো,'স্যার,বসুন।


আমি ওদের সামনের বেঞ্চিটাতে বসলাম।
তৈমুর গাজী এবার বললো,'স্যার, আপনার বোনের নামে থানায় ইনফর্ম করে গেছে আপনার স্ত্রী। আপনার বোন সন্ধি নাকি আপনার স্ত্রী মিতুকে আহত করেছে। তাছাড়া মৃত্যুর হুমকিও দিয়ে যাচ্ছে অনবরত!'
আমি আরো অবাক হয়ে বললাম,'কী বলছেন আপনি?'



'স্যার , আপনি একজন সম্মানি ব্যাক্তি। ভিক্টিম বলেছে, আপনার বোন যদি এখান থেকে না সড়ে আই মিন আপনার বাড়ি থেকে তবে নাকি আপনার স্ত্রী মিতু যেকোনো সময় মার্ডার হয়ে যেতে পারে!আমি জানি না আপনি কোনটা করতে ভালো মনে করবেন।আমি জাস্ট আপনার সাথে কথা বলে গেলাম।'
আমার শরীর কেমন কাঁপছে।ভাবতেও কষ্ট হচ্ছে মিতু কতটা জঘন্য মেয়ে!




আমি দারোগা তৈমুরকে বললেন,'তৈমুর সাহেব, আমার নামে কোন ইনফর্ম করেনি?'
'জ্বি না স্যার। আপনার স্ত্রী বলেছে, আপনিও নাকি আপনার বোনকে ভয় পান। এই জন্য সব সময় চুপ করে থাকেন।'
কথাগুলো বলে দারোগা আমায় সালাম দিয়ে চলে গেল।ওরা চলে যাওয়ার পর পরই মিতুর ফুপু আবার ফোন দিলো আমায়।আমি রিসিভ করতেই ও পাশ থেকে তিনি হেসে উঠলেন।বিশ্রি হাসি!
হেসে তিনি বললেন,'কেমন নাচলা বাপধন?'


আমার এমন রাগ পেলো তখন!রাগে একটা ধমক দিয়ে বললাম,'আপনাকে আমি এর উচিৎ জবাব দিবো বলে রাখলাম!'
মিতুর বড় ফুপু এবার আমায় পাল্টা ধমক দিয়ে বললেন,'ফাঁদ তুমি পাতোনি।পেতেছি আমি। তুমি হলে ঘুঘু। আর আমি শিকারি।বুঝলা?হি হি হি।'

মনটাই খারাপ হয়ে গেল।আজ আর অফিস করা যাবে না। আমার ভয় হচ্ছে সন্ধিকে নিয়ে।সন্ধি মোটেও আর নিরাপদ নয় আমার এখানে। যেকোনো সময় বিপদ‌ ঘটতে পারে।কী করবো কিছুই বুঝতে পারছি না। অফিসে এসে ব্যাগ গুছিয়ে বাসার পথ ধরলাম।


রাতে বাসায় ফিরে দেখি আমান কাঁদছে।ওর মায়ের জন্য কাঁদছে।অত ছোট ছেলে কী আর মা ছাড়া থাকতে পারে?
সন্ধি ওকে কোলে টেনে নিলো।দুধ দিলো। কিন্তু কাজ হলো না। পৃথিবীতে মায়ের স্থানটা সন্তানকে আর কেউ দিতে পারে না যে!


সন্ধি বললো,'ভাইয়া, তুই ভাবীকে একটা ফোন কর।বল,আমি চলে যাবো এখান থেকে।ও যেন এসে পড়ে এখানে। নয়তো আমানের অসুখ করবে।'
আমি সন্ধির এ কথার উত্তরে কী বলবো বুঝতে পারছি না। সবকিছু কেমন গুলিয়ে ফেলছি। দারোগা তৈমুরের কথাগুলোও কানে বাজছে বারবার।মিতু তো সহজ কোন মেয়ে নয়।ওর জন্য যদি সন্ধি বিপদে পড়ে!
সারাটা রাত বিছানায় ছটফট করে কাটিয়েছি। সকাল বেলা লাল চোখ নিয়ে অফিসে গিয়েছি।যাওয়ার সময় সন্ধিকে বলে গেছি সাবধানে থাকতে।



অফিসে বসে থেকে ফাইল ঘাটছি।ঠিক তখন আবার দারোগা তৈমুর হঠাৎ আমায় ফোন করলো।বললো,'স্যার, আপনি কোথায় আছেন এখন?'
আমি বললাম,'অফিসে।'
তৈমুর বললো,'কষ্ট করে এক্ষুনি বাসায় যান প্লিজ! আপনার বোন এখন আমার জিম্মিতে আছে। ওকে নিয়ে অবশ্য আমি থানায় যাবো না।যাবো আমার বাসায়। বাসার ঠিকানা আপনাকে ম্যাসেজ করে দিয়ে দিবো আমি। আপনি আগে আপনার বাসায় যান। বাচ্চা দুটোকে সাথে নিয়ে আমার দেয়া ঠিকানায় চলে আসবেন।'


এই কথাগুলো বলে ও পাশ থেকে ফোন কেটে দিলো তৈমুর। তারপর অনেক চেষ্টা করেও আমি ওকে ফোন দিতে পারিনি।ওর ফোনের সুইচ অফ। অবশ্য একটা ম্যাসেজ আমার ফোনে এসেছে।ওকানে বাসার ঠিকানা দেয়া।
রাগে এবং ভয়ে আমার শরীর রি রি করছে।এটা কোন ধরনের কথা। আমার বোনকে এরেস্ট করে সে নিয়ে যাবে থানায় কিন্তু থানায় না গিয়ে ও বাসায় নিয়ে গেল কেন?নাকি তৈমুরের এখানে কোন স্বার্থ আছে?





মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

গল্প: ১০ দিনের বউ

গল্প: ১০ দিনের বউ সকালে দরজায় পত্রিকাওয়ালার ডাক শুনে ঘুম ভাঙলো.... ঘুম ঘুম চোখে ঘড়ির দিকে তাকালাম.... ৯:২৫ বাজে... OMG........সাড়ে ন'টা বেজে গেছে... তাড়াতাড়ি শরীরের উপর থেকে কাঁথাটা একপাশে ছুড়ে ফেলে দিয়ে বাথরুমের দিকে দৌড় দিলাম.... যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দাঁতে ব্রাশ ঘষাতে লাগলাম... চোখে মুখে জল দিলাম... অতঃপর ফ্রেস টেস হয়ে রুমে এলাম... একদিকে শার্ট প্যান্ট পড়ে রেডি হচ্ছি.. একইসাথে অন্যদিকে মুখে পাউরুটি ঢুকাচ্ছি... ভালো করে খাওয়ারও সময় নেই.. উফফ অনেক দেরি হয়ে গেছে... শেষে তাড়াতাড়ি মুখের পাউরুটিটা গিলে টাই টা হাতে নিয়েই তাড়াতাড়ি দরজা লক করে বেরিয়ে পড়লাম.. দ্রুত হাটা ধরলাম... ইসস বাইকটা Repair করাতে দিয়েছি.. নাহলে বাইক দিয়েই যাওয়া যেত.. যাই হোক এখন এসব না ভেবে তাড়াতাড়ি বড় রাস্তায় গিয়ে একটা রিকশায় উঠলাম.... রিক্সায় বসে বসে টাই টা বেধে নিলাম.... আজকে অনেকটাই দেরি হয়ে গেছে... ব্যাচেলর মানুষ.. ঢাকায় একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে জব করি.. একটা মেসে একাই থাকি.. সকাল সকাল যে কেউ ঘুম থেকে ডেকে তুলবে সেরকম কেউও তো নেই... যাই হোক, এখন এসব ভাবলে চলবে না.. আমাদের অফিসের বস এমন...

{গল্প: হেড মাষ্টারের দুষ্টু মেয়ে }

  গল্প: হেড মাষ্টারের দুষ্টু মেয়ে জে এস সি পাশ করে আজ নতুন একটা স্কুলে ভর্তি হলাম অবশ্য আগে বাবা মার সাথে থাকতাম এখন ভাইয়ার কাছে আসলাম কারন স্কুল টা কাছে তাই | তো আজ প্রথম স্কুলে গেলাম ক্লাসে ঢুকবো তখনি দেখি কে যানো আমাকে লেং মেরে ফেলে দিছে তখন থাপ্পর দিতে যাবো তখনি দেখি এটা আর কেও না একটা মেয়ে দেখছি হাসছে আর মেয়ে টাও অপূরুপ সুন্দর মনে হলে এক মায়াবতী দূর এই সব চিন্তা করে লাভ নাই তো দেখি মেয়েটা বলতেছে- মেয়ে: এই ছেলে চোখে দেখিস না ? আমি অবাক হয়ে গেলাম কার প্রশ্ন কাকে বলার কথা সে আমাকে বলতেছে তখন আমি বল্লাম- আমি: আজব তো আপনি তো আমাকে লেং মেরে ফেলে দিছেন ? মেয়ে: এই তুই দেখছিস আমি তোকে ফেলে দিছি ? আমি: না আল্লাহ তো আমাকে কানা বানিয়ে দুনিয়া পাঠাইছে কিছু তো দেখি না | দেখি আমার কথা শুন হাসতেছে পরে বল্লো----> মেয়ে: এই তোর সাহস তো কম না বড়দের সাথে এইভাবে কথা বলস ? আমি: বড় মানে আর আপনি এইভাবে তুই তোকারি ভাবে কথা বলতেছেন কেনো? মেয়ে: কি তোর কত্ত বড় সাহস আমার সাথে এরকম ভাবে কথা বলিস তুই আমাকে চিনিস আমি কে ? আমি: কেনো আপনি কি প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে নাকি যে ভালোভাবে কথা...

গল্প::অবশেষে ম্যামের প্রেমে পড়লাম

   Bangla Love story গল্প:: অবশেষে ম্যামের প্রেমে পড়লা আমি রনি অনার্স ফাইনাল ইয়ারে পড়ি। আমাদের কলেজের সব স্যারেরা আমাকে ভালো ভাবেই চেনেন। কারনটা হলো আমি কলেজের টপার।লেখাপড়ায় যেমন ভালো খেলাধুলায় ও তেমন ভালো।তাছাড়া কলেজের যে কোন অনুষ্ঠানেও আমাকে উপস্থাপনা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়।এমনকি আন্ত কেলেজ ক্রিকেট ও ক্যরাটি টুনামেন্টেও আমার জন্যে আমাদের কলেজ চাম্পিয়ন হয়েছে এবার।সব স্যারেরা আমাকে নিয়ে গর্ব করে। আর সারা কলেজের মেয়েরাতো আমার সাথে কথা বলার জন্য পাগল।তবে আমি কারও সাথে মানে মেয়েদের সাথে কথা বলি না। আমি সব বিষয়ে পারদর্শী হলেও একটা বিষয়ে অনেক পিছিয়ে আছি আর তা হলো মেয়েদের কে খুব ভয় পায়। কলেজে কোন মেয়ের সাথে কথা বলিনা যদিও মেয়েরা আমার সাথে কথা বলার জন্য আমার পিছনে পিপড়ার মতো লাইন দিয়ে থাকে সবসময়। ।।আমাদের কলেজের প্রিন্সিপালের মেয়ে নাম মোহনা,আজ আমাদের কলেজেই ইংরেজির টিচার হিসেবে জয়েন করবে।তাকে আজ বরণ করা হবে। সেই জন্য আমাদের কলেজ ক্যাম্পাসে আজ একটা মিলন মেলা বসেছে মানে কলেজের সকল ছাত্র-ছাত্রী এবং সার, আমরা সবাই ক্যাম্পাসে অধীর আগ্রহে বসে আছি কখন নতুন ম্যামকে বরন ...