অভিনয়
পর্ব:৮
উফফ আর কতবার বলবো আমি অধরা নই..এতোই যদি অধরাকে ভালোবাসতে তাহলে সেদিন অধরার সাথে মরে গেলে না কেনো??
তিশার কাছ থেকে এমন কথা শুনে মামুন একদম চুপ হয়ে গেলো..তিশাও চুপ হয়ে গেছে
দুজন দুজনের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে ছিলো তারপর
মামুন সেখান থেকে চলে আসতে লাগলো..
এই তুমি এতো রাতে কোথায় যাচ্ছ?(তিশা)
মামুন কোনো প্রতি উত্তর না দিয়ে বাসা থেকে বেড়িয়ে হাটা ধরলো..
পেছন পেছন তিশাও আসছে..মামুন এই মামুন এইভাবে যাচ্ছ কোথায়??
আমার কথা শোনো দাড়াও..
কিন্তু মামুনের দাঁড়াবার কোনো লক্ষণ নেই..
মামুন হাটছে আর তিশা দৌড়াচ্ছে তবুও তিশা মামুনের সাথে পেড়ে উঠছে না..
মামুনের চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ছে হ্যা এটা অধরা না কারণ অধরা হলে এমন কথা কোনো দিন বলতো না..
তিশা ভাবছে না এটা আমি কি করেছি?রাগের মাথায় একটু বেশি করে ফেলেছি..
হাটতে হাটতে মামুন সেই লেকের ধারে চলে গেছে..
লেকের পাশে সরকার লাইটের ব্যাবস্থা করে দিলেও চোরেরা অনেক গুলো লাইট চুরি করে নিয়ে গিয়েছে
তাই অনেক যায়গাতেই অন্ধকার
মামুন গিয়ে অন্ধকারে গিয়ে বসলো..
তিশাও মামুনের পাশে বসলো..
মামুন তিশার দিকে না তাকিয়ে আনমনে সামনের দিকে তাকিয়ে আছে..
অনেকক্ষণ নিরবতা..
তিশাই বললো আর কতক্ষণ এইখানে এইভাবে বসে থাকবে চলো বাসায় চলো রাত হয়ে যাচ্ছে..
-----........
কি হলো আমি কিছু বলছি তো
বাসায় চলো রাত বাড়ছে...
আমি যাবো না.....
তিশাঃযাবে না মানে কি এইখানে এমনভাবে বসে থাকবে নাকি??
মামুনঃহ্যা থাকবো..
তিশাঃবাসায় চলো বলছি..
মামুনঃআমার সময় হলে আমি চলে যাবো..
তিশাঃসময় না তোমাকে এখুনি আমার সাথে বাসায় যেতে হবে..
মামুনঃবলছি তো আমি যাবো না কান দিয়ে যাচ্ছেনা নাকি??
তিশাঃহ্যা যাচ্ছে না তুমি এখানে বসে কেনো থাকবে??
মামুনঃআমার এখানে বসে থাকতে ভালো লাগছে তাই থাকবো যাও তো আমাকে একটু একা
থাকতে দাও আমার ভালো লাগছে না
তিশাঃরাগ করেছ??
মামুনঃরাগ কার উপর রাগ করবো??
তিশাঃকার উপর মানে?আমার উপর রাগ করেছ তুমি??
মামুনঃনাহ একটুও রাগ করেনি তোমার উপর.উল্টো আমি তোমার কথায় অনেক খুশি হয়েছি জানো??
তিশাঃখুশি হয়েছ মানে??
মামুনঃঅই যে তুমি বললে না আমি এতো অধরা অধরা করি আর অধরাকে এতোই যদি ভালোবাসি ওর সাথে মরে গেলাম না কেনো??
হ্যা সত্যি সেদিন আল্লাহ কেনো যে আমাকে নিয়ে নিলো না..আমি এখন সবার কাছে একটা বোঝা হয়ে গেছি।।সত্যি এখন আর বেচে থাকতে ভালো লাগে না..আত্নহত্যা পাপ.যদি পাপ না হতো নিজেকে শেষ করে দিতাম আমি..
তিশা;এই তুমি এইসব কি বলছ??
মামুনঃকেনো ভুল কিছু বলেছি আমি?তুমি না একটু আগে এই কথা বললে..
তিশাঃআমি তো রাগের মাথায় বকে ফেলেছি তার জন্য কি তোমার মন খারাপ করে বসে থাকতে হবে??
মামুনঃআমি কই মন খারাপ করে বসে আছি..
তিশাঃতুমি না বললেও আমি বুঝতে পাড়ছি..
মামুনঃবেশি বোঝা ভালো না আমি মোটেও মন খারাপ করে নেই
তিশাঃআমি জানি তোমার মন খারাপ
চলো না বাসায় চলো
মামুনঃতুমি চলে যাও আমি আজ বাসায় যাবো না..
তিশাঃআমি এতো রাতে বাসায় একা কিভাবে যাবো?সাথে তো গাড়ি আনিনি..
মামুনঃতুমি কি করে যাবে সেটা তোমার ব্যাপার
তিশাঃএমনভাবে কেনো বলছ?রাস্তায় যদি আমার কিছু হয়ে যায় তখন কি করবে??
মামুন কিছুক্ষণ কিছু একটা ভেবে বললো আচ্ছা চলো..
মামুন তিশাকে বাসায় দিয়ে আবার বেড়িয়ে যায় তবে তিশা এইবার সেটা জানতে পারেনি..
পরদিন সকালে তিশা ঘুম থেকে উঠে দেখে মামুন বাসায় নেই..
ফোন দেই মামুনের নাম্বারে..
হ্যালো বলো(মামুন)
তিশাঃতুমি কোথায় বাসায় নেই কেনো?
মামুনঃআমি তো একটু বেড়াতে এসেছি..
তিশাঃবেড়াতে গেছ মানে?কাদের বাসায় বেড়াতে গেছ তুমি??
মামুনঃতুমি চিনবে না আমার এক কলেজ ফ্রেন্ডের বাসায় এসেছি
তিশাঃতুমি বলবে তো নাকি আমাকে না বলে
তুমি কারর বাসায় গেছ??
মামুনঃআরোহীদের বাসায় এসেছি..
তিশাঃমানে কি অই তোরে না বলছিলাম অই বাসায় না যাইতে.
মামুনঃসরি তুই তুকারি করছ কেনো?আর তুমি আরোহীকে চিনো নাকি?আর তুমি কবে আমাকে না করলে?
তিশাঃতুই একটা মেয়ের বাসায় কেনো গেছিস সেটা বল..আর তোর মেয়ে ফ্রেন্ড কেনো থাকবে..
মামুনঃতোমার সাথে আমি পরে কথা বলছি আরোহী খাওয়ার জন্য আমাকে ডাকছে আমি খেয়ে আসছি
এইবলেই মামুন ফোন কেটে দিলো..
আর এইদিকে তিশা রাগে ফুঁসছে..
না এইভাবে বসে থাকলে চলবে না আজকে ওর একদিন কি আমার একদিন সাহস কত আমাকে না বলে দাড়া দেখাচ্ছি মজা...
তিশা গাড়ি নিয়ে বের হয়ে গেলো..
কতক্ষণ পর আরোহীদের বাসায় কলিংবেলের চাপ পড়লো
আরোহী এসে দরজা খুলে দিলো।।
আরোহীঃকি ব্যাপার আপনি কে?
তিশা কোনো উত্তর না দিয়ে ভেতরে চলে গেল..
আরোহীঃআরে বলবেন তো নাকি আপনি কে??
তিশাঃমামুন কোথায়?
আরোহীঃভেতরে বসে খাচ্ছে কিন্তু আপনি কে?
তিশাঃআমি ওর স্ত্রী..
তিশা ভেতরে গিয়ে দেখে মামুন খাচ্ছে..
মামুনের কাছে গিয়ে অই
তোরে এর আগে বলছিলাম না এই বাসায় আর না আসতে??
মামুনঃকবে না করছিলে..আর তোমার সাথে কথা পরে বলছি আমাকে খেতে দাও
তিশাঃআরে রাখ তোর খাওয়া আজকে বাসায় চল তোর খবরর আছে এই বলেই মামুনেরর কলার ধরে উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।।
মামুন আরোহীকে উদেশ্যে করে বলছে দোস্ত আজকে চলে যাচ্ছি কিন্তু আমি আবারর আসবে আর হ্যা তোর হাতের রান্নাটা অনেক ভালো ছিলো,,আর আংকেল আন্টিকে আমার সালাম জানিও।।
তিশা আরো রেগে গিয়ে দ্রুত গতিতে সেখান থেকে মামুনকে নিয়ে আসলো..এসে মামুনকে গাড়িতে বসিয়ে গাড়ি চালাতে শুরু করলো..
রাগে তিশার চোখ মুখ লাল হয়ে আছে..
মামুনঃআচ্ছা তুমি কি আরোহীকে আগে থেকে চিনতে?
তিশাঃআমি কিভাবে আগে থেকে চিনবো?
মামুনঃতাহলে জানলে কিভাবে এখানে আরোহীদের বাসা??
এমন প্রশ্ন শুনে তিশা একটু
ঘাবড়ে গেল..কেনো আমার কি কোনো ফ্রেন্ড নাই আমি তাদের মাধ্যেমে জেনে নিয়েছে..
মামুনঃঅহহ তাই বলো..
তিশাঃএখনন আর একটাও কথা হবে না,,তোর সাথে আমার বোঝাপড়া হবে বাসায় গিয়ে
মামুনঃসে বাসায় গিয়েই বোঝাপড়া করো আর যাই বলো আরোহীর হাতের রান্নাটা সেইই লাগছে আমার কাছে..একদম সেই আগের মতই আছে.
উফফ আরোহীর নাকি এখনো বিয়ে হয়নি..
তিশাঃবিয়ে হয়নি তো কি হয়েছে??
মামুনঃআরোহীকেই বিয়ে করা দরকার ছিলো
তাহলে অন্তত প্রতিদিন এতো ভালো ভালো রান্না খেতে পাড়তাম..
তিশা এইবারর গাড়ি থামিয়ে মামুনের গলা চেপে ধরে বললো আর একবার যদি ওই মেয়ের নাম উচ্চারণ করিস তোকে মেরে আমি জেলে যাবো এই আমি বলে
দিলাম
মামুনঃআরে আমার লাগছে তো আমারর দম বন্ধ হয়ে আসছে ছেড়ে দাও আমাকে..
তিশাঃতাহলে বল আর অই মেয়ের নাম মুখে আনবি??
নাহ নাহ আর আনবো না ছাড়ো আমায়?
তিশা মামুনের গলা ছেড়ে দিলো
মামুনঃআমি বুঝলাম না তুমি আরোহীর নাম শুনে এতো রেগে যাও কেনো??
তিশাঃতুই আবারো ওর নাম নিলি??
মামুনঃসরি সরি আর নিবো না ওর নাম..
সারা রাস্তা মামুন চুপ করে বসে ছিলো..
এই আমরা চলে এসেছি এখনো কেনো বসে আছিস??
মামুনঃনাহ আমি নামবো না আমাকে মারবে তুমি??
তিশা;সেটা এখানে না রুমে নিয়ে গিয়ে মারবো..
মামুনঃকিন্তু আমার দোষ কি??
তিশাঃসেটাও রুমে গিয়ে বলব এই বলে মামুনকে গাড়ি থেকে নামিয়ে ধরে রুমে নিয়ে গেলো.
তারপর রুমের দরজা বন্ধ করে দিলো.
মামুনঃএই দরজা আটকালে কেনো??
তিশাঃযাতে করে তুই পালিয়ে যেতে না পারিস হারামি..
মামুনকে ধাক্কা দিয়ে বিছানার উপর ফেলে দিয়ে বললো তোকে বলছিলাম আমি অই বাসায় না যেতে??
মামুনঃনাহ তুমি বলোনী অধরা বলছিলো..
তিশাঃসে যেই বলুক তবুও তুই গেলি কেনো
মামুনঃঅধরা কষ্ট পাবে বলে আমি যেতাম না
কিন্তু এখন তো অধরা নেই তাই
তিশাঃঅধরা কষ্ট পায় না সেটা ঠিক আছে কিন্তু
অন্য একজন ঠিক কষ্ট পাচ্ছে..
এই বলেই বুকের উপরর কিল ঘুষি শুরু হয়ে গেছে..
মামুনঃআরে আমার লাগছে ব্যাথা পাচ্ছি তো??
তিশাঃব্যাথা পাবার জন্যই তো দিচ্ছি..
আমাকে কষ্ট দিলি কেন তুই..
মামুন;আমি কিভাবে তোমাকে কষ্ট দিলাম
তিশাঃতুই জানিস না আমি আরোহীকে সহ্য করতে পারি না
মামুনঃআমি জানতাম অধরা সহ্য করতে পারে না
কিন্তু তুমিও যে পারবে না সেটা জানতাম না..আর কেনোই বা পারো না.
তিশাঃকারন অই ডাইনি তোকে প্রপোজ করেছিলো।
মামুনঃতুমি সেটা জানলে কিভাবে?
তিশাঃআমাকে রাত্রী বলেছে।।
মামুনঃএকদম মিথ্যা বলবা না..
এটা আমি আর অধরা ছাড়া কেও জানেনা..
তাহলে তুমি আমার অধরা বলো..
মামুনের কথা শুনে
তিশা মামুনকে ছেড়ে দিয়ে বললো আমার কাজ আছে আমি গেলাম.....------
--------------------------------------------
https://banglalovestory247.blogspot.com/
tags:
Banglalovestory247, love story bangla, love story, নতুন রোমান্টিক লাভ স্টোরি, লাভ স্টোরি, রোমান্টিক লাভ স্টোরি বাংলা, ভালোবাসার গল্প, প্রেমের গল্প,নতুন ভালোবাসার গল্প, রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প, সেরা ভালোবাসার গল্প, প্রেমের গল্প ও কবিতা,
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন