গল্প: ম্যাডামের মেয়ে যখন বউ
পর্ব-৭
আমি আনমনে হাটছি আর তিশার কথা গুলো ভাবছি।রাস্তার পাশ দিয়ে হাটছিলাম ভালো লাগছিলো না তাই কোনো দিকে আমার তেমন কোনো খেয়াল ছিলো না।
হঠাৎ করেই কে যেনো আমাকে টান মেরে রাস্তার একদম কিনারে নিয়ে গেলো।আর জড়িয়ে ধরেই বলতে শুরু করলো এই তুমি কি করতে যাচ্ছিলে আর একটু হলেই তো বলেই কান্না শুরু করে দিলো।
আমি তো অবাক তিশা আমাকে জড়িয়ে ধরে আছে।আর আমি হাটতে হাটতে কখন যে রাস্তার মাজখানে চলে গেছিলাম সেটা আমি নিজেও বুঝতে পারি নাই।তবে তিশা আসলো কোথা থেকে,,তিশা না চলে গেছিলো তাহলে আবার কোথায় থেকে উদয় হলো,তিশা তো আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্নাকরেই যাচ্ছে।
আমি- কি হলো আমাকে এই ভাবে জড়িয়ে ধরে আছেন কেনো?
তিশা- তোমাকে জড়িয়ে ধরবো না তো অন্য কাউকে ধরবো নাকি?
আমু- সেটা আপনি ভালো জানেন,,আমি কি করে বলবো।
তিশা- তুমি কি করতে গেছিলে হা,আর একটু হলেই গো বলে কান্না শুরু করে দিলো।
আমি- যা হবার হতো, আর আপনি তো চেয়েছিলেন আমি মরে যাই,,তাহলে বাচালেন কেনো??
তিশা- আমি কখন চেয়েছি?
আমি- আমি যখন বললাম আপনাকে ছাড়া আমি বাচবো না তখন আপনি কি বলেছিলেন মনে নাই??
আপনি না বলেছিলেন আমি মরে গেলেও আপনার কিছু যায় আসে না।তাহলে আমাকে এখন এইভাবে বাচালেন কেনো আক্ষেপ ছিলো না।আক্ষেপ হচ্চে আমি একজন ভূল মানুষকে ভালোবাসলাম।যে কিনা এতো দিন ধরে শুধু নাটক করেই গেছে।আর আমি সেটাকে সত্যি ভেবে নিলাম।আসলেই আমি কত বোকা তাই না।
আমাকে এই ভাবে জড়িয়ে ধরে না থেকে ছেড়ে দিন।আপনি আমাকে জড়িয়ে ধরে আছেন সেটা ভাবলেও আমার কষ্ট হচ্চে প্লিজ ছেড়ে দিন।আমি বাসায় চলে যাবো ভালো লাগছে না কিছু, ছাড়ুন আমায়।
তিশা- নাহ ছাড়বো না,এই ভাবেই সারা জীবন ধরে রাখবো আগলে রাখবো কখনো হারাতে দিবো না।
আমি- আবার কোন নাটক শুরু করলেন দেখুন এমনিতেই যে নাটক ফ্রিতে অনেক দেখিয়েছেন আর দেখতে চাই না।একটু আগে যে কথা গুলো বললেন আমি কোনো দিন ভাবতেও পারি নাই আপনি অই কথা গুলো বলতে পারবেন।দেখুন রাস্তায় অনেক মানুষ আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে দয়া করে এইবার আমাকে ছেড়ে দিন।
উফফফ আমার ভালো লাগছে নাহ,আসলেই খুব কষ্ট হচ্চিলো।কেনো হবে না একটু আগে কি কথা বলেছিলো আর এখন কি কথা বলছে। তিশা এমন ভাবে জড়িয়ে ধরে আছে আমি কিছুতেই ছাড়াতে পারছি না।
মেয়েটা এতো শক্তি পাই কোথায় থেকে বাবারে কি শক্তি আমি কিছুতেউ পেরে উঠছি না।খুব ব্যাথা লাগছে যেমন ভাবে চেপে ধরে আছে।
আমি কি করবো,তখন একটা বুদ্ধি মাথায় আসলো আমি বললাম আমার খুব পেয়েছে ছাড়ুন আমায়....
তিশা- কি পেয়েছে??
আমি- খুব চাপ পেয়েছে, এখন না ছাড়লে জামা কাপড় নষ্ট হয়ে যাবে।
তিশা- হলে হোক তাতে আমার কি??
আমি ছাড়ছি না।জামা কাপড় নষ্ট করলে করো।
আমি- প্লিজ ছাড়ুন আমায় আমি চাপ মুক্ত হয়ে আসি তারপর আবার না হয় আমাকে ধরবেন এইভাবে কেমন??
তিশা- সত্যি আবার জড়িয়ে ধরতে দিবা তো??
আমি- হ্যা দিবো আপনি যা চাইবেন তাই করবো কিন্তু এইবার ছাড়ুন নষ্ট করে ফেললাম।
এরপর তিশা আমাকে ছেড়ে দিলো।
আর আমাকে পাইকে আমি এক দৌড় দৌড়াতে দৌড়াতে বলতেছিলাম আমি আর আপনার নতুন কোনো নাটক দেখতে চাই না
আমি এখন বাসায় যাবো আপনি ভালো থাকবেন।
আর আমাকে বাচানোর জন্য ধন্যবাদ,,
তিশা কিছুক্ষন আমার পেছন পেছনে আসছিলো কিন্তু আমার সাথে দৌড়ে পেরে উঠে নাই।আমি আমার মত করে দৌড়াচ্চি তিশা ডাকছপ প্লিজ বাবু সোনা প্লিজ লক্ষিটি দাড়াও আমি যাবো তোমার বাসায় প্লিজ বাবু অই অনুর আব্বু দাড়াও।
আহা কি মধুর ডাক কিন্তু আমি তো থামবো না।
কত কথা শুনাইলো নাহ কারন তো জিজ্ঞাস করলাম নাহ এতো কথা কেনো শুনাইছিলো অহহ হ্যা আমি তিশাকে চরিত্রহীন বলেছিলাম,তার জন্য নাটক করেছে।তার মিথ্যা ভালোবাসার জালে আমাকে ফাসাতে চাচ্ছে কিন্তু আমি আর ফাসবো নাহ দোড়াতে দৌড়াতে একটা বাসে উঠলাম।বাসটা আমার পিছন থেকে এসেছিলো।
আমি উঠে দিখি তিশা বাসে আর আমার দিকে রাগি লুকে তাকিয়ে আছে।উফফ এখন কি করি এই মাইয়া এইখানে এলো কি করে।
আমি দাড়িয়ে আছি তখন তিশা এসে আমাকে টেনে বাসের ভেতর নিয়ে গেলো।
একদম পেছনের সিটে বসালো আর তিশা আমার পাশেই বসলো আমি জানতাম আমার ১২ টা বাজবে।
তিশা আমার পাশে বসে রাগি লুকে তাকিয়ে আছে আমি কিছু বলছি না শুধু ভাবছি এই মাইয়া আসলে চাই কি,,কিছু বলছি না শুধু রাগে ফুসছে।আমি দেখি একটা মেয়ে আমাদের দিকেই আসছে আমি হা করে তাকিয়ে আচি মেয়েটার দিকে।
তিশা আরো রেগে গেলো।
তিশা- অই তুই অই মেয়ের দিকে অমন ভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো?
আমি- না মানে একজন কে ভালোবেসে ছিলাম কিন্তু আজ জানতে পারলাম সে নাকি আমার সাথে নাটক করেছে। এখন আমার অন্য কাইকে ভালোবাসা দরকার। যে আমাকে সত্যি ভালোবাসবে আমার বউ হবে অনুর আম্মু হবে।
তিশা- একদম মেরে ফেলবো,,অন্য কারো দিকে নজর দিলে।আমি আছি কি করতে হা,আমি তোর বউ হবো তোর অনুর মা হবো।
আমু- মিথ্যা আর কত বলবেন বলেন তো আমি আর আপনাকে ভালোবাসিনা।
আমি এখন অন্য একজনকে ভালোবাসবো।
তিশা- কি বললি তুই( কান্নাকরতে করতে)
আমি- কিছু বলি নাই এখন আমি নামবো,রবি বলেছিলো অর গার্লফ্রেন্ড এর সাথে একটা মেয়ে থাকে সেটা নাকি সিংগেল দেখি আমি লাইন মারতে পারি নি।(১০০% মিথ্যা কথা)
এর পর তিশা আর কিছু বলেনাই শুধু কান্না করছিলো আর আমি বাস থেকে নেমে গেলাম বাসা বেশি দূরে না।তাই হাটা শুরু করলাম। বাসায় এসে খেয়ে দেয়ে শুয়ে পরলাম।
রাতে খেয়ে দেয়ে শুয়ে আছি তখন তিশা কল দিলো,আমি সাতে সাথে ধরলাম আর একটা মতলব ছিলো তাই।আমি ধরেই বলতে শুরু করলাম কি ব্যাপার নিলা এতোখন পর মনে পরলো,তুমি না তখন আমার সাথে কথা বললে আর বললে তোমার সাথে কথা না বললে কিছু ভালো লাগে না।তাহলে এতোখন পর ফোন দিলা নিলা সোনা আমার।
কাল তোমাকে নিয়ে ঘুরতে যাবো একটু তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে থাকবা ওপাশ থেকে কিছুটা হাল্কা কান্নার শব্দ শোনা যাচ্ছিল তারপর বললো আমি নিলা না আমি তিশা আর অই নিলা কে শুনি.....
আমি- সেটা আপনার না জানলেও চলবে কল কাটুন ইসস আমার জানুটা মনে হয় রাগ করবে ফোন ওয়েটিং পেলে।এই বলে কল কেটে দিলাম।
এখন কি করবো আমি জানি তিশা আবার কল দিবে তাই বুদ্ধি করে কাস্টমার কেয়ারে কল দিলাম একটু টাইম পাস করি।
ভাগ্যো ভালো ছিলো একটা মেয়ে কলটা ধরে বললো কিভাবে সাহায্য করতে পারি??
আমি- বিভিন্ন রকমের নেট অফার ইত্যাদি
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন