অভিনয়
পর্বঃ৫
মামুনের মধ্যে শুধু একটাই কথা ঘুরছে তিশার ছোয়ায় কেনো এমন মনে হচ্ছে অধরাকে তার সাথেই আছে আর এটা কেনো মনে হচ্ছ
সব কিছু ভাবতে ভাবতে তারা তাদের গন্তব্য এসে গেছে...মামুন রিক্সা থেকে নেমে ভাড়াটা দিয়ে হাটা শুরু করলো.আজ কয়েকবছর পর মামুন এই লেকের ধারে আসলো..মামুন আনমনে হাটছে..
তিশা পেছন পেছন হাটছে
তিশাঃএই তোমার হলো কি,,এখন একদম চুপ হয়ে গেছো যে?কিছু মনা পড়ছে নাকি??
মামুন কোনো উত্তর না এগুতে লাগলো..।
তিশা;আচ্ছা আমি কি তোমার হাত ধরে হাটতে পারি?
মামুন কোনো উত্তর দিলো না
তিশা মামুনের হাত ধরে নিলো
আজ কয়েকবছর পর সেই আগের ফিলিংস আসছে..
তিশার হাত আরো শক্ত করে চেপে ধরলো..
তারপর হাটতে শুরু করলো
জানো আজ অনেক দিন পর আমি আমার অধরাকে অনেক বেশি অনুভব করতে পাড়ছি..
হঠাৎ মামুন এই কথা বলে উঠলো..
মামুন কথা বলছে সেটা ভেবেই অধরা খুশিতে আত্নহারা হয়ে গেছে
তিশাঃমামুন তুমি কথা বলতে পারো??
মামুন;আমি কথা বলতে পাড়তাম না কবে?
আমি তো সারাক্ষণ আমার অধরার সাথে কথা বলতাম.. এখন মনে হচ্ছে তুমি অধরা তাই একাই বেড়িয়ে গেলো..
তিশাঃজানো আজ আমি কতখুশি??
মামুনঃএতো খুশি হবার কারণ কি?ম
তিশাঃএই যে তুমি কথা বলতে পাড়ছ।
মামুনঃজানো আমি আর অধরা এখানে প্রায়ই আসতাম ও আমাকে ছেড়ে চলে যাবার পর এখানে আর আসা হয়নি..আজ ওর কথা খুব মনে পড়ছে কতইই না পাগলি টাইপের ছিলো আমাকে কত ভালোবাসত..সবব সময় পাগলামি করতো..
তিশাঃওর পাগলামিতে তুমি খুব বিরক্ত হতে??
মামুনঃকোনো দিন বিরক্ত হয়নি বরং ও পাগলামি ছেড়ে দিলে আমার খারাপ লাগতো.
আল্লাহ ওকে তো নিয়ে নিলো কিন্তু আমাকে
চুপপপ একদম অই কথা বলবে না(তিশা)
মামুনঃকি করবো আমার ভালো লাগে না,,সবার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছি কেনো জানো যাতে করে কারো কোনো কথার উত্তর দিতে না হয়..
তিশা;তাহলে আজ কথা বলছ যে?
মামুনঃকি করবো আজ অধরাকে আরো বেশি করে মনে পড়ছিলো কিছুতেই আর চুপ থাকতে পাড়ছিলাম না..মনে হলো কথা বললে হালকা লাগবে।।
তিশাঃআচ্ছা আমরা কি এখানে দাঁড়িয়ে থাকবো নাকি কোথাও বসবো.
মামুনঃহ্যা চলো বসে কথা বলি..
তিশাঃহুম্ম চলো..
মামুন আর তিশা একটা বেঞ্চে বসলো..
জানো আমরা যখন এখানে ঘুরতে আসতাম এই বেঞ্চেই বেশি বসা হতো..আমাদের আসা যাওয়া ছিলো একটু বেশি সবাই আমাদের চিনত
এমন অনেক দিন হয়েছে অন্য কাপল গুলো আমাদের এই যায়গা ছেড়ে দিয়েছে..
মামুন যখন কথা বলছিলো তখন মামুন লক্ষ্য করলো তিশা পায়ের আঙুল দিয়ে চেপে ঘাস ছিড়ছিলো..
যেটা অধরা সব সময় করতো..
মামুনঃআরে কতবার বলেছি পায়ের আঙুল দিয়ে ঘাস ছিঁড়বে না পোকা মাকড় থাকতে পারে..
তিশাঃমানে তুমি আমাকে আবার কবে বললে আমি তো আজই তোমার সাথে এখানে ঘুরতে আসলাম...
মামুন;সরি আসলে অধরাও ঠিক এমনভাবে আঙুল দিয়ে চেপে ঘাস ছিঁড়ত তাই মনে পড়ে গেলো..আর কিছুক্ষনের জন্য আমার এটা মনে হলো অধরাই ঘাস ছিঁড়ছিল..
তিশাঃমামুন তুমি একটা সত্যি কথা বলবে?
মামুনঃহ্যা বলবো??
তিশাঃতোমরা তো একা ঘুরতে বের হয়েছিলে তাই না??
মামুনঃহ্যা আমি আর অধরা ঘুরতে বের হয়েছিলাম..
তিশাঃকোথাও এমন নাতো তুমি অধরাকে খুন করেছ??
মামুনঃকিহ খুন আরে আমি তো আমার অধরাকে কোনো দিন একটা থাপ্পড় পর্যন্ত দেইনি..
যতই দোষ করুক অনেক বকা দিতাম কিন্তু কোনো দিন আঘাত করেনি আর তাকে আমি খুন করবো
তিশা;তাহলে বলো না সেদিন আসলে কি ঘটেছিলো.?
মামুনঃসেদিন আমাদের শহরের বাইরে ঘুরতে যাবার কথা ছিলো..যখন শহরের বাইরে ঘুরতে গেলাম অধরা বললো ওর নাকি পাহাড়ি রাস্তায় ভ্রমণ করার খুব শখ.
আমি বলেছিলাম অন্য একদিনন ওকে নিয়ে ঘুরতে যাবো.কিন্তু অধরা কিছুতেই সেটা মানছিলো না তাই ওকে নিয়ে চলে গেলাম..
তবে একটা কিছু আমি লক্ষ্য করেছিলাম আমার চেনা অধরা আর সেদিনের অধরার মাঝে
একটু চেঞ্জ ছিলো..গালটা ফোলা ছিলো আর অধরা কখনো কপালে টিপ নিতো না কিন্তু সেদিন নিয়েছিলো..আমি জিজ্ঞাস করতে অধরা সেটা এড়িয়ে গিয়েছিলো।
পাহাড়ি রাস্তা ছিলো আর সেদিন বৃষ্টি হয়েছিলো গাড়ি চালাতে আমার খুব সমস্যা হচ্ছিলো একটু গিয়েই আমি ফিরে আসতে চেয়েছিলাম কিন্তু অধরা বললো আর যাবে..
গাড়ি চালাতে চালাতে যখন রাস্তায় বাক আসে যখন মোড় ঘুরতে যাই সামনে থেকে আরো একটা গাড়ি চলে আসে আর আমি সেটাকে সাইড দিতে গিয়ে নিচে পড়ে যাই আর তারপর বলেই মামুন কান্না করে দিলো..
তিশা মামুনের চোখের পানি মুছে দিয়ে বললোলো ধুর পাগল ছেলে এইভাবে কান্না করতে আছে একদম কান্না করবে না বলে দিলাম..
মামুনঃকিন্তু আমার জন্যই তো সব কিছু হয়েছে আমি দোষী..
তিশাঃনাহ এখানে তোমার কোনো দোষ নেই আল্লাহ চেয়েছে তাই ওকে তোমার কাছ থেকে নিয়ে নিয়েছে..
মামুন আবারো চুপ হয়ে গেলো..
তিশাঃচলো এখানে বসে থাকতে আর ভালো লাগছে না চলো ফুসকা খাবো..
মামুন তিশাকে নিয়ে ফুসকার দোকানে চলে গেলো./
তিশাঃমামা দুই প্লেট ফুসকা দাও একটায় বেশি টক দিবে আর একটা একদম টক দিবে না..?
মামুনঃএই তুমি জানলে কিভাবে আমি টক খায় না..এটা তো শুধু অধরা জানতো..
তিশাঃআমিও জানি যাকে ভালোবাসি তার সম্পর্কে না জানলে কিভাবে হবে??
এর মধ্যে ফুসকা চলে এসেছে..
কি হলো মামা ওর দিকে এমন করে কি দেখছ(তিশা)
ফুসকাওয়ালা:না সেদিনের পর থেকে আর দেখতে পায়নি..দুজন আসতো কত মজা করতো খেয়ে দেয়ে চলে যেত,,কিন্তু হঠাৎ কি যে হলো দুজনের কেও আর আসতো না..আজ অনেক দিন পর একজন আসছে কিন্তু অন্যজন আসেনি..
তিশাঃআরে মামা দুজনই আসছে আমি আর ও একসাথে আসছি দেখছ না..এখন তুমি যাও তো আমাদের একটু খেতে দাও.
মামুন প্লেট হাতে নিয়ে বসে আছে..
তিশাঃকি হলো খাচ্ছ না কেনো..
মামুনঃনা এমনি.
তিশাঃএই তোমার জিব্বায় কি জেনো দেখলাম একটু হা করো মামুন হা করার সাথে সাথে তিশা মামুনকে একটা ফুসকা খাইয়ে দিলো..হ্যা এটা শুধু অধরা করতো. না এটা ডাইরিতে লেখা হয়েছিলো না অন্য কাওকে বলা হয়েছিলো..
মামুনঃএই তুমি কে সত্যি করে বলবে?
তিশাঃআমি কে মানে আমি তোমার স্ত্রী..
মামুনঃতোমার আসল পরিচয় কি??
তিশাঃআমি তিশা..
মামুনঃতুমি কি করে জানলে অধরা যতক্ষণ পর্যন্ত আমাকে খাইয়ে না দিতো আমি খেতাম না..
তিশাঃধুর সেটা আমি কি করে জানবো আমার ইচ্ছা হলো তোমাকে খাইয়ে দিতে তাই দিলাম..
মামুনঃঅহহহহ(অনেকটা হতাশ হয়ে)
তারপর মামুন আর তিশা খেয়ে বিল দিয়ে সেখান থেকে চলে আসলো..
মামুনঃএকটা কথা বলি??
তিশাঃহুম বলো
মামুনঃজানো আজ আমার একমুহূর্তের জন্য মনে হয়েছিলো তুমি আমার সেই অধরা..
তিশাঃধুর আমি অধরা হতে যাবো কেনো?আমি তোমার তিশা
মামুনঃসরি অধরা ছাড়া অন্য কাওকে আমি মেনে নিতে পারবো না
তিশাঃমানতে তোমাকে হবেই আজ নাহয় কাল..
মামুন আর কিছু বললো না কথায় কথা বাড়বে..
তিশাঃএখন আমরা হেটে হেটে বাসায় যাবো./
মামুনঃমানে হেটে যেতে গেলে তো রাত হয়ে যাবে..
তিশাঃহলে হোক তাতে কোনো সমস্যা নেই..
রাতে ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে হাটার মজাই আলাদা..
মামুনঃকেনো এর আগে কোনো দিন কাওকে নিয়ে হেটেছ বুঝি??
তিশাঃনা তা নয় তবে অনুভব করতে পারি ভালোবাসার মানুষ পাশে থাকলে অন্য কোনো সুখ প্রয়োজন হয়না..!তাই আজ তোমাকে আমার সাথেই হাটতে হবে..
মামুন ভাবলো এতোদিন পর যখন ঘুরতে বের হয়েছে নাহয় হাটা যাক..
হেটে হেটে বাসায় দিকে রওনা দিয়েছে..
তিশা;আচ্ছা তুমি আব্বু আম্মুর সাথে কথা বলো না কেনো??
মামুনঃকি করবো বলো তাড়া আমার আপন হয়েও পরেও মত কাজ করেছে তাই তাদের সাথে কথা বলার সমস্ত ইচ্ছা আমার হাড়িয়ে গেছে
তিশাঃকি এমন করেছে যে তাদের সাথে কথা বলা যাবে না..
মামুনঃঅধরার সমস্ত কিছু তাড়া পুরিয়ে দিতে চাইছিলো জানো ওতে কত সৃতি মিশে ছিলো এখন সব আধা পোড়া..
তিশাঃতারা তো তোমার ভালোর জন্যই
মামুনঃভালো না ছাই আমার ভালো কাওকে দেখতে বলেছিলাম আমি..
তিশাঃএই তুমি রেগে যাচ্ছ কেনো স্বভাব পাল্টাবেনা তোমার অল্প একটু তেই রেগে যাওয়াটা..
মামুনঃরাগার মত কথা বললে রাগবো নাতো কি করবো
তিশাঃআচ্ছা বাবা রাগ করে থাকতে হবে না
তারপর নানান কথা বলতেতে বলতে তাড়া বাসায় চলে আসলো.।
নিচে কারো সাথে কোনো কথা না বলে মামুন উপরে ওর রুমে চলে গেলো..
তিশা আসল..
মামুনঃতোমাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ
তিশাঃকেনো ধন্যবাদ কেনো?
মামুনঃআজ অনেক দিন পর আগের সেই দিন উপহার দেওয়ার জন্য..
তিশাঃআরে এটা তো মাত্র শুরু( মনে মনে)
--------------------------------------------
https://banglalovestory247.blogspot.com/
tags:
Banglalovestory247, love story bangla, love story, নতুন রোমান্টিক লাভ স্টোরি, লাভ স্টোরি, রোমান্টিক লাভ স্টোরি বাংলা, ভালোবাসার গল্প, প্রেমের গল্প,নতুন ভালোবাসার গল্প, রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প, সেরা ভালোবাসার গল্প, প্রেমের গল্প ও কবিতা,
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন