সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

গোপনে বিয়ে ( ৮পর্ব)

 



গোপনে বিয়ে

৮ম পর্ব

নিতুল প্রথম আমার সাথে কথা বললো একেবারে বাড়ির কাছাকাছি এসে।সে মৃদু গলায় ডাকলো,'নাতাশা?'

আমার তখন কী যে ভালো লাগলো!কী যে ভালো!

আমি দ্রুত হেঁটে ওর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বললাম,'বলো। কী বলতে চাও বলো।'

নিতুল বললো,'তুমি আমায় ভালো বাসো তো না?'

আমি বেশ অবাক হলাম। অবাক হয়ে বললাম,'তোমায় ভালো না বাসলে কী আর এতো সব করতাম তোমার জন্য!'

নিতুল বললো,'অনেক কিছুই তো করেছো। এবার আরেকটা কাজ করো না প্লিজ!'

আমি বললাম,'বলো।'

বাড়ি ফিরে মা যদি তোমায় জিজ্ঞেস করে,'তুমি ফিরে এসেছো কেন?

তখন তুমি চুপ করে থাকবে।আর আমাদের  গোপন বিয়ের ব‍্যাপারটা আরো কদিন গোপন রাখবে। আমাদের বাবুটা হয়ে গেলে দেখবে  মা সবকিছু মেনে নিয়েছেন।এর আগে তোমার একটু আধটু খোঁচা শুনতেই হবে।শুনো, ভালোবাসার বিয়ে তো এমনই হয়!কেউ মানতে চায় না।কষ্ট করেই মানাতে হয়।'

ওর মুখ থেকে এমন কথা শুনবো আমি সত‍্যিই আশা করিনি। আমি আরো ভেবেছিলাম ও বুঝি বাড়িতে ওর মাকে ম‍্যানেজ করে আমায় আনতে গিয়েছে।আর এখন বলছে আমি যেন মানিয়ে নেই!আমায় বকাঝকা করলেও যেন চুপ থাকি!

আমি চুপ করে আছি দেখে নিতুল বললো,'পারবে না নাতাশা?'

আমি বড় কষ্ট নিয়ে বললাম,'পারবো। আমি পারবো।'


বাড়ি ফিরতেই আমার শাশুড়ি রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে উঠলেন। তিনি গলা ছেড়ে বললেন,'কোন সাহসে তুই আমার বাড়িতে আইসা উঠছস?'

আমি চুপ করে রইলাম।কথা বললাম না।

শাশুড়ি মা আবার বললেন,'বল।তোরে সাহস দিছে কেডা? বাইরে বাইরে নাগরের সাথে মেলামেশা কইরা আবার ফিরছস? কেন? পেটের ভিতর যে পাপ জন্মাইছস সেইটার লাইসেন্স টা আমার ছেলের নামে লাগাইতে চাস?'

আমার কান্না এসে যাচ্ছে।নিতুল কিছুই বলছে না।

এবার আমার শাশুড়ি মা বললেন,'বাইর হ।তোরে এই বাড়িতে আমি থাকতে দিবো না।তোরে আমার ছেলে ডিভোর্স দিবো।'

আমি নিতুলের দিকে অসহায় চোখে তাকালাম।নিতুল আমার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলো।

এবার আমার শাশুড়ি আমার কাছে এসে রাগে বললেন,'তোর কানে কথা যায় না।নাকি ঘাড় ধাক্কা দিয়ে তোরে বের করে দিবো?'

আমি তবুও চুপ করে রইলাম।

তিনি এবার বললেন,'আচ্ছা শোন,সমাধানে যাই। ঝামেলা করে লাভ নাই।বল,তোর এই পাপের বাপ কেডা বল।বাপের কাছেই তোরে দিয়া আসবো।'

আমি আর চুপ করে থাকতে পারলাম না।ফুস করে বলে দিলাম,'আপনার ছেলে নিতুল।নিতুল এই সন্তানের বাপ।'

আমার শাশুড়ি শুনে চমকে উঠলেন।আর বললেন,'বললেই হলো। বিয়ের হলো না চারদিন আর আমার ছেলে তোর তিন মাসের সন্তানের বাপ হয়ে গেল!'

আমি এবার বললাম,'আপনার ছেলের কাছেই জিজ্ঞেস করুন সন্তানের বাপ কে?'

আমার শাশুড়ি এবার নিতুলকে ডাকলেন। ডেকে বললেন,'নাতাশা কী বলতাছে এইসব? সন্তানের বাপ নাকি তুই?'

নিতুল চুপ করে রইলো।

আমার শাশুড়ি ওকে জোরে ধমকে উঠলেন।

নিতুল একেবারে কেঁপে উঠলো। তারপর বললো,'না আমি না।'

ওর মুখ থেকে নিজের সন্তানের নামে এমন মিথ্যাচার শুনে মাথাটা আমার ঘুরে গেল! আমি এবার নিজেকে সামলাতে না পেরে নিতুলের কলার টেনে ধরে ওর গালে দু দুটো চড় বসিয়ে দিয়ে বললাম,'তুই একটা কুকুরের চেয়েও খারাপ। তোর মতো কাপুরুষের সাথে আমি আর এক সেকেন্ডও নাই!'

বলে আমি ওর মুখে থুথু ছিটিয়ে দিয়ে বললাম,'আমার পেটের সন্তান শুধুই আমার একার। এই যে তুই অস্বীকার করেছিস এই সন্তান তোর না আমিও আজ বলছি এই সন্তান আসলেই তোর না। এই সন্তান আমার। কোনদিন এই সন্তান তোর বলে অধিকার কাটাতে যাবি না!'

নিতুল রাগে ফুঁসছে। কিন্তু আমার গায়ে হাত তুলতে পারছে না। কেন পারছে না কী জানি!

কিন্তু আমার শাশুড়ি বেশ দমে গিয়েছেন এখন।হয়তো তিনি ভাবতেই পারেননি একটা মেয়ে এভাবে হঠাৎ করে জ্বলে উঠতে পারে!

আমি এবার আমার শাশুড়ির কাছে গিয়ে বললাম,'এই যে আপনিও শুনেন, খুব তো আমারে বকাঝকা করলেন।বেশ‍্যা ডাইকা বাইরে রাইখা আসলেন। এখন আপনার ছেলের সম্পর্কেও দুইটা তথ্য শুনেন। আপনার ছেলের সাথে আমার সম্পর্ক ছিল চার বছরের। তারপর আমায় সে আরো দুই বছর আগে বিয়ে করেছে। কিন্তু আপনার ছেলে এতোই ভীতু যে এই বিয়ের কথা চিরতরে ঢেকে দিতে আবার পারিবারিক ভাবে বিয়ের আয়োজন করে। কিন্তু এখানেও কোন সমস্যা না। আমি আপনার ছেলেরে ভালোবাসি বলেই তার কথা মেনে সবকিছু গোপন রেখেছিলাম। কিন্তু এখন যেহেতু সে তার নিজের ঔরসের সন্তানকেই অস্বীকার করেছে তখন আর তাকে ভালো বাসার কোন প্রশ্নই আসে না। তার সাথে কোন সম্পর্ক রাখারই প্রশ্ন আসে না।'

এই কথা বলে আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে এলাম।

পেছন থেকে আমার শাশুড়ি হয়তো ডাকছিলেন তখন। কিন্তু আমি একবারও পেছনে ফিরে তাকালাম না। তাকানোর কোন প্রয়োজনও অনুভব করলাম না।



*********************************


https://banglalovestory247.blogspot.com/



মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

গল্প: ১০ দিনের বউ

গল্প: ১০ দিনের বউ সকালে দরজায় পত্রিকাওয়ালার ডাক শুনে ঘুম ভাঙলো.... ঘুম ঘুম চোখে ঘড়ির দিকে তাকালাম.... ৯:২৫ বাজে... OMG........সাড়ে ন'টা বেজে গেছে... তাড়াতাড়ি শরীরের উপর থেকে কাঁথাটা একপাশে ছুড়ে ফেলে দিয়ে বাথরুমের দিকে দৌড় দিলাম.... যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দাঁতে ব্রাশ ঘষাতে লাগলাম... চোখে মুখে জল দিলাম... অতঃপর ফ্রেস টেস হয়ে রুমে এলাম... একদিকে শার্ট প্যান্ট পড়ে রেডি হচ্ছি.. একইসাথে অন্যদিকে মুখে পাউরুটি ঢুকাচ্ছি... ভালো করে খাওয়ারও সময় নেই.. উফফ অনেক দেরি হয়ে গেছে... শেষে তাড়াতাড়ি মুখের পাউরুটিটা গিলে টাই টা হাতে নিয়েই তাড়াতাড়ি দরজা লক করে বেরিয়ে পড়লাম.. দ্রুত হাটা ধরলাম... ইসস বাইকটা Repair করাতে দিয়েছি.. নাহলে বাইক দিয়েই যাওয়া যেত.. যাই হোক এখন এসব না ভেবে তাড়াতাড়ি বড় রাস্তায় গিয়ে একটা রিকশায় উঠলাম.... রিক্সায় বসে বসে টাই টা বেধে নিলাম.... আজকে অনেকটাই দেরি হয়ে গেছে... ব্যাচেলর মানুষ.. ঢাকায় একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে জব করি.. একটা মেসে একাই থাকি.. সকাল সকাল যে কেউ ঘুম থেকে ডেকে তুলবে সেরকম কেউও তো নেই... যাই হোক, এখন এসব ভাবলে চলবে না.. আমাদের অফিসের বস এমন...

{গল্প: হেড মাষ্টারের দুষ্টু মেয়ে }

  গল্প: হেড মাষ্টারের দুষ্টু মেয়ে জে এস সি পাশ করে আজ নতুন একটা স্কুলে ভর্তি হলাম অবশ্য আগে বাবা মার সাথে থাকতাম এখন ভাইয়ার কাছে আসলাম কারন স্কুল টা কাছে তাই | তো আজ প্রথম স্কুলে গেলাম ক্লাসে ঢুকবো তখনি দেখি কে যানো আমাকে লেং মেরে ফেলে দিছে তখন থাপ্পর দিতে যাবো তখনি দেখি এটা আর কেও না একটা মেয়ে দেখছি হাসছে আর মেয়ে টাও অপূরুপ সুন্দর মনে হলে এক মায়াবতী দূর এই সব চিন্তা করে লাভ নাই তো দেখি মেয়েটা বলতেছে- মেয়ে: এই ছেলে চোখে দেখিস না ? আমি অবাক হয়ে গেলাম কার প্রশ্ন কাকে বলার কথা সে আমাকে বলতেছে তখন আমি বল্লাম- আমি: আজব তো আপনি তো আমাকে লেং মেরে ফেলে দিছেন ? মেয়ে: এই তুই দেখছিস আমি তোকে ফেলে দিছি ? আমি: না আল্লাহ তো আমাকে কানা বানিয়ে দুনিয়া পাঠাইছে কিছু তো দেখি না | দেখি আমার কথা শুন হাসতেছে পরে বল্লো----> মেয়ে: এই তোর সাহস তো কম না বড়দের সাথে এইভাবে কথা বলস ? আমি: বড় মানে আর আপনি এইভাবে তুই তোকারি ভাবে কথা বলতেছেন কেনো? মেয়ে: কি তোর কত্ত বড় সাহস আমার সাথে এরকম ভাবে কথা বলিস তুই আমাকে চিনিস আমি কে ? আমি: কেনো আপনি কি প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে নাকি যে ভালোভাবে কথা...

গল্প::অবশেষে ম্যামের প্রেমে পড়লাম

   Bangla Love story গল্প:: অবশেষে ম্যামের প্রেমে পড়লা আমি রনি অনার্স ফাইনাল ইয়ারে পড়ি। আমাদের কলেজের সব স্যারেরা আমাকে ভালো ভাবেই চেনেন। কারনটা হলো আমি কলেজের টপার।লেখাপড়ায় যেমন ভালো খেলাধুলায় ও তেমন ভালো।তাছাড়া কলেজের যে কোন অনুষ্ঠানেও আমাকে উপস্থাপনা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়।এমনকি আন্ত কেলেজ ক্রিকেট ও ক্যরাটি টুনামেন্টেও আমার জন্যে আমাদের কলেজ চাম্পিয়ন হয়েছে এবার।সব স্যারেরা আমাকে নিয়ে গর্ব করে। আর সারা কলেজের মেয়েরাতো আমার সাথে কথা বলার জন্য পাগল।তবে আমি কারও সাথে মানে মেয়েদের সাথে কথা বলি না। আমি সব বিষয়ে পারদর্শী হলেও একটা বিষয়ে অনেক পিছিয়ে আছি আর তা হলো মেয়েদের কে খুব ভয় পায়। কলেজে কোন মেয়ের সাথে কথা বলিনা যদিও মেয়েরা আমার সাথে কথা বলার জন্য আমার পিছনে পিপড়ার মতো লাইন দিয়ে থাকে সবসময়। ।।আমাদের কলেজের প্রিন্সিপালের মেয়ে নাম মোহনা,আজ আমাদের কলেজেই ইংরেজির টিচার হিসেবে জয়েন করবে।তাকে আজ বরণ করা হবে। সেই জন্য আমাদের কলেজ ক্যাম্পাসে আজ একটা মিলন মেলা বসেছে মানে কলেজের সকল ছাত্র-ছাত্রী এবং সার, আমরা সবাই ক্যাম্পাসে অধীর আগ্রহে বসে আছি কখন নতুন ম্যামকে বরন ...