সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

গল্প: রোমান্টিক-ভালোবাসা ৪র্থ পর্ব


 গল্প: রোমান্টিক-ভালোবাসা

 ৪র্থ পর্ব

- ভুত ভুত ভূত বলে মৃনাল আমাকে সোজা এসে জরিয়ে ধরলো!
- এই মৃনাল কি হয়েছে হুম? এমন করছো কেন?(আমি একটু শান্ত ভাবে)
- আমার ঘরে ভূত এসেছিলো ( মৃনাল আমাকে অনেক শক্ত করে জরিয় ধরে বলছে)
- আরে ভূত বলতে কিছু নেই। আর এভাবে আমাকে জরিয়ে ধরছো কেনো ছেড়ে দাও আমায়?
- না আমি ছাড়ব না। ছেড়ে দিলে ভূত টা আবার আমার কাছে আসবে।
- আরে বাবা এতো ভয় পাও কেনো? বলছি তো ভুত বলে কিছু হয়না!
-না আমি নিজের চোখে দেখেছি ওটা ভূত ই।
- উফফফফফ কি করে বোঝাব একে যে ভুত বলে কিচ্ছু নাই।
- আচ্ছা আমাকে ছেড়ে দাও এখন। যেভাবে জরিয়ে ধরেছো ব্যাথা লাগছে।
- ছেড়ে দিলে জদি ভূতটা আবার আসে!

- উফফফফ ওই তুমি ছেড়ে দিবা না তোমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিবো? (একটু রেগে বললাম)
আর তারপর আমাকে ছেরে দিলো। কি ছেলে রে বাবা এত্ত ভয় পায় কেনো ভূত বলে কিছু হয় নাকি। মনে হয়
খারাপ স্বপ্ন দেখেছে। আমাকে ছেড়ে দিয়ে আমার সামনে মাথা টা নিচু করে দাড়িয়ে
আছে মৃনাল । আর আমার এর এই অবস্থা দেখে আর হাসি আটকাতে পারলাম না। জোরেই হেসে ফেলেছি

- ওইইই এভাবে হাসছেন কেনো? আমার ভয় লাগছে! (মৃনাল)
- আচ্ছা এত্তবড় একটা ছেলে তুমি এমন ভয় করে নাকি।
- আসলে আমি একটু বেশি ভয় করি!
- তাই বলে অচেনা একটা মেয়েকে এভাবে শক্ত করে জরিয়ে ধরতে হবে?
- না মানে ইয়ে...সরি.....
- আচ্ছা ঠিক আছে। এবার গিয়ে ঘুমিয়ে পরুন?
- যদি আবার ভূতটা আসে।
- আরে ভূট বলতে কিছু হয় না।
- যদিইইইই আসে.....!

- আর একটা কথা বললে একদম
ভালো হবে না বলে দিলাম।( রেগে বললাম)
তারপর আমার কথা শুনে আবার ঘুমাতে গেলো আর আমিও আমার ঘরে চলে আসলাম। আর ঘরে এসে শুয়ে শুয়ে ভাবছি এমন ছেলে কখনও দেখিনি।
কিন্তু একটা কথা হলো আমাকে যখন ও জরিয়ে ধরেছিলো তখন আমার অন্য রকম একটা অনুভুতি কাজ করছিলো যা আপনাদের বোঝাতে পারব না । এই প্রথম বার কোন ছেল আমাকে এভাবে জরিয়ে ধরল। ইসসস বাপ্রে গা এখন ও ব্যাথা করছে। এতজোরে কেউ জরিয়ে ধরে।

আচ্ছা আমি এই ছেলের কথা এতো ভাবছি কেনো। আমি আবার ওর প্রেমে পড়ে গেলাম নাকি? না না এ হতে
পারে না। ধুর কিসব আজে বাজে কথা ভাবছি আমি। কিছুক্ষন পর মৃনাল আমার রুমে চলে আসল...
- কি ব্যাপার তোমাকে না বললাম যে ঘুমিয়ে পরতে আবার আমার রুমে এলে যে ?( আমি)
- আসোলে আমার না এখন ও খুব ভয় পাচ্ছে তাই এলাম। জদি কিছু মনে না করেন একটা কথা বলি? (মৃনাল)
- কি কথা ঝটপট বলে ফেলুন?
- আমি আজকের রাত টা আপনার এখানে থাকি?
- মানে? (অবাক হয়ে)

- প্লিজ প্লিজ প্লিজ খারাপ কিছু মনে করবেন না। আমি আপনার বিছানায় থাকব না ওই যে সোফাটায় গিয়ে ঘুমিয়ে পরব!
- আমি কি বলব কিছু বুঝতে পারছি না একটা ছেলেকে এভাবে আমার ঘরে থাকতে দেওয়া উচিত হবে!
- আচ্ছা ঠিক আছে। কিন্তু একটা কথা!
- কি
- যদি কিছু উল্টা পাল্টা মতলব থাকে
তাহলে কিন্তু.......!

তারপর একটা কম্বল দিলাম সোজা সোফাটায় গিয়ে শুয়ে পরল। মুখটা
আমার দিকে করে শুয়ে আছে। মনে হচ্ছে ঘুম গেছে। আমি ঘুমানোর চেস্টা করছি বাট ঘুম আসে না বার বার কম্বলের ভিতর থেকে মাথাটা
বের করে ওর মুখটা দেখছি! ছেলেটা আসোলেই অদ্ভুত। আর ঘুমন্ত চেহারায় ছেলেটাকে মনে হচ্ছে একটা কিউট এর
ডিব্বা। ওকে দেখতে দেখতে কখন যে ঘুমিয়ে পরেছি টের ই পাইনি
- এই যে ম্যাডাম উঠুন? (মৃনাল)

- কি হয়েছে কি এতো সকাল সকাল ডাকছো কেন? (আমি)
- সকাল এখন আর নেই ১০ টা বাজে!
- ও শীট ১০ টা বাজে নাস্তার তো এখন ও কিছুই করা হলো না!
- আপনাকে আর নাস্তা করা লাগবে না?
- নাস্তা করা লাগবেনা মানে তাইলে খাবো কি?
- আজকে আমি সকালে উঠে নাস্তা বানাইছি!
- তুমি নাস্তা বানাইছো মানে?তোমাকে কি একবারো বলছি নাস্তা বানাতে?
-........ (চুপ করে আছে কথা বলছেনা)
- আর কখন ও এমন কাজ করলে আমি মোটেও খুশি হব না মনে থাকে যেন? মৃনাল আর কিচ্ছু বলছে না। শুধু আমার কথা গুলো শুনলো।তারপর নাস্তার টেবিলে গিয়ে বসলাম।

- বাহ তুমি তো ভালই রান্না করতে পারো দেখছি? ( আমি)
-......? (চুপ করে খাচ্ছে কোন কথা বলছে না)
- এই যে মিস্টার রোমিও আপনাকে কিছু একটা বলেছি আমি?
- ওহ হ্যা কি কি বলেছেন আমায়?
- তোর মাথা?
- ওওওওও!
- চুপ। (ধমক দিয়ে বললাম্) নাস্তা খাও।

আবার চুপচাপ খেয়ে চলে গেলো আজ রুটি আর ভাজি বানাইছে। তা অনেক টেস্টিও হয়েছে। আর
ওর সবথেকে জে জিনিসটা ভালো লাগে সেটা হলো আমি জখন রেগে কথা বলি ও চুপটি করে
থাকে কোন কথা বলে না।তখন ওর মুখটা দেখলে কেমন জানি মজা লাগে। আজ অফ ডে আজ অফিস নাই। তাই ভাবছি কোথাও
ঘুরতে যাব কিন্তু কই জাবো। ধুর থাক না জাই ঘুরতে বাসায় থাকি আর ওই ছেলেটাকে আজ প্রচন্ড
জ্বালিয়ে ছাড়ব হুম। দেখলাম ও ছাদে গেলো তাই আমিও ছাদে গেলাম আর ছাদে গিয়ে যেটা দেখলাম সেটা
দেখে আমার মাথা পুরাই ঘুরে গেলো আমার লাগানো গাছটার সবথেকে সুন্দর ফুলটা ছিড়লো।

- ওই শয়তানের ডিম পাজি একটা? (আমি অনেক রেগেই বললাম)
- কি হলো এতো রেগে গেলেন ক্যানো?
- ওই তোকে কি আমি কখনও বলছি আমার লাগানো গাছের ফুল ছিঁড়তে?
- না মানে বলেননি। কিন্তু ফুলটা অনেক সুন্দর তাই ছিড়লাম!
- চুপ একদম চুপ। কি পেয়েছিস তুই। যা ভাববি তাই করবি আমার বাসায় থেকে আমার খেয়ে আমার উপর কথা বলিস।
- না মানে হয়েছে কি আসোলে আ... (পুরোটা শেষ না করেতেই)

- কি হয়েছে হুম কি হয়েছে? আমি কিছু বুঝিনা নাকি। তোমার সব মতলব আমি জানি হু।
- সরি না জেনে ছিড়ে ফেলেছি!
- সরি বললেই সব কিছু হয়ে জায় তাই না! সরি বললেই শেষ!
- না মানে....
- চুপ আর একটা কথাও বলবি না। (দেখলাম ওর চোখের কোনে জল জমে গেছে)
তারপর ছাদ থেকে চলে গেলো। মনে হয় আজ কে অনেক কস্ট
পেয়েছে। না এভাবে বলাটা ঠিক হয়নি। আসলে একটু রাগ দেখাতে গিয়ে এতটা রেগে গেছি জা বলার মত নয়। ছাদে বেশ কিছুক্ষন থাকলাম
তারপর নিচে গেলাম। রাতে আর আজ কে রান্নাই করলাম না। না খেয়ে শুয়ে পরলাম। আর ভাবছি আসোলেই এমন ব্যাবহার করাটা ঠিক হয়নি। সকাল বেলা ঘুম থেকে
উঠে প্রতিদিনের মতো আজও নাস্তা বানালাম আর মৃনাল আমি খেলাম। আমি অফিসে চলে গেলাম। কিন্তু আজকে বাসার গেইট এ তালা না মেরে চলে
গেলাম। সত্যি বলতে মৃনাল কে আমি ভালোবেসে ফেলেছি। কিভাবে ভালোবাসি তা বলতে পারিনা।
- কিরে আজ এতো খুশি খুশি লাগছে ব্যাপার টা কি? (পুজা)

- না রে কিছু না এমনি? (আমি)
- কিছু একটা তো হয়েছে তো কি খবর শুনি হুহহ?
- আসোলে পুজা আমি না ওই ছেলেটাকে ভালোবেসে ফেলেছি রে!
- কি বলিস এসব। তুই লুচুকে...
- চুপ একদম লুচু বলবি না!ও অনেক কিউট।
- হুম জানি জানি!
- কি জানিস?
- কই কিছু না তো!
- জানিস পুজা ছেলেটা না অনেক ভালো। কখন ও আমার সাথে খারাপ ব্যাবহার করেনি। আর ও অনেক অনেক কিউট।
- হুম তা বিয়ে টিয়ে করবি না?
- হুম করবই তো! আচ্ছা এখন এসব থাক। পরে বলব।

তারপর অফিস ছুটি হলো। আমিও বাসায় চলে আসলাম। আর বাসার ভিতর ঢুকে দুইবার মৃনাল বলে ডাক দিলাম। কিন্তু সারা পাচ্ছি না ব্যপারটা
কি কই গেলো। ওর ঘরে গেলাম আর গিয়ে দেখি ওখানেও নেই। আজব তো সব সময় তো বাসাতেই থাকে। কই গেলো আজ আমার চোখে
জল চলে এসেছে আমি ছাদে গেলাম ওখানেও পেলান না। আবার দৌড়ে বাসায় আসলাম আর আমার চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরছে। কিন্তু মৃনাল কোথাও নেই।
আর এসে টেবিলে দেখছি এটা চিঠি আর সেখানে লেখা,

...আপনাকে আর জ্বালাবো না।
. ইতি
............ মৃনাল
আমি চিঠিটা পরে আরো বেশি করে কেদে দিলাম। কাদতে কাদতে আমার
জামা ভিজে গেছে। আমি মৃনাল বলে চিতকার করে উঠলাম। তারপর
আমি ধপাস করে আবার মাথা ঘুরে পরে
অজ্ঞান হয়ে জাই............





মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

গল্প: ১০ দিনের বউ

গল্প: ১০ দিনের বউ সকালে দরজায় পত্রিকাওয়ালার ডাক শুনে ঘুম ভাঙলো.... ঘুম ঘুম চোখে ঘড়ির দিকে তাকালাম.... ৯:২৫ বাজে... OMG........সাড়ে ন'টা বেজে গেছে... তাড়াতাড়ি শরীরের উপর থেকে কাঁথাটা একপাশে ছুড়ে ফেলে দিয়ে বাথরুমের দিকে দৌড় দিলাম.... যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দাঁতে ব্রাশ ঘষাতে লাগলাম... চোখে মুখে জল দিলাম... অতঃপর ফ্রেস টেস হয়ে রুমে এলাম... একদিকে শার্ট প্যান্ট পড়ে রেডি হচ্ছি.. একইসাথে অন্যদিকে মুখে পাউরুটি ঢুকাচ্ছি... ভালো করে খাওয়ারও সময় নেই.. উফফ অনেক দেরি হয়ে গেছে... শেষে তাড়াতাড়ি মুখের পাউরুটিটা গিলে টাই টা হাতে নিয়েই তাড়াতাড়ি দরজা লক করে বেরিয়ে পড়লাম.. দ্রুত হাটা ধরলাম... ইসস বাইকটা Repair করাতে দিয়েছি.. নাহলে বাইক দিয়েই যাওয়া যেত.. যাই হোক এখন এসব না ভেবে তাড়াতাড়ি বড় রাস্তায় গিয়ে একটা রিকশায় উঠলাম.... রিক্সায় বসে বসে টাই টা বেধে নিলাম.... আজকে অনেকটাই দেরি হয়ে গেছে... ব্যাচেলর মানুষ.. ঢাকায় একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে জব করি.. একটা মেসে একাই থাকি.. সকাল সকাল যে কেউ ঘুম থেকে ডেকে তুলবে সেরকম কেউও তো নেই... যাই হোক, এখন এসব ভাবলে চলবে না.. আমাদের অফিসের বস এমন...

{গল্প: হেড মাষ্টারের দুষ্টু মেয়ে }

  গল্প: হেড মাষ্টারের দুষ্টু মেয়ে জে এস সি পাশ করে আজ নতুন একটা স্কুলে ভর্তি হলাম অবশ্য আগে বাবা মার সাথে থাকতাম এখন ভাইয়ার কাছে আসলাম কারন স্কুল টা কাছে তাই | তো আজ প্রথম স্কুলে গেলাম ক্লাসে ঢুকবো তখনি দেখি কে যানো আমাকে লেং মেরে ফেলে দিছে তখন থাপ্পর দিতে যাবো তখনি দেখি এটা আর কেও না একটা মেয়ে দেখছি হাসছে আর মেয়ে টাও অপূরুপ সুন্দর মনে হলে এক মায়াবতী দূর এই সব চিন্তা করে লাভ নাই তো দেখি মেয়েটা বলতেছে- মেয়ে: এই ছেলে চোখে দেখিস না ? আমি অবাক হয়ে গেলাম কার প্রশ্ন কাকে বলার কথা সে আমাকে বলতেছে তখন আমি বল্লাম- আমি: আজব তো আপনি তো আমাকে লেং মেরে ফেলে দিছেন ? মেয়ে: এই তুই দেখছিস আমি তোকে ফেলে দিছি ? আমি: না আল্লাহ তো আমাকে কানা বানিয়ে দুনিয়া পাঠাইছে কিছু তো দেখি না | দেখি আমার কথা শুন হাসতেছে পরে বল্লো----> মেয়ে: এই তোর সাহস তো কম না বড়দের সাথে এইভাবে কথা বলস ? আমি: বড় মানে আর আপনি এইভাবে তুই তোকারি ভাবে কথা বলতেছেন কেনো? মেয়ে: কি তোর কত্ত বড় সাহস আমার সাথে এরকম ভাবে কথা বলিস তুই আমাকে চিনিস আমি কে ? আমি: কেনো আপনি কি প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে নাকি যে ভালোভাবে কথা...

গল্প::অবশেষে ম্যামের প্রেমে পড়লাম

   Bangla Love story গল্প:: অবশেষে ম্যামের প্রেমে পড়লা আমি রনি অনার্স ফাইনাল ইয়ারে পড়ি। আমাদের কলেজের সব স্যারেরা আমাকে ভালো ভাবেই চেনেন। কারনটা হলো আমি কলেজের টপার।লেখাপড়ায় যেমন ভালো খেলাধুলায় ও তেমন ভালো।তাছাড়া কলেজের যে কোন অনুষ্ঠানেও আমাকে উপস্থাপনা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়।এমনকি আন্ত কেলেজ ক্রিকেট ও ক্যরাটি টুনামেন্টেও আমার জন্যে আমাদের কলেজ চাম্পিয়ন হয়েছে এবার।সব স্যারেরা আমাকে নিয়ে গর্ব করে। আর সারা কলেজের মেয়েরাতো আমার সাথে কথা বলার জন্য পাগল।তবে আমি কারও সাথে মানে মেয়েদের সাথে কথা বলি না। আমি সব বিষয়ে পারদর্শী হলেও একটা বিষয়ে অনেক পিছিয়ে আছি আর তা হলো মেয়েদের কে খুব ভয় পায়। কলেজে কোন মেয়ের সাথে কথা বলিনা যদিও মেয়েরা আমার সাথে কথা বলার জন্য আমার পিছনে পিপড়ার মতো লাইন দিয়ে থাকে সবসময়। ।।আমাদের কলেজের প্রিন্সিপালের মেয়ে নাম মোহনা,আজ আমাদের কলেজেই ইংরেজির টিচার হিসেবে জয়েন করবে।তাকে আজ বরণ করা হবে। সেই জন্য আমাদের কলেজ ক্যাম্পাসে আজ একটা মিলন মেলা বসেছে মানে কলেজের সকল ছাত্র-ছাত্রী এবং সার, আমরা সবাই ক্যাম্পাসে অধীর আগ্রহে বসে আছি কখন নতুন ম্যামকে বরন ...