অভিনয়
পর্ব:৭
তিশা আজ যে সুযোগ পেয়েছে সেই সুযোগ হাত ছাড়া করবে না..
মামুন বেচারা নিচে পড়ে আছে আর তিশা শক্ত করে মামুনকে চেপে ধরে রেখেছে
আস্তে আস্তে তিশা মুখ সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে..
তারপর কি হলো????
নাহ থাক কমু না শুধু এইটুকু বলি তিশার ঠোঁটে যে লিপস্টিক ছিলো সেটা মামুনকে খাইয়ে দিয়েছে..
তিশা তখনো মামুনের বুকের উপর শুয়ে আছে..
এমন সময় রাত্রী রুমে এসে এমন দৃশ্য দেখে বললো
অহহ সরি সরি ভুল সময় আমি ভুল যায়গাতে চলে এসেছি..
তিশা;ব্যাপার না তুমি যাও আর যাবার আগে দরজা আটকিয়ে দিয়ে যাবে যাতে করে আর কেও এসে না পড়ে..
রাত্রীঃআর কে আসবে আম্মু তো রান্নায় করছে..আর আব্বু বাইরে.আমিও যাচ্ছি তোমরা চালিয়ে যাও./
রাত্রী চলে গেলো..
মামুনঃতিশা এইসব কি হচ্ছে??
তিশাঃকি হচ্ছে তুমি বুঝতে পাড়ছ না..আমি আমার জামাইকে আদর করে দিচ্ছি..
মামুনঃতাই বলে অমন পচা মার্কা লিপস্টিক তুমি আমাকে খাইয়ে দিবে।।এর আগে না আমি তোমাকে বলেছিলাম তুমি লিপস্টিক এর ফ্লেবার চেঞ্জ করো
কিন্তু _____________
মামুন তিশাকে ধাক্কা দিয়ে সড়িয়ে বললো
এই তুমি এই লিপস্টিক কবে থেকে নাও?
তিশাঃকেনো এটা তো আমি প্রথম থেকেই নিয়ে থাকি...
মামুনের কেমন জানি খটকা লাগলো..
কারণ অধরা এটা ফ্লেবার খুব বেশি পছন্দ করতো
এর আগে একদিন মামুন খুব বেশি রাগ করে ছিলো
অধরা কোনো উপায় না পেয়ে এমনভাবে জোর করেই লিপস্টিক খাইয়ে দিছিলো
আজ যখন তিশা সেম কাজ করছিলো মামুন সেই দিনের ঘটনাকে অনুভব করছিলো তাইতো আর বাধা দিতে পারেনি..
তিশাঃকি হলো অমন করে তুমি কি ভাবছ??
মামুনঃকিছু না তবে এটা ভাবছি বিয়ের পর তো শশুড় বাড়ি গেলাম না তাই আমার শশুর বাড়ি যাবো
শ শ শশুড় বাড়ি হঠাৎ??
মামুনঃতুমি অমনভাবে তোলাচ্ছ কেনো??
তিশাঃকই কিছু না আজ না গেলে হয়না??
মামুনঃনা হয়না আমরা আজ এক্ষুনী যাবো..
তিশাঃতাহলে কাল
সকালে যাই..আজ তো অনেক রাত হয়ে গেছে
মামুনঃএইই আমি এতো কিছু শুনতে চাই না আমি আজই যাবো..
মামুনের সন্দেহ আরো বেড়ে গেলো..
মামুনঃযদি আজ না যাও তাহলে কিন্তু আমি তোমাকে ছেড়ে চলে যাবো..
তিশা মামুনের কাছে গিয়ে বললো
অই একবার যেতে দিয়েছি বলে তুমি কি ভাবছ বারবার যেতে দিবো??
মামুনঃঠিক বুঝলাম না..একবার মানে কবে আবার আমাকে যেতে দিছিলা??
তিশাঃকই আমি এইকথা কখন বলছি??
মামুনঃআমি এতো কথা শুনতে চাই না আমি আজ তোমাদের বাসায় যাবো..
তিশাঃআচ্ছা আমরা আজকেই যাবো..তবে তুমি এখানে একটু দাড়াও আমি আব্বু আম্মুকে একটু ফোন করে নেই..
তিশা ফোন করতে বাইরে চলে গেলো..
কতক্ষণ পর এসে বললো আব্বু আম্মু তো বাসায় নেই..
মামুনঃতাহলে কোথায় গেছে??
তিশাঃআব্বু আম্মু নাকি আমার নানু বাড়ি গেছে বাসায় মামা আর মামিকে রেখে গেছে..
আমিঃআচ্ছা চলো তাও আমি তোমাদের বাসায় যাবো..
তিশা জামা কাপড় গুছিয়ে মামুনের জামা কাপড় গুছিয়ে নিলো..
তারপর সেই রাতেই তাড়া বেড়িয়ে গেল
তিশা নিজেই গাড়ি ড্রাইভ করছে..
মামুনঃএই তিশা তুমি এইদিকে কই যাচ্ছ..তোমাদের বাসা তো অন্যরাস্তায়..
তিশা;আরে না ওটা তো ভাড়া করা বাসা ছিলো আমাদের নিজেদের বাসায়য় এই রাস্তা দিয়েই যেতে হয়..
গাড়ি যত এগুচ্ছে মামুনের বুকে ধুকপুকানি ততবেশি বৃদ্ধি পাচ্ছিলো..
কারণ এই রাস্তা দিয়ে অধরাদের বাসায় যাওয়ার রাস্তা তাহলে কি মামুন যেটা ভাবছে সেটাই..
একসময় সেই চিরোচেনা বাসার সামনে গাড়ি এসে থামলো..
মামুনঃএটা কাদের বাসা?
তিশাঃআগে আমার মামার ছিলো কিন্তু মামা সবব কিছু আমাদের কাছে বিক্রি করে লন্ডন চলে গিয়েছিলো..আবার কিছুদিনের জন্য আসছে কিছুদিন পর আবার চলে যাবে..
মামুনঃঅহহহ অনেকটা নিরাশ হয়ে..তবে তিশা অধরার আত্নীয় এটা কখনো তিশা বললো না কেনো??
তিশা আগে আগে যাচ্ছে মামুন পেছনে পেছনে যাচ্ছে সবাই যেহেতু
ওদের ব্যাপারে জানতো সেহেতু এই বাসায় অনেকবার আসা হয়েছে..বাসাটা আগের মতই আছে
তিশা কলিংবেল চাপ দিলো কিছুক্ষণ পর দরজা খুলে গেলো..
তিশা ভিতরে চলে গেলো..কিন্তু মামুনের জুতার ফিতা যে খুলে গেছে আর মামুন সেটা বাধায় ব্যাস্ত তিশা সেটা খেয়ালল করলো না..
হঠাৎ ভেতর থেকে আওয়াজ এলো অধরা তোরা এসে গেছিস..অধদা মামুন দৌড়ে ভেতরে চলে গেলো যাবার পর আরেক দফায় অবাক হবার পালা..
অধরার আম্মু এখানে কেনো..
অধরার আম্মুঃআরে মামুন তুমি কেমন আছ বাবা??
মামুনঃআমি কেমন আছি সেটা পরে বলছি আগে বলুন এখানে একটু আগে অধরার নাম ধরে ডাকা হয়েছিলো..
তিশাঃআরে হ্যা আসলে আম্মি আমাকে অধরা বলেই ডাকে ওনার মেয়ে গাড়ি একসিডেন্টে মারা যায়..
মামুনঃআন্টি আমাকে মাফ করে দিবেন আমার জন্যই আর বলতে না পেরে মামুন কান্নায় ভেঙে পরে..
অধরার আম্মু তখন মামুনের কাছে গিয়ে বলে কাঁদছ কেন..আর আগে তো আমাকে মা বলতে...এখন আন্টি বলে আমাকে পর করে দিচ্ছ??
মামুনঃআগে যার জন্য মা বলতাম সেই তো আর নেই..
অধরার আম্মুঃতো কি হয়েছে আমার এই মেয়েকে তো বিয়ে করেছ আর তাই তুমি এখনো আমাকে মা বলে ডাকবে..ডাকো মা বলে ডাকো.
মামুন্ঃমা আমি না সত্যি সেদিন বুঝতে পারিনাই এতো কিছু হয়ে যাবে..আপনাদের সাথে যে কথা বললো সেই সুযোগ টাও আমি পাইনি..হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাবার পর আমি আপনাদের বাসায় আসি কিন্ত্য জানতে পারি সবাই নাকি দেশ ছেড়ে চলে গেছেন কোথায় গেছেন সেটাও জানিনা।।
অধরার আম্মুঃআরে এমনভাবে বাচ্চাদের মত কাঁদছ কেনো?আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন..এমনিও আমার মেয়ে এই বলেই থেমে গেলো..
মামুনঃআপনার মেয়ে কি আম্মু??
অধরা আম্মুঃকিছু না যাও উপরে যাও অনেক রাত হয়ে গেছে আজ আর কথা নয় কাল কথা হবে
আর তিশা তুই অখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেনো যা মামুনকে নিয়ে উপরে চলে যা
তিশা মামুনের হাত ধরে মামুনকে উপর নিয়ে গেলো..
তিশাঃএই তুমি সব সময় এতো বেশি কান্না করো কেন??
মামুনঃকাওকে কখনো ভালোবেসেছ?
তিশাঃহুম বেসেছি তো
মামুনঃতাকে ছাড়া থাকা কত কষ্টের সেটাটা বুঝতে পারো
তিশাঃতাকে ছাড়া থাকা কষ্টের কিন্তু আমি তো তাকে ছাড়া থাকবো না এই যে তোমাকে সব সময় আমার কাছেই বেধে রাখবো
মামুনঃআচ্ছা তুমি যাও ফ্রেশ হয়ে আসো আমাকে একটু একা থাকতে দাও..
তিশাঃআচ্ছা তুমি এখনে বস আমি ফ্রেশ হয়ে আসছে..
তিশা যখন যাচ্ছিলো তখন মামুন খেয়াল করে দেখলো তিশার পিঠে একটা তিল আর তিল টা অন্যান্য তিলের থেকে একটু বড় যেটা অধরার পিঠে ছিলো এইবার মামুনের পুরোপুরি সন্দেহ হলো এটাই অধরা
কোনো ভাবে শুধু মুখের গঠন চেঞ্জ করেছে..
আজ একটা সমাধানে আসা যাক আর একেবারে সিউর হবার জন্য মামুন একটা প্লান বানালো
তিশা ফ্রেশ হয়ে বের হবার পর বললো
মামুনঃতিশা তোমাকে একটা রিকুয়েস্ট করবো রাখবে??
তিশাঃঅবশ্যাই রাখবো বলো কি..
মামুনঃহাতা ছাড়া তোমার কোনো জামা আছে??
তিশাঃহ্যা আছে কিন্তু কেনো??
মামুন সেটা পরে এখন আমার সামনে একটু আসবে প্লিজ..
তিশাঃমনে হচ্ছে আজ আমার বরটার রোমান্স করার শখ জাগছে ওকে তুমি একটু অপেক্ষা করো আমি এক্ষুনি পড়ে আসছি
কিছুক্ষণ পর
তিশা হাতা ছাড়া জামা পরে মামুনের সামনে এসে দাঁড়ালো
তিশাঃএই যে আমি চলে এসেছি
মামুন তিশার বা হাতে লক্ষ্য করলো আর যেটা ভেবেছিলো সেটাই সুন্দর করে লেখা আছেA+M
মামুন তিশাকে জড়িয়ে ধরে বললো তুমি আমার অধরা হ্যা তুমি আমার অধরা..
তিশাঃআরে তুমি কি পাগল হয়ে গেলে নাকি??
আমি কেনো তোমার অধরা হতে যাবো আমি তিশা
মামুনঃমিথ্যা বলবে না তুমি?অধরার সাথে ঝগড়া হবার পর অধরা এমনভাবে লিখেছিলো আর তোমার পিঠে যেখানে তিল সেখানে অধরার তিল ছিলো..
তিশাঃতো কি হয়ছে??
মামুনঃতুমি আমার অধরা..
তিশাঃদেখো মামুন এতো পাগলামি ভালো লাগে না
হ্যা হয়তো কাকতালীয়
মিলে গেছে তার মানে এটা নয় আমি তোমারর অধরা..আর আমি হাত কেটে A+M লেখেছিলাম ফ্রেন্ডের সাথে বাজি ধরে..
মামুনন এইবার অধরাকে ঝাকি দিয়ে বলতে লাগলো আমি মানিনা এইসসব আমি তুমি আমার অধরা তুমি
ঠাসসস ঠাসসস
তিশা দুইটা চড় বসিয়ে দিয়ে বললো আর কতবার বলবো আমি তোমার অধরা নয়...এতোই যদি অধরাকে ভালোবাস তাহলস সেদিন অধিরার সাথে মরে কেনো গেলেনা...
তিশার কাছে এমন কথা শুনে মামুন একদম চুপ হয়ে গেলো
--------------------------------------------
https://banglalovestory247.blogspot.com/
tags:
Banglalovestory247, love story bangla, love story, নতুন রোমান্টিক লাভ স্টোরি, লাভ স্টোরি, রোমান্টিক লাভ স্টোরি বাংলা, ভালোবাসার গল্প, প্রেমের গল্প,নতুন ভালোবাসার গল্প, রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প, সেরা ভালোবাসার গল্প, প্রেমের গল্প ও কবিতা,
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন