অভিনয়
পর্বঃ৯
মামুনের কথা শুনে তিশা মামুনকে ছেড়ে দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে চলে গেলো...
তিশার এমন ব্যাবহারে মামুনের সন্দেহ আরো বেড়ে গেলো..
আর অধরা আর মামুন যেইই কথা জানতো সেই কথা তিশা জানলো কিভাবে সেটা ভাবার বিষয়..
এটাই অধরা হ্যা এটাই অধরা তবে আমার কাছ থেকে লুকিয়ে থাকছে নাকি লুকিয়ে থাকার পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে??..
নাহ এইবার আমাকে আরো বড় প্লান করতে হবে যদি এটা অধরা হয় তাহলে ও নিজেই স্বীকার যাবে ও অধরা....
মামুন নিচে চলে গেলো..
দেখে তিশা অধরার আম্মুর সাথে বসে কি জানি গল্প করছে..
মামুনকে দেখে অধরার আম্মু বললো
মামুন তুমি কিন্ত্ আমার মেয়ের সাথে এটা একদম ঠিক করোনি..
মামুনঃআপনার মেয়ে মানে কার সাথে??
আম্মুঃতিশা আমার মেয়েই তো তুমি ওকে কাঁদিয়ে ঠিক করোনি.
মামুনঃআমি কি ভাবে ওকে কাঁদালাম??
আম্মুঃতুমি আরোহীর বাসায় কেনো গিয়েছিলে??
মামুনঃআম্মু অধরা আমাকে বলেছিলো আল্লাহ না করুক যদি অধরার কোন দিন কিছু হয়ে যাই
তখন তো আমি একা হয়ে যাবো..
কিন্তু আমি যদি এমন কাওকে খুঁজে পাই যে আমাকে অধরার মত করেই ভালোবাসে তার সাথে রিলেশন করতে..!
নাহ আম্মু আমি কোনো দিন ওকে এই-----_---
মামুনঃকি হলো থেমে গেলে কেনো??আর হুম আমি এমন কাওকে খুঁজে পেয়েছি তাই আমি তার সাথেই রিলেশন করবো অধরাকে দেওয়া কথা আমি ফেলতে পারবো না
অধরার আম্মুঃতার মানে কি মামুন তুমি কি এখন তিশাকে ছেড়ে অন্য কারো সাথে রিলেশন করবে নাকি??
মামুনঃদেখুন মা অধরাকে আমি নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসতাম ও চলে যাবার পর আমি অন্য কাওকে খুঁজে দেখিনি
কিন্তু কাল যখন আরোহীর বাসায় গেলাম আমি বুঝতে পাড়লাম আরোহী আমাকে অধরার মতই ভালোবাসে তাই আমি আরোহীরর সাথে রিলেশন করে অধরাকে দেওয়া কথা রাখতে চাই..
খেয়াল করে দেখলাম তিশা আমার দিকে কেমন করে যেনো তাকিয়ে আছে
চলে গেলাম..কতক্ষণ পর তিশা আসলো..
তিশাঃমামুন তুমি একটু আগে যা বলছিলে সব কি সত্যি(নাক টানতে টানতে)আমি অন্যদিকে তাকিয়ে ছিলাম।।তবে বুঝতে পাড়ছিলাম তিশা কান্না করছে..
মামুনঃহ্যা যা বলেছি সব সত্যি...
তিশাঃতাহলে সেটা আমাকে আগে বলতে..
মামুনঃআমাকে বলার সুযোগ দিলে তো বলবো
তিশাঃতুমি আরোহী সাথে রিলেশন করতে পারবে না..
মামুনঃতাহলে তুমি স্বীকার করো তুমি আমার অধরা..!
তিশাঃমামুন আমি যে নয় সেটা কেনো স্বীকার করবো?
মামুনঃআমি জানি তুমি আমার অধরা..
তিশাঃতুমি ভুল জানো..
মামুনঃতার মানে তুমি আমার অধরা না তাই তো??
তিশাঃহ্যা ঠিক তাইই আমি তিশা..
মামুনঃতাহলে তোমার কথা রাখতে পাড়লাম না সরি..
তিশাঃকেনো রাখতে কেনো পাড়বে না??
মামুনঃকারণ আমি অধরাকে কথা দিয়েছিলাম যে..
তিশাঃমিথ্যা বলবা না তুমি এই রকম কোনো কথা দাওনি
মামুনঃসেটা তুমি জানবে কিভাবে?আমি অধরার কাছে কোনো কথা দিয়েছিলাম কিনা?
তিশাঃকারণ আমিই--
মামুনঃতুমি কি??
তিশাঃআমি তোমার বউ...
মামুনঃহুম বউ তো কি হয়েছে?
তিশাঃতাই তুমি আরোহীর সাথে কোনো প্রকার রিলেশন করতে পারবে না
মামুনঃসেটা আমি বুঝে নিবো..
তিশাঃঅই আমি যেটা বলছি কান দিয়ে যাচ্ছে না নাকি?ভালো ভাবে বলছি নাই হজম হচ্ছে না আমি থাকতে আবার অন্য মেয়ের সাথে রিলেশন একদম মেরে ফেলবো./
মামুনঃহুম মেরে ফেলো তাও আমি অধরার কাছে তাড়াতাড়ি যেতে পারবো..
তিশাঃনাহ মারবো না ওটাও একটা ডাইনি ওর জন্য এখনো আমি আমার স্বামীরর ভালোবাসা পায়নি..
মামুনঃএই বেলা অনেক হয়ে গেছে আমার ক্ষুধা লাগছে..
তিশাঃতুমি না ওখান থেকে খেয়ে আসলে??
মামুনঃখেতে দিলে তো খাবো..মাত্র তো খেতে বসেছিলাম আর তুমি আমাকে নিয়ে আসলে..
তিশাঃবেশ করেছি আমি থাকতে কেনো তুমি ওর হাতের রান্না খাবে??
মামুনঃআমার ইচ্ছা হয়েছে তাই খেয়েছি..
তিশাঃগুল্লি মারি তোর ইচ্ছার নিচে চল খেতে
আমি একটা ভিলেনি হাসি দিয়ে আবার দিচ্ছি..
মামুনঃএহহ এমনভাবে বললে আমি যাবো না..জানো আরোহী আমাকে কত সুন্দর ভাবে খেতে ডাকছিলো..
তিশাঃকিভাবে ডাকছিলো??
মামুনঃআমি ঘুমে ছিলাম আরোহী আসলো এসে আমাকে ডাকলো এই শুনছ তোমার জন্য কত কিছু রান্না করেছি খাবে চলো..
আমার কথা শুনে ডুম করে আমার নাকে একটা ঘুষি দিলো..
আওওওওও
তিশাঃসরি সরি আমি তোমাকে মারতে চাইনি.. তোমার কথা শুনে আমার আরোহীর উপর রাগ হয়ছিলো তাই ভাবছিলাম তুমি আরোহী..
মামুন;উহহ কি ব্যাথা;;;;;
তিশাঃচলো চলো নাকে বরফ ধরবো..
মামুনঃলাগবে না আমার মেরে এখন আসছে আদর করতে.?
তিশাঃসরি বাবু আমি ইচ্ছা করে দেইনি চলো না..
এই চল
বলেই জোর করে নিয়ে গেলো।।তারপর যখন বরফ ধরছিলো তখন অধরার আম্মু এসে বললো কিরে ওর নাকে কি হয়েছে??
তিশাঃআর বলো না জামাই আদর করতে গিয়ে একটু বেশি হয়ে গেছে তো তাই এখন বরফ ধরতে হচ্ছে..!
তোমার জামাই এতো দুষ্টু যে আদর বেশি পেতে চাই ছিলো যার ফলে এখন এই অবস্থা...
তারপর
এই চলো আর নাক ধরে বসে থাকতে হবে না খাবে চলো..
মামুনঃনাহ আমি খাবো না আমাকে মারলে কেনো?
তিশাঃতুমি অই কথাটা আমাকে বললে কেনো??
মামুন;আমি তো সত্যি বলছি..
তিশা;তাই মেরেছি চলো খাবে চলো..
মামুনঃতোমার জন্য একটা শাস্তি আছে যদি সেটা মাথা পেতে নাও তাহলে খেতে পারি..
তিশাঃহুম বলো কি শাস্তি??
মামুনঃআমাকে খাইয়ে দিতে হবে বলো দিবে??
তিশাঃএটা কোনো শাস্তি হলো এটা তো আমার জন্য খুশির বিষয়.??
চলো তোমাকে আজ আমি নিজের হাতে খাইয়ে দিবো..
কয়েকদিন পরর
মামুন অনেকভাবে চেষ্টা করেছে কিন্তু কোনোভাবেই তিশার মুখ দিয়ে এটা বলাতে পাড়ছে না যে ওই অধরা..
তবে মামুনো হাল ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নয়..
বাইরে থেকে ঘুরে এসে মামুন রুমে প্রবেশ করলো..তবে আসার আগে সিগারেট আর মদের বোতল নিয়ে এসেছি অধরা একদম এইগুলো সহ্য করতে পারে না।
তিশা রুমেই ছিলো..
মামুনের হাতে এইসব কিছু দেখে
তিশাঃএই তুই এইসবব বাসায় কেনো এনেছিস??
মামুনঃজানো অধরা এইগুলো খুব পছন্দ করতো আমি আর অধরা একসাথে বসে খুব খেতাম..
অধরা তো ফুর ফুর করে সিগারেট টানতো..?
তিশাঃদাও আমিও টানবো..
তিশার কথা শুনে এই প্রথম মামুন কিছুটা অবাক হয়ে গেলো আর মনে হলো এটা অধরা না..
কারণ অধরা সিগারেটের ধোয়াই সহ্য করতে পারতো না সেখানে নাকি সিগারেট টানবে.
মামুনঃমানে তুমি সিগারেট খাবে??
তিশাঃহুম খাবো আমি দাও ফুর ফুর করে টানবো./
মামুনঃএই নাও..
তিশাঃদাও অই মদের বোতল টাও আমার হাতে দাও...
মামুনঃকেনো মদের বোতল দিয়ে তুমি কি করবে??
তিশাঃঢক ঢক করে গিলবো দাও আমাকে আমি খেয়ে আবার তোমাকে দিয়ে দিচ্ছি.
মামুনঃএই নাও বেশি খাবে না কিন্তু আমার জন্য রেখে দিবে এই বলে মামুন তিশার হাতে মদের বোতল আর সিগারেটের প্যাকেট ধরিয়ে দিলো..
মদের বোতল হাতে নিয়েই তিশা দিলো সেটাকে ফ্লোরে ছুড়ে..সাথে সাথে সেটা ভেঙে চুরচুর হয়ে গেলো...
তিশাঃকি ভেবেছিলে চান্দু আমি তোমাকে মদ খেতে দিবো..আর আমি নিজেও খাবো নাও এখন ফ্লোর থেকে উঠিয়ে নিয়ে খেয়ে নাও..
আর এই সিগারেটের প্যাকেট এখন আমি জানালা দিয়ে ফেলে দিবো.এই বলেই তিশা জানালার দিকে যেতে লাগলো মামুন তিশাকে ধরতে যাবে ঠিক সেই সময় ভাঙা কাচের টুকরা মামুনের পায়ে বিধে গেল..
আর সাথে সাথে মামুন চিৎকার দিয়ে বিছানায় গিয়ে বসে পড়ল..
তিশাঃপেছন ফিরে দেখে মামুনের পা দিয়ে সমানে রক্ত বের হয়েই যাচ্ছে..
তিশা সিগারেটের প্যাকেট ফেলে দিয়ে মামুনের কাছে এসেই প্রথমে কাছের টুকরাটাকে বের করে নিলো তারপর চেপে ধরলো যাতে করে আর রক্ত বের না হয়.
মামুনঃএই তুমি আমার পা ধরেছ কেনো??
তিশাঃকোনো কথা বলবা না..(কান্না করতে করতে)
মামুনঃআরে বাচ্চাদের মত কাঁদছ কেনো?
তিশাঃকথা বলতে না করছি তো নাকি
মামুনঃপ্লিজ কাঁদবে না..
তিশাঃকেনো কাঁদবো না কেনো?
আর অধরা কাঁদলে তোমার কষ্ট হতো..
আমি কাঁদছি তাতে তোমার কি??
মামুনঃকেনো জানি আমার এখনো কষ্ট হচ্ছে..
তিশাঃসরি বাবু আমার জন্যি..
মামুনঃতোমার কোনো দোষ নেই..আমি তো মদের বোতল এনেছিলাম..
তিশাঃতবুও আমি যদি না ভেঙে কোথাও রেখে দিতাম..
মামুনঃআমার দিকে একটু তাকাও তো??
তিশা মামুনের দিকে তাকালো..
হ্যা ঠিক ধরেছে অধরা অল্প একটু কান্না করলে যেমন চোখ লাল হয়ে যেতো তিশারো সেটাই হয়েছে..
মামুনঃএই দেখেছ কেঁদে চোখ লাল করে ফেলেছ
কান্না থামাও প্লিজ
--------------------------------------------
https://banglalovestory247.blogspot.com/
tags:
Banglalovestory247, love story bangla, love story, নতুন রোমান্টিক লাভ স্টোরি, লাভ স্টোরি, রোমান্টিক লাভ স্টোরি বাংলা, ভালোবাসার গল্প, প্রেমের গল্প,নতুন ভালোবাসার গল্প, রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প, সেরা ভালোবাসার গল্প, প্রেমের গল্প ও কবিতা,
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন