জীবনের ভালোবাসা
পর্ব ২য়
কিছুদিন যাওয়ার পর হঠাৎ একদিন রাতে আমার চাচার বাড়িতে শুতে গেছি।(বাড়িতে সেদিন কেউ ছিলো না।)আমি আর আমার চাচাতো বোন শুয়ে আছি দেখি ওর ফোনে কল এলো।
ও অনেক্ষন কথাও বললো।কথাগুলো শুনে মনে হলো দুজন দুজনের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে।কথা বলা শেষ হলে ও ফোনটা মাথার কাছে রেখে ঘুমিয়ে পড়লো।আমার ঘুম আসতেছিলো না তাই আমি সাপ খেলার জন্য ফোনটা নিলাম। কিছুক্ষণ খেললাম ও।হঠাৎ ই আমার কৌতুহল হলো নম্বরটা দেখার জন্য।রিসিভ কলে গিয়ে নাম্বার দেখে আমি রিতিমতো অবাক হয়ে গেছি....এইটা কি করে সম্ভব? এইটা তো রাজের নাম্বার,
নাম্বার দেখার সাথে সাথে চোখ থেকে জল পড়ছে।আটকাতে চেয়েও যেনো আটকাতে পারছি না।মনে হচ্ছে খুব মুল্যবান কিছু হারিয়ে গেছে,
সে রাতে আর ঘুম হলো না।অনেক কষ্টে রাত পোহালো।ভোর পাঁচটায় উঠে এসে আপুর রুমে গেলাম।আ্পুকে বললাম ফোন যদি চার্জে দাও তো দাও।আমি দিয়ে আসি। আগামিকাল সারাদিন কারেন্ট থাকবে না।সেদিন প্রথম আমি আপুকে মিথ্যে বললাম।যাইহোক ফোনটা নিয়ে কিছুদূর গেলাম, গিয়ে নিরিবিলি এক জায়গায় বসে ওকে কল দিলাম।
ও ফোন কেটে কল ব্যাক করলো।আমি ফোণ রিসিভ করেই কান্না শুরু করে দিলাম।ও আমাকে ওপাশ থেকে প্রশ্ন করেই যাচ্ছে কি হয়ছে তোমার কানতাছো কেনো? আমায় বলো।কান্না থামাও প্লিজ।আমাকে না বললে বুঝবো কেমনে?ওর কোনো কথায় যেনো আমার কানে যাচ্ছিলো না।শুধু একটা জিনিষই মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিলো ও কিছুতেই অন্যকাউকে ভালো বাসতে পারে না।
ও শুধু আমাকে ভালোবাসবে।অবশেষে কান্না থামিয়ে ওকে বললাম ভাইয়া আজকে যেভাবেই হোক আমাদের বাড়িতে এসো।এরপর ফোন কেটে দিলাম,এবং ফোন চার্জে দিয়ে আসলাম।স্কুলে ও গেলাম না সেদিন।সারাদিন কিছু খেলাম ও না।দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলো আমার ভয় বাড়তে লাগলো।মনে হলো ও আসবে না আমার কথা ও রাখবে না।তবুও আম্মুকে বলে ডালা নিয়ে শাক তোলার উছিলায় রাস্তার দিকে এগিয়ে গেলাম।১ঘন্টা শাক তুললাম তবুও ওর দেখা পেলাম না।আইল রাস্তা হওয়ার কারনে ওদিকে তখন বেশি লোকজন আসাযাওয়া করে না।
১ঘন্টা পর আমার ধৈর্যের বাধ ভেঙ্গে গেলো।আমি আবার কাঁদতে শুরু করলাম।অনেকটা জোরে জোরেই কাঁদছিলাম।এমন সময় আমার মনে হলো আমার কাধে কে যেন হাত রেখেছে,এরপর আমি ঘুরে দেখার আগেই আবার,হঠাৎ অনুভব করলাম হাতটা এখন আমার পিঠে।আমি চোখের পানি মুছে এক ঝলক হাসি নিয়ে পিছন ফিরে তাকাতেই দেখলাম রাজ,তারপর সামনে দাড়ানো মানুষটার বুকে কয়েকটা কিল ঘুসি মারলাম আর বলতে লাগলাম এই তোমার ভালোবাসা যেই কিছুদিন কথা বলিনি ওমনি আরেকজনের সাথে কথা বলা শুরু করে দিছো,একটা মনে কয় জনেক জায়গা দেয়া যায় হু?কেনো তুমি এমন করলে বলো?
আমার চোখে কি তোমার জন্য একটু ও ভালোবাসা দেখতে পাওনি?আমার জন্য কি আর একটু অপেক্ষা করা যেতো না?বলো,উত্তর দাও? ও চুপ করে দাড়িয়ে আছে কিছুই বলছে না।আমি প্রচন্ড রেগে ওর কলার ধরে যেই বলেছি আজকে আমি এমন কিছু করবো যাতে নিতু সারাজীবন আমার কথা মনে রাখ।এই বলে যেই ওকে জড়িয়ে ধরে কিস করতে যাচ্ছি ওমনি ও আমাকে এক ঝটকায় ওর বুক থেকে আমাকে সরিয়ে দেয় আর বলে,থাম। ওর কথা শুনে আমি বাস্তবে ফিরে আসি।দেখি আমার সামনে নিতু দাড়িয়ে আছে,তার মানে আমি রাজ মনে করে নিতুর সাথে ওসব করলাম।আমি খানিকটা লজ্জা পায় এবং ঘৃনার চোখে ওর দিকে তাকিয়ে বাড়ির দিকে হাটা শুরু করি।
পরে নিতু- (আমাকে পিছন দিক থেকে টেনে ধরে বলতে শুরু করে)কিরে ওভাবে তাকাচ্ছিলি কেনো? আজ আমাকে খুব ঘৃণা করছে তাইনা?(অনেকটা অভিমানের সুরে)
আমি- চুপ কোনো কথা বলছি না।কি করে কথা বলবো ওর সাথে।ও যে আমার বেচে থাকার অবলম্বন কেড়ে নিয়েছে।
নিতু- কীরে চুপ কেনো কথা বল।
এবার আমি আর চুপ করে থাকতে পারলাম না।মুখ খুললাম।
আমি আর কি বলবো। তুই ওকে নিয়ে হ্যাপি থাক।আমাকে ছাড়।আমার কাজ আছে।ও আমাকে না ছেড়ে আরো ও শক্ত করে ধরলো তারপর আমাকে প্রশ্ন করলো সহ্য করতে পারবি তো?
আমি - কেনো পারবো না? পৃথিবীতে কি আর কোনো ছেলে নেই যে আমার ওকেই ভালোবাসতে হবে।আর হ্যা ওকে যদি আমি ভালোবাসতাম তাহলে ও তোর কাছে যেতো না।বুঝলি?(রাগ দেখিয়ে)
নিতু- ঠিক বলছিস তো?
আমি- হুম।
এবার নিতু হাসতে হাসতে আমায় বললো হ্যারে কেমন সহ্য করতে পারবি তার নমুনাতো এখনি দেখলাম।ওই পাগলি আমি ওকে ভালোবাসি না। আর ভাইয়া ও আমাকে ভালোবাসে না।
আমি - তাহলে কাল রাতে যে কথা বললি? জানু বললি,ফ্লাইং কিস করলি।ওগুলো কি ছিলো?
নিতু - অভিনয়।
আমি-(অনেকটা আশ্চর্য হয়ে) অভিনয়!
নিতু- হুম।
আমি - কেনো করলি?
নিতু- সত্যিটা বের করার জন্য,আর তোদের দুজনকে এক করার জন্য।
নিতু আর আমি দুজনে কথা বলছিলাম এর মধ্যে সেখানে রাজের আগমন ঘটে।ও এসে আমার সাথে না বলে নিতুকে বলে জান কেমন আছো? নিতু বলেআমি ভালো আছি,কিন্তু,,, রাজ এবার ওকে থামিয়ে দিয়ে বলে কোনো কিন্তু নয় আজ আমি তোমার জন্য একটা গিফ্ট এনেছি।হাত দাও সেটা তোমাকে পড়িয়ে দেবো।
আমি কিন্তু এবার আর কোনো রিয়াক্ট করছি না খুব সহজ ভাবে ওর কথা গুলো শুনছি আর মনে মনে হাসছি।নিতু বার বার বলতে চাচ্ছে রাজকে যে আমি সবটা জেনে গেছি।কিন্তু আমি ওকে ইশারাই নিষেধ করে দিলাম না বলার জন্য যে আমি রাজের সব প্লান জানি।ও আর বললো না।রাজ আবার ও নিতুকে বলছে কি হলো হাতটা দিতে বলছি তো।আমি ইশারাই নিতুকে হাত বাড়াতে বললাম।নিতু তবুও হাত বাড়ালো না।
আমি খানিকটা হাসিমুখে নিতুর হাতটা টেনে নিয়ে ওকে বললাম নাও ভাইয়া তোমার স্পেশাল গিফ্ট টা নিতুর হাতে পরিয়ে দিয়ে ওর ভালোবাসাটা স্বার্থক করো।আমার এরকম স্বাভাবিক আচরন দেখে ভাইয়া খুব রেগে যাচ্ছে আর আমি ওর রাগ থেকে মজা নিতে চাচ্ছি। ৫মিনিট চলে গেলো ভাইয়া আর নিতুকে রিংটা পরাচ্ছে না। আমি এবার একটু জোর গলায় ভাইয়াকে বললাম কি হলো রিংটা পরাচ্ছো না কেনো?যেই না এই কথাটা বলেছি ওমনি আমার গালে ঠাস করে একটা চর মারলো। আর বললো আমার আর নিতুর মাঝে থাকার অধিকার কে দিছে? যা এখান থেকে।আমি কাঁদতে কাঁদতে ওখান থেকে চলে আসার জন্য পা বাড়াচ্ছি।
ওমনি নিতু আমাকে টেনে ধরলো আর ভাইয়াকে বললো।ভাইয়া আমি ওকে সবটা বলে দিছি। দয়া করে আপনি আর দুরুত্ব না তৈরি করে ওকে আপনার মনের কথা বলে দিন।এবার ভাইয়া আমাকে টেনে তার বুকে নিলো।কিছুক্ষণ জড়িয়ে ধরে রাখার পর ছেড়ে দিলো।আর আমাকে বললো হাত বাড়া।আমি দেখলাম ও অনেকটা রেগে আছে।তাই কথা না বাড়িয়ে হাত বাড়িয়ে দিলাম।ও আমার ডান হাতটা আগে ধরে তালুর ঠিক উল্টোপিঠে ভালোবাসার চিহ্ন একে দিলো। তারপর বাম হাতটা ধরে আমার মধ্যমা আঙ্গুলের বাম পাশের আঙ্গুলটাতে রিং পরিয়ে দিলো।সেই সাথে নিতুকে বললো আজ থেকে জুই আমার ইনগেজমেন্ট করা বউ।আর তুমি আমার শালিকা।সো আর ভাইয়া নয় দুলাভাই বলে ডাকবা।নিতু বললো ওকে দুলাভাই।
আপুর আদর খাও আমি আসি।আমি তখন লজ্জায় লাল হয়ে গেছি।ও আমাকে বললো আর লজ্জা পেতে হবে না।এবার বলো এতো জরুরি তলব কেনো ছিলো?উত্তরে আমি বললাম ন্যাকা। কিছু বোঝো না তাই না?ও বললো, না বুঝিনা।স্পষ্ট করে বলো।আমি বললাম ওকে আমি তোমাকে ভালোবাসি। তুমি শুধু আমার।ও বললো আমিও তোমাকে ভালোবাসি। আর আমি শুধু তোমার।
প্রেম নিবেদন পর্ব শেষে দুজন বাড়িতে আসলাম।আম্মু তার ভাইপোকে দেখে অনেক খুশিহলো।আব্বু বাজার করে আনলো।আম্মু রান্না করে সবাইকে খেতে ডাকলো।কিন্তু ও খেতে আসলো না আম্মুকে বললো আপনারা খেয়ে নিন আমি পরে খাবো।আম্মু আমাকে বললো পরে ওকে খাবার দিতে।বাকিরা সবাই খেয়ে নিলো।আম্মু অসুস্থ থাকার কারনে ঘুমিয়েও পড়লো।আমি আমার স্টাডি রুমে, রাজ আর আমার ছোটভাই লুডু খেলছিল।কিছুক্ষণ খেলার পর আমার ছোটো ভাই ঘুমিয়ে পরলো।আব্বু বাইরে বসে ছিলো।ও এবার খেতে চাইলো। আমি টেবিলে ওকে ভাত সাজিয়ে দিলাম।
ও আমাকে খাইয়ে দিলো আর আমি ওকে খাইয়ে দিলাম।খাওয়া শেষে ওকে ছোটো ভাইয়ের কাছে শুইয়ে আমি এসে আম্মু কাছে শুইলাম।ঘুম ধরতেছিলো না তাই আমি ওর ফোন নিয়ে আম্মুর কাছে শুয়ে ছবি দেখছিলাম।রাত ১১টা বাজে ওর ফোনে হঠাৎ একটা কল আসে আমি ওকে ফোনটা দিতে যায় গিয়ে দেখি ও ঘুমে বিভোর।আমি ওর গায়ে হাত দিয়ে ওকে ডাকতে গেলে ও আমার হাতটা ধরে ওর বুকের মাঝে টেনে নিয়ে ঘুমায়। অামি ও ওকে জরিয়ে ধরি।হঠাৎ চোখ লেগে যায় কখন যে ঘুমিয়ে পড়ি নিজে ও জানি না।যখন ঘুম ভাঙ্গে দেখি রাত দুটা বাজে।
আমি আলতো করে ওর কপালে একটা চুমো দিয়ে আম্মুর কাছে এসে ঘুমাই।কেটে যায় সেদিনের রাত সকালে ও বাড়ি চলে যায়।আমাদের প্রেম চলতে থাকে।প্রতিদিন ফোনে কথা মাঝেমধ্যে বাড়িতে আসা,প্রাইভেট থেকে আসার সময় দেখা করা।এভাবে চলে যায় দেড়বছর।এখন আমরা এতোটাই পাগল প্রেমিক,প্রেমিকা যে দিনে ১৪ ঘন্টায় ফোন নিয়ে থাকি।আব্বু একটা সমস্যার কারনে ফোন কেনে আর সেটা এখন আমার কাছেই থাকে।আমি এবার রাতেই বেশি কথা বলি।দেখতে দেখতে এসএস সি পরীক্ষা চলে আসে।লেখাপড়ার খুব চাপ। আমি ওকে সময় দিতে পারছি না।দুইটা অথবা তিনটা পরীক্ষা হওয়ার পর মাঝে দুইদিন ছুটি আছে।পড়ার চাপে অনেক দিন ভালো করে কথা হয়নি,ছুটির দিনে ওর সাথে ওনেক বেশী কথা বলছিলাম।ঘরে প্রবলেম হওয়ার কারনে রান্না ঘরে বসে কথা বলছিলাম।ইতিমধ্যে আব্বু ঘুম থেকে জাগনা পেয়ে বাইরে আসে।
বাইরে এসে দেখে আমি ফোনে কথা বলছি।আমাকে ঘরে নিয়ে গিয়ে জিগ্গেস করে কার সাথে কথা বলছি আমি নাম বলতে না চাইলে দুইটা থাপ্পড় মারে।আমি নাম বলে দিই।আমার মুখ থেকে ওর নাম শুনে আব্বু আম্মুকে ঘুম থেকে ডেকে তোলে আর আম্মুকে শাষায়।পরের দিন সেজো ভাইয়াকে বলে ওর শাশুরিকে আসতে।আন্টি আসে। ভাইয়ারা সবাই মিলে আমার বিয়ের তারিখ ঠিক করে সেজো ভাইয়ার সমুন্দির সাথে।আমি প্রথমে রাজি হই না।কিন্তু আম্মুর ওপর আব্বুর অত্যাচার বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যায়।আমি আর আম্মুর মুখের দিকে তাকাতে পারছিলাম না।আম্মুতো বিষ ও খেয়েছিলো আব্বুর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে।আম্মুকে হাসপাতালে থেকে সুস্থ করে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।আর আমিও বিয়েতে রাজি হয়ে যায়,বিয়ে ও ঠিক হয়ে যায়।
পরীক্ষার পর আমাকে আমার বিয়াইয়ের সাথে বিয়ে দেওয়া হবে।ধিরে ধিরে পরীক্ষা শেষেরদিকে আসছে আমিও ভেঙ্গে পরছি। ঠিকমতো খাওয়াদাওয়াও করি না।সেদিন রসায়ন পরীক্ষা ছিলো আমি পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি আসছিলাম ও আমাকে নিয়ে যেতে চায় কিন্তু আমি যেতে রাজি না।কারন আমি ওভাবে গেলে আব্বু আম্মুকে মারতে মারতে মেরেই ফেলবে।পরীক্ষা শেষ বড় ভাইয়ার সাথে কথা বলে ও আমাদের বাড়িতে আসে। আব্বুকে অনেক বুঝায়।কিন্তু আব্বু কোনমতেই রাজি হয় না। সেদিন আর আমাদের বাড়িতে ওর জায়গা হয় না, রাতে ও আমাকে নিয়ে পালিয়ে যেতে চায় কিন্তু আমি যেতে রাজি হয় না।এর জন্য ও নিজের হাত পোড়ে আর কাটে।পরের দিন বিষের বোতল এনে সবার সামনে খেতে চায় এমন সময় আমার বড় দুলাভাই ওর হাত থেকে বোতলটা কেড়ে নেয় আর কথা দেয় ওর সাথেই আমার বিয়ে দিবে।
ওকে বড়আপু ভাত খাইয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয় আর চিন্তা করতে নিষেদ করে।ও কেনো জানি আমার বড় আপুকে খুব বিস্বাস করতো।ও বাড়ি চলে যায়।তিন আপুর বর, বড় তিন আপুকে বাড়িতে রেখে যায় আর যাওয়ার সময় বলে যায়, জুউকে রাজের সাথে বিয়ে না দিলে তিন মেয়ের কাছে তালাকের নোটিশ চলে আসবে।আর রাজকে নিয়ে এসে বিষের বোতল হাতে দিয়ে বিষ খাওয়ায়া আমরা সাক্ষী দেবো।
ওদের কথায় আব্বু ভয় পায়,জানে বড় দুলাভাই যেটা বলে সেটাই করে।মন থেকে না মনে নিলেও বিয়েতে সম্মতি দেয়।
সর্বশেষ আজ আমাদের বিয়ে হচ্ছে।আব্বু ভাবি আর ভাইয়ারা ছাড়া বাকি সবাই খুব খুশি এই বিয়েতে,যেহেতু ওরা এই বিয়েতে খুশি ছিলো না তাই বিয়ের আগের দিন ও উঠোনটা আমাকে ঝাড়ু দিতে হয়ছিলো।
অবশেষে বরের গাড়ি এলো।এতো অশান্তি হওয়ার পরও মনে হলো না যে এবিয়েতে অনেকেরই মত নেই।গান বাজনা বাজছে ড্যান্স হচ্ছে। বড় করে গেট সাজানো হইয়েছে। আমি বসে বসে কান্না করছি।এমন সময় নিতু এসে বললো বর এসেছে।এবার একটু কান্না থামা।আর কান্না করার কি আছে তুই তো তোর মনের মানুষের কাছেই যাচ্ছিস। ওর কথা শেষ হতে না হতে বাহিরে গন্ডগোলের আউয়াজ শুনলাম।ওকে বাইরে পাঠালাম দেখে আসতে।ও দেখে এসে যা বললো তা শুনে আমি নিজেকে ঠিকরাখতে পারলাম না।অজ্ঞান হয়ে গেলাম।তারপর আর কি হয়ছে বলতে পারবো না।গ্যান ফেরার পর দেখলাম আমি ওর হাতের উপর শুয়ে আছি
আমি ওর হাতের উপর থেকে উঠে বসে পরলাম।ওকে ওখান থেকে পাঠানো হলো।বিয়ের কাবিন শেষ।এখন শুধু কালমা পড়ানো বাকি আছে।বাইরে সেই বন্দোবস্তটাও করা আছে। কিন্তু সেদিকে আমার কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।আমার মাথায় তখন শুধু ঘুরপাক খাচ্ছে কি নিয়ে ঝামেলা হচ্ছিলো আর কেনোই বা তা আমার থেকে লুকিয়ে রাখা হচ্ছে? আমি সবাইকে জিঙ্গেস করা সত্বেও কেউ কেনো কিছু বলছে না আমাকে?
এমন সময় কবুল পড়ানোর জন্য ইমাম সাহেব এলো।আমি প্রথমে ইতস্ত বোধ করলেও পড়ে কবুল বললাম।বিয়ে সম্পন্ন হলো।আমাদের বাড়ির লোকজন আরো কিছু নিয়মকানুন পালন করতে চাইলেও স্বশুর বাড়ির লোকজন তা করতে দিলো না।এক প্রকার জোর করেই আমাকে নিয়ে চলে গেলো।আমার দাদি নানি না থাকায় আমার আপু আর দুলাভাই গেলো।ওখানে যাওয়ার পর আমার স্বাশুড়ি আমাকে বরণ করে নিলেন।আমাকে বসানো হলো বারান্দায়।আমার আপু ও দুলাভাইকেও ওখানে বসতে দেওয়া হলো।এমনিতে শীতের রাত প্রচন্ড শীতে আমি ঠান্ডায় কুকড়ে যাচ্ছিলাম, তার ওপর সামনে মরিচ পোড়ানো হচ্ছে।
তার গন্ধে কাশতে কাশতে একপ্রকার বমি হবার উপক্রম। কিন্তু মরিচ পোড়ানো বন্ধই হচ্ছে না।দুলাভাই এবার প্রচন্ড রেগে যাচ্ছে। দুলাভাই ওর ভাবিকে বলতেছে বেয়ান এবার কিন্তু বেশি হয়ে যাচ্ছে। আমাদের সামনে মরিচ পোড়ান মেনে নেবো।কিন্তু জুইকে ঘরে নিয়ে যান।কে শোনে কার কথা।দুলাভাইয়ের কথা শুনে ওরা আরো মরিচ এনে কাঁদার আগুনে ঢেলে দিলো।যখন মরিচ পোড়ানো বন্ধ হলো ততক্ষণে আমি বমি করে ফেলেছি।
আমার বড় ভাসর এসে ওদেরকে বকে সরিয়ে দিলো। একজন আমাকে ঘরে নিয়ে গেলো খাবার খাওয়ানোর জন্য সাথে আমার আপু ওদুলাভাইকে।আপু দুলাভাইকে জোড় করা সত্বেও ওরা কিছু খেলো না।ওরা শুধু আমাকে খাওয়ানোর জন্য অনুরোধ করলো।আমি খেতে চাইলাম না।ওরা জোর করে আমায় অল্প একটু খাওয়ালো।খাওয়ানোর পর আমাকে বাসরঘরে পাঠানোর জন্য আনা হলো।কিন্তু ঘরে তালা মারা।সামনে দুই তিনজন মেয়ে দাড়ানো।তারা ৫০০০ টাকার দাবি করলো।নাহলে ঘর খুলবে না বলে দিলো।আমার ভাইয়া তো ১টাকা দিতেও রাজি না কারন ওরা আমাদের বাড়িতে নাকি এক টাকাও খরচ করেনি।রাত ১টা আমি বারান্দাই বসে আছি।ভাইয়াও টাকা দিচ্ছে না ওরাও ঘর খুলছে না।অবশেষে রাত ৩টার সময় ৪০০০ টাকার বিনিময়ে ঘর খোলা হলো।ঘরে ঢুকে আমি তো অবাক।মনে মনে বলতেছি এরা পারেও বটে ১৫০ টাকায় ঘর সাজিয়ে ৪০০০টাকা নিতে।
ভাইয়া রুমে উকি দিয়ে দেখে অনেক টা রেগে থাকা সত্বেও মুখে মেকি হাসির সহিত বললো। বাহ! খুব চমৎকার সাজিয়েছেন তো বেয়ান।এতেই ওর বোনের ফসকা পরে গেলো।মুখ বাকা করে ভাইয়াকে অনেক কথা শোনালো।যাইহোক সবাই যার যার মতো ঘুমাতে গেলো।আমার বর ও রুমে আসলো।রুমে এসে দরোজা বন্ধ করে দিলো।আমি ও কাপোড় চেন্জ করলাম। ঘুমানোর জন্য শুয়ে পরলাম।
আমার পিড়িয়ড চলতেছে।আমার বর আমার কাছে আসলো।আমার ঠোটে ঠোট লাগিয়ে কিস করতে।আমি বাধা দিলাম।যেহেতু ওর সাথে আগে আমার সম্পর্ক ছিলো তাই কোনো ইতস্তবোধ কাজ করছিলো না।আমি সরাসরি ওকে নিষেধ করলাম।কিন্তু মানতে নারাজ।ওর কাছে বিয়ের রাতে কিছু নাহলে নাকি কাপুরুষতা প্রমান করা হয়।অতঃপর আমার স্বামী নিজের সুপুরুষতা প্রমাণ করার জন্য আমাকে ধর্ষন করলো।আপনারা ভাবছেন তো এতো ভালোবাসার পরে ও কেনো স্বামীর সোহাগটাকে আমার ধর্ষন বলে মনে হচ্ছে।
জোর করে সোহাগ করলে তাকে ধর্ষন ই মনে হয়।যাইহোক আমি এটাকে স্বাবাভিক বলে মেনে নিলাম।এটা ভেবে যে ৫ বছর রিলেশন থাকা সত্বেও ওর সাথে আমার কোনো ফিজিকাল রিলেশন হয়নি আমাকে নিজের করে পেয়ে হয়তো তাই নিজেকে আটকাতে পারেনি।সব ভুলে আমি ওকে জিঙ্গেস করলাম আমাদের বাড়িতে কি হয়ছিলো।আমার বিস্বাস ছিলো ও বলবে।বিস্বাস থাকবেই না বা কেনো? ৫ বছরে আমরা একে ওপরের বন্ধু হয়েছিলাম।আমার যা হতো ওকে বলতাম আর ওর যা হতো আমাকে বলতো।প্রাইভেসি বলে কিছু ছিলো না।কিন্তু ওর উত্তর শোনার পর আমার
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন