গল্প:১০ দিনের বউ
(৬ষ্ঠ পার্ট)
পরদিন সকালে নূপুরের ডাকে ঘুম ভাঙলো....
-ঐ হৃদুউ.... উঠ্ না... (নূপুর)
-উমমম... (ঘুমের মধ্যে)
-এই অফিস আছে না তোর?
-উমম.. আছে তো...
-তাহলে উঠ্ না.. নাহলে দেরি হয়ে যাবে তো... তারপর তো না খেয়েই তাড়াহুড়া করে চলে যাবি...
-আচ্ছা উঠছি তো... (না উঠেই)
-তাড়াতাড়ি....
-হুম....
ঘুম ঘুম চোখে নূপুরের দিকে তাকালাম.....
দেখলাম নূপুর গোসল করে এসেছে... টাওয়েল দিয়ে ওর ভেজা চুল মুছছে... তার উপর শাড়ি পড়ে তো ওকে একদম পরী লাগছে.
-এ নূপুর শোন্ না.... (ঘুমের মধ্যে থেকেই)
-কি?
-তুই আর শাড়ি পরবি না...
-কেন?
-শাড়ি পড়লে তোকে একদম আমার বউ বউ লাগে...
-হ্যা তো লাগাই তো উচিত...
-কিন্তু আমি যে তোর প্রেমে পড়ে যাই...... (বিড়বিড় করে)
-কি????
-না না কিছু না তো.....
এহেরে ঘুমের ঘোরে কি বলছি এসব...!
-না কিছু বললি মনে হলো...
-ঐ তো বললাম..(আমতা আমতা করে)
-কি বললি?
-ঐ তো... (কি বলবো ভাবছিলাম)
-ঐতো কি?
-তোকে একদম ঠাকুরমার ঝুলির শাকচুন্নিটার মতো লাগছে......
-কিহহহ...! ঐ তুই নিজে কি রে! ঠাকুরমার ঝুলির হামদো ভূত তুই....
-তুই পেত্নি শাকচুন্নি সব...
-তাহলে শাকচুন্নির দিকে এভাবে হা করে তাকিয়ে আছিস কেন!!!
-জীবনে তোর মতো শাকচুন্নি দেখিনি তো তাই......
-হৃদুর বাচ্চা......(রেগে গিয়ে)
-আহা বাচ্চা আসবে কোথা থেকে.... কিছু তো করলাম ই না....
-হারামজাদা....... আজ তোর একদিন কি আমার একদিন..! (কান টেনে)
-আয়াউউচ... নূপুর ছাড়্.......
-সকাল সকাল কি দুষ্টামি শুরু করেছিস হ্যা? তোর না অফিস আছে.. দেখি তাড়াতাড়ি উঠে অফিস যা...
-কি বলিস? উঠেই অফিস চলে যাবো? ফ্রেস টেস হবো না?
-ধ্যত তুই শুধু ভুল ধরিস... যা ইচ্ছা কর গা...
-আরে উঠছি উঠছি... (হেসে)
-হুম....
নূপুর দেখলাম রান্নাঘরে চলে গেলো... আমিও উঠে ফ্রেস হতে গেলাম...
আমি ফ্রেস হয়ে এসে রেডি হচ্ছিলাম...
-এ নূপুর আমার টাই কই?
-ওইতো ঐখানে...
-ঐখানে কোন খানে?
-আরে ঐতো...
-আজব কোথায় নাম বলবি তো...
-দাড়া আমি আসছি...
-তাড়াতাড়ি আয়...
একটু পর...
-নে তোর টাই... (নূপুর)
পেছন ফিরে দেখি নূপুর টাই হাতে দাঁড়িয়ে আছে..
-হ্যা দে...
-হুম.... (টাই এগিয়ে দে)
নূপুর চলে যাচ্ছিলো.... এমন সময় একটু দুষ্টামি করতে ইচ্ছে হলো. আমি নূপুরকে পেছন থেকে ডাক দিলাম...
-এ নূপুর..... (আমি)
-কি?
-একটা হেল্প কর্ না...
-হ্যা বল্
-আমি না টাই এর লুপ টা ভুলে গেছি... তো তুই যদি টাই টা....
-বেধে দিতে হবে তো?
-হ্যা
-আমার অনেক কাজ আছে... তো আমি পারবো না...
-আরে দে না.. এমন করিস কেন?
-নিজের কাজ নিজে কর্
-তুই করলে কি প্রবলেম? বউ না তুই আমার...!
-এই কথা পেয়েছে... "বউ না তুই আমার, বউ না তুই আমার".এএহ একদম যেন মাথা কিনে ফেলেছে....
-এত
-কি মনে থাকে তোর...!! (টাইটা আমার হাত থেকে নিয়ে)
-তোর মাথা মনে থাকে.....
-তোর মনে আমার মাথা থাকে...!
-এই তুই এভাবে তাকাস কেন?
-কীভাবে?
-এইতো এখন যেভাবে তাকিয়ে আছিস....
-তো কি হইসে
-আমার কেমন জানি লাগে
-মাথা লাগে তোর... দেখি নিচু হ... (টাই হাতে নিয়ে)
-তুই উঁচু হ...
-দেখি বেয়াদবি করিস না.. একটু নিচু হ... নাহলে টাই পরাতে পারবো না.
-আরে তুই একটু উচিয়ে গেলেই তো হয়...!
-তুই এতো লম্বা কেন? সুপারি গাছ...!!!
-এএহ তো কি তোর মতো মরিচ গাছ হবো নাকি? একে তো আমার থেকে খাটো, তার উপর এতো ঝাল I mean এতো রাগ... বাব্বা...
-ঐ কিইহহহ বললি... আমি মরিচ গাছ..! নে তোর টাই তুই নিজেই পর্... (টাই টা আমার দিকে ছুড়ে দিয়ে)
আমি টাই টা Catch করে নূপুরকে হাত ধরে আটকালাম....
-এই দে না... অফিসের দেরি হয়ে যাচ্ছে..... (আমি)
নূপুর রাগি লুকে আমার দিকে তাকালো...
-তোকে তো নিচু হতে বললাম, নাহলে পরাবো কি করে...
-এক কাজ কর্... খাটে উঠে দাড়া তুই... তাহলেই লম্বা হয়ে যাবি...
-এএহ গাধা তাহলে তো তোকে বেশি নিচু লাগবে...
-Ok Then তুই আমার পায়ের পাতার উপর দাড়া... আর আমি সামান্য একটু নিচু হই...
কথাটা শুনে নূপুর মনে হলো একটু ভাবুক হয়ে পড়লো.... কি জানি ভাবছে ও....
-আর দাড়া না.....(আমি)
আমি নূপুরকে টান দিয়ে একদম আমার কাছে এনে ফেললাম আর ওর কোমর জড়িয়ে ধরলাম.
-দেখি তাড়াতাড়ি কর্.. আমার সত্যিই অনেক দেরি হয়ে যাচ্ছে....
নূপুর প্রথমে একটু চমকে গেলেও পরে আবার স্বাভাবিক হয়ে গেলো...
ও আমার পায়ের উপর উঠে টাই পরিয়ে দিচ্ছিলো আর আমি ওকে কোমরে জড়িয়ে ধরে রাখলাম... আর ওর দিকে তাকিয়ে থেকে মনে মনে হাসছিলাম...
-এতো Easy একটা লুপ মনে থাকে না...! (টাই বাধতে বাধতে নূপুর বললো)
-তোকে দেখে ভুলে গেছি
-মানে?
-না কিছু না...
-নে তোর টাই বাধা শেষ...
নূপুর টাই পরানো শেষ করে হাসি মুখে আমার দিকে তাকালো....
আমি অনেক্ষন ধরেই নূপুরকে দেখছিলাম... এখন নূপুর ও আমার দিকে তাকিয়ে থাকলো.. আস্তে আস্তে যেন নূপুরের হাসিটা লুকিয়ে যাচ্ছিলো..
তাকিয়ে থাকতে থাকতে হঠাৎ আমি নূপুরকে চোখ মেরে বসলাম....
নূপুর চোখ বড় বড় করে চিৎকার করে উঠলো..
-ঐ ঐ ঐ চোখ মারলি কেন?
-বা রে... আমার বউকেই তো মারলাম....
-কেন মারবি....!
-ইচ্ছা হইসে তাই.......
-না মারবি না...
-১০০ বার মারবো..
বলেই নূপুরকে আরেকটা চোখ মারলাম.
-শয়তান.. ফাইজলামি করস..!
বলেই আমাকে মারতে মারতে লাগলো.
-এই থাম্ থাম্.....
আমি হাসতে হাসতে ওকে আটকানোর চেষ্টা করছিলাম....
-দেখি খেতে আয়.... (মার থামিয়ে)
-হিহি হুম...
-চুপ... আবার দাঁত কেলানো হচ্ছে... ভেবেছিলাম খেতে দেবো না.. কিন্তু বাঁদরমুখো মুখটা দেখলে তো মায়া লাগে.
-ঐ আমি আয়না না.
-বান্দর... আবার শুরু করলি.....!!
-আচ্ছা চল্ চল্ আমার অফিসের দেরি হয়ে যাচ্ছে...
-হুম....
তারপর আমি আর নূপুর একসাথে ব্রেকফাস্ট করলাম......
ব্রেকফাস্ট করে একটু পর অফিসের জন্য বের হয়ে যাবো এমন সময় নূপুর দৌড়ে এলো.
-এই এই এই টিফিন ক্যারিয়ারটা নিয়ে যা..... (নূপুর)
-কি আছে এতে? (আমি)
-খাবার আর কি.. দুপুরে খেয়ে নিবি....
-বাব্বা... টিফিন!!! (অবাক হয়ে)
-কি হলো..?
-তুই তো দেখছি একদম বউদের মতো হয়ে গেছিস...
-মানে?
- I mean বউ এরা যেরকম Caring হয় ঠিক ওইরকম...
-কেন?
-এই তো সকাল সকাল উঠলি, আমাকে ডেকে তুললি, টাই বেধে দিলি, রান্না করলি,
এখন টিফিন প্যাক করে দিচ্ছিস এসব আর কি
-এরকম তো করতেই পারি..
-কি?
-বেশি কথা না বলে যা এখন.... আর দুপুরের খেয়ে নিবি কিন্তু....
-অলে লে.. ঠিক আছে গো বউ.... (একটা হাসি দিয়ে)
-হুম..
-আচ্ছা আসি..
-হুম...
আমি অফিসের জন্য রওনা দিলাম.... ঠিক সময়ে অফিসে পৌছেও গেলাম...
.
দুপুরে Lunch Time এর সময়....
আমি Tiffin Carrier টা খুলে মাত্র Lunch করতে বসলাম.. এমন সময় রাসেল ভাই এসে ঢুকলো.
-কি ভাই Lunch করতে বসলেন?
-জ্বি ভাই... আপনি করবেন না?
-না ভাই আপনার ভাবি টিফিন দিয়েছিলো ঠিকই বাট আনতে ভুলে গেছি....
-Oh No Problem.. আজ আপনি আমার থেকে শেয়ার করেন...
-না না ভাই আমি খেয়ে নেবো...
-কই খাবেন আবার? বাইরের হোস্টেল টা থেকেই তো? তার চেয়ে আজ আমরা একসাথে করি না! দেখি বসেন
(জোরপূর্বক রাসেল ভাইকে বসালাম)
-আচ্ছা ঠিক আছে....
রাসেল ভাই আর আমি Lunch করতে বসলাম....
এরই মধ্যে একবার নূপুর ফোন দিয়েছিলো...
-হ্যা বল্... (ফোন রিসিভ করে)
-কি করছিস... (নূপুর)
-খাচ্ছি... (খেতে খেতে)
-ওওও আচ্ছা তাহলে খা....
-তুই খেয়েছিস?
-না খাবো এখন...
-ঠিক আছে খা...
-হুম রাখছি
-হুম...
.
Lunch করার পর...
-আহ হৃদয় ভাই... আপনার টিফিনটা খেয়ে পেটটা তো ভরলো ই.. সাথে মনটাও ভরে গেলো.. (রাসেল)
-Tnku
-রান্নাটা সেই হয়েছে ভাই... কে করলো? আপনি?
আমি একটা হাসি দিলাম...
-আরে না না আমি রান্না জানি না....
-তাহলে?
-আমার ফ্রেন্ড...
-ছেলে?
-না না মেয়ে...
-একটু আগে যে ফোনে কথা বললেন সে?
-হুম...
-কি ভাই... ফোনে ফোনে কথা... গিফট শপে যাওয়া.. এখন থেকে টিফিন.... কি ভাই কিছু চলছে নাকি...?
কথাটা শুনে আমি বেশ খানিক্ষন হাসলাম...
-আপনি যে কি বলেন ভাই.... ও তো আমার বেস্ট ফ্রেন্ড...
-বেস্ট ফ্রেন্ড তো কি হইসে.. গার্লফ্রেন্ড হইতে কতো ক্ষন..!
আমার রাসেল ভাইয়ের কথা শুনে শুধু হাসি পাচ্ছে....
-কি ভাই.. শুধু হেসেই চলেছেন... প্রেমে পড়ে পাগল হলেন নাকি?
-হাহাহা না.. আপনার কথা শুনে হাসি পাচ্ছে...
-কেন?
-এমনি কেন জানি হাসি পাচ্ছে... (হাসতে হাসতে)
-ধ্যত মিয়া...
এমন সময় রাসেল সাহেবের বসের কাছ থেকে ডাক পড়লো.
-ভাই এখন যাই পরে কথা হবে.. (রাসেল)
-আচ্ছা....
রাসেল ভাই চলে গেলে নূপুরের সাথে বেশ কিছুক্ষন কথা বললাম..
.
অফিস শেষ হলে বাসার দিকে রওনা হলাম..
আজ ততো বেশি কাজ ছিল না অফিসে..
অন্য জায়গায় ট্রান্সফার হবো তো এখানে কাজের তেমন চাপ নেই...
অফিস থেকে বাসায় যাচ্ছি... মনটা বেশ ফুরফুরা লাগছে....
(৬ষ্ঠ পার্ট)
পরদিন সকালে নূপুরের ডাকে ঘুম ভাঙলো....
-ঐ হৃদুউ.... উঠ্ না... (নূপুর)
-উমমম... (ঘুমের মধ্যে)
-এই অফিস আছে না তোর?
-উমম.. আছে তো...
-তাহলে উঠ্ না.. নাহলে দেরি হয়ে যাবে তো... তারপর তো না খেয়েই তাড়াহুড়া করে চলে যাবি...
-আচ্ছা উঠছি তো... (না উঠেই)
-তাড়াতাড়ি....
-হুম....
ঘুম ঘুম চোখে নূপুরের দিকে তাকালাম.....
দেখলাম নূপুর গোসল করে এসেছে... টাওয়েল দিয়ে ওর ভেজা চুল মুছছে... তার উপর শাড়ি পড়ে তো ওকে একদম পরী লাগছে.
-এ নূপুর শোন্ না.... (ঘুমের মধ্যে থেকেই)
-কি?
-তুই আর শাড়ি পরবি না...
-কেন?
-শাড়ি পড়লে তোকে একদম আমার বউ বউ লাগে...
-হ্যা তো লাগাই তো উচিত...
-কিন্তু আমি যে তোর প্রেমে পড়ে যাই...... (বিড়বিড় করে)
-কি????
-না না কিছু না তো.....
এহেরে ঘুমের ঘোরে কি বলছি এসব...!
-না কিছু বললি মনে হলো...
-ঐ তো বললাম..(আমতা আমতা করে)
-কি বললি?
-ঐ তো... (কি বলবো ভাবছিলাম)
-ঐতো কি?
-তোকে একদম ঠাকুরমার ঝুলির শাকচুন্নিটার মতো লাগছে......
-কিহহহ...! ঐ তুই নিজে কি রে! ঠাকুরমার ঝুলির হামদো ভূত তুই....
-তুই পেত্নি শাকচুন্নি সব...
-তাহলে শাকচুন্নির দিকে এভাবে হা করে তাকিয়ে আছিস কেন!!!
-জীবনে তোর মতো শাকচুন্নি দেখিনি তো তাই......
-হৃদুর বাচ্চা......(রেগে গিয়ে)
-আহা বাচ্চা আসবে কোথা থেকে.... কিছু তো করলাম ই না....
-হারামজাদা....... আজ তোর একদিন কি আমার একদিন..! (কান টেনে)
-আয়াউউচ... নূপুর ছাড়্.......
-সকাল সকাল কি দুষ্টামি শুরু করেছিস হ্যা? তোর না অফিস আছে.. দেখি তাড়াতাড়ি উঠে অফিস যা...
-কি বলিস? উঠেই অফিস চলে যাবো? ফ্রেস টেস হবো না?
-ধ্যত তুই শুধু ভুল ধরিস... যা ইচ্ছা কর গা...
-আরে উঠছি উঠছি... (হেসে)
-হুম....
নূপুর দেখলাম রান্নাঘরে চলে গেলো... আমিও উঠে ফ্রেস হতে গেলাম...
আমি ফ্রেস হয়ে এসে রেডি হচ্ছিলাম...
-এ নূপুর আমার টাই কই?
-ওইতো ঐখানে...
-ঐখানে কোন খানে?
-আরে ঐতো...
-আজব কোথায় নাম বলবি তো...
-দাড়া আমি আসছি...
-তাড়াতাড়ি আয়...
একটু পর...
-নে তোর টাই... (নূপুর)
পেছন ফিরে দেখি নূপুর টাই হাতে দাঁড়িয়ে আছে..
-হ্যা দে...
-হুম.... (টাই এগিয়ে দে)
নূপুর চলে যাচ্ছিলো.... এমন সময় একটু দুষ্টামি করতে ইচ্ছে হলো. আমি নূপুরকে পেছন থেকে ডাক দিলাম...
-এ নূপুর..... (আমি)
-কি?
-একটা হেল্প কর্ না...
-হ্যা বল্
-আমি না টাই এর লুপ টা ভুলে গেছি... তো তুই যদি টাই টা....
-বেধে দিতে হবে তো?
-হ্যা
-আমার অনেক কাজ আছে... তো আমি পারবো না...
-আরে দে না.. এমন করিস কেন?
-নিজের কাজ নিজে কর্
-তুই করলে কি প্রবলেম? বউ না তুই আমার...!
-এই কথা পেয়েছে... "বউ না তুই আমার, বউ না তুই আমার".এএহ একদম যেন মাথা কিনে ফেলেছে....
-এত
-কি মনে থাকে তোর...!! (টাইটা আমার হাত থেকে নিয়ে)
-তোর মাথা মনে থাকে.....
-তোর মনে আমার মাথা থাকে...!
-এই তুই এভাবে তাকাস কেন?
-কীভাবে?
-এইতো এখন যেভাবে তাকিয়ে আছিস....
-তো কি হইসে
-আমার কেমন জানি লাগে
-মাথা লাগে তোর... দেখি নিচু হ... (টাই হাতে নিয়ে)
-তুই উঁচু হ...
-দেখি বেয়াদবি করিস না.. একটু নিচু হ... নাহলে টাই পরাতে পারবো না.
-আরে তুই একটু উচিয়ে গেলেই তো হয়...!
-তুই এতো লম্বা কেন? সুপারি গাছ...!!!
-এএহ তো কি তোর মতো মরিচ গাছ হবো নাকি? একে তো আমার থেকে খাটো, তার উপর এতো ঝাল I mean এতো রাগ... বাব্বা...
-ঐ কিইহহহ বললি... আমি মরিচ গাছ..! নে তোর টাই তুই নিজেই পর্... (টাই টা আমার দিকে ছুড়ে দিয়ে)
আমি টাই টা Catch করে নূপুরকে হাত ধরে আটকালাম....
-এই দে না... অফিসের দেরি হয়ে যাচ্ছে..... (আমি)
নূপুর রাগি লুকে আমার দিকে তাকালো...
-তোকে তো নিচু হতে বললাম, নাহলে পরাবো কি করে...
-এক কাজ কর্... খাটে উঠে দাড়া তুই... তাহলেই লম্বা হয়ে যাবি...
-এএহ গাধা তাহলে তো তোকে বেশি নিচু লাগবে...
-Ok Then তুই আমার পায়ের পাতার উপর দাড়া... আর আমি সামান্য একটু নিচু হই...
কথাটা শুনে নূপুর মনে হলো একটু ভাবুক হয়ে পড়লো.... কি জানি ভাবছে ও....
-আর দাড়া না.....(আমি)
আমি নূপুরকে টান দিয়ে একদম আমার কাছে এনে ফেললাম আর ওর কোমর জড়িয়ে ধরলাম.
-দেখি তাড়াতাড়ি কর্.. আমার সত্যিই অনেক দেরি হয়ে যাচ্ছে....
নূপুর প্রথমে একটু চমকে গেলেও পরে আবার স্বাভাবিক হয়ে গেলো...
ও আমার পায়ের উপর উঠে টাই পরিয়ে দিচ্ছিলো আর আমি ওকে কোমরে জড়িয়ে ধরে রাখলাম... আর ওর দিকে তাকিয়ে থেকে মনে মনে হাসছিলাম...
-এতো Easy একটা লুপ মনে থাকে না...! (টাই বাধতে বাধতে নূপুর বললো)
-তোকে দেখে ভুলে গেছি
-মানে?
-না কিছু না...
-নে তোর টাই বাধা শেষ...
নূপুর টাই পরানো শেষ করে হাসি মুখে আমার দিকে তাকালো....
আমি অনেক্ষন ধরেই নূপুরকে দেখছিলাম... এখন নূপুর ও আমার দিকে তাকিয়ে থাকলো.. আস্তে আস্তে যেন নূপুরের হাসিটা লুকিয়ে যাচ্ছিলো..
তাকিয়ে থাকতে থাকতে হঠাৎ আমি নূপুরকে চোখ মেরে বসলাম....
নূপুর চোখ বড় বড় করে চিৎকার করে উঠলো..
-ঐ ঐ ঐ চোখ মারলি কেন?
-বা রে... আমার বউকেই তো মারলাম....
-কেন মারবি....!
-ইচ্ছা হইসে তাই.......
-না মারবি না...
-১০০ বার মারবো..
বলেই নূপুরকে আরেকটা চোখ মারলাম.
-শয়তান.. ফাইজলামি করস..!
বলেই আমাকে মারতে মারতে লাগলো.
-এই থাম্ থাম্.....
আমি হাসতে হাসতে ওকে আটকানোর চেষ্টা করছিলাম....
-দেখি খেতে আয়.... (মার থামিয়ে)
-হিহি হুম...
-চুপ... আবার দাঁত কেলানো হচ্ছে... ভেবেছিলাম খেতে দেবো না.. কিন্তু বাঁদরমুখো মুখটা দেখলে তো মায়া লাগে.
-ঐ আমি আয়না না.
-বান্দর... আবার শুরু করলি.....!!
-আচ্ছা চল্ চল্ আমার অফিসের দেরি হয়ে যাচ্ছে...
-হুম....
তারপর আমি আর নূপুর একসাথে ব্রেকফাস্ট করলাম......
ব্রেকফাস্ট করে একটু পর অফিসের জন্য বের হয়ে যাবো এমন সময় নূপুর দৌড়ে এলো.
-এই এই এই টিফিন ক্যারিয়ারটা নিয়ে যা..... (নূপুর)
-কি আছে এতে? (আমি)
-খাবার আর কি.. দুপুরে খেয়ে নিবি....
-বাব্বা... টিফিন!!! (অবাক হয়ে)
-কি হলো..?
-তুই তো দেখছি একদম বউদের মতো হয়ে গেছিস...
-মানে?
- I mean বউ এরা যেরকম Caring হয় ঠিক ওইরকম...
-কেন?
-এই তো সকাল সকাল উঠলি, আমাকে ডেকে তুললি, টাই বেধে দিলি, রান্না করলি,
এখন টিফিন প্যাক করে দিচ্ছিস এসব আর কি
-এরকম তো করতেই পারি..
-কি?
-বেশি কথা না বলে যা এখন.... আর দুপুরের খেয়ে নিবি কিন্তু....
-অলে লে.. ঠিক আছে গো বউ.... (একটা হাসি দিয়ে)
-হুম..
-আচ্ছা আসি..
-হুম...
আমি অফিসের জন্য রওনা দিলাম.... ঠিক সময়ে অফিসে পৌছেও গেলাম...
.
দুপুরে Lunch Time এর সময়....
আমি Tiffin Carrier টা খুলে মাত্র Lunch করতে বসলাম.. এমন সময় রাসেল ভাই এসে ঢুকলো.
-কি ভাই Lunch করতে বসলেন?
-জ্বি ভাই... আপনি করবেন না?
-না ভাই আপনার ভাবি টিফিন দিয়েছিলো ঠিকই বাট আনতে ভুলে গেছি....
-Oh No Problem.. আজ আপনি আমার থেকে শেয়ার করেন...
-না না ভাই আমি খেয়ে নেবো...
-কই খাবেন আবার? বাইরের হোস্টেল টা থেকেই তো? তার চেয়ে আজ আমরা একসাথে করি না! দেখি বসেন
(জোরপূর্বক রাসেল ভাইকে বসালাম)
-আচ্ছা ঠিক আছে....
রাসেল ভাই আর আমি Lunch করতে বসলাম....
এরই মধ্যে একবার নূপুর ফোন দিয়েছিলো...
-হ্যা বল্... (ফোন রিসিভ করে)
-কি করছিস... (নূপুর)
-খাচ্ছি... (খেতে খেতে)
-ওওও আচ্ছা তাহলে খা....
-তুই খেয়েছিস?
-না খাবো এখন...
-ঠিক আছে খা...
-হুম রাখছি
-হুম...
.
Lunch করার পর...
-আহ হৃদয় ভাই... আপনার টিফিনটা খেয়ে পেটটা তো ভরলো ই.. সাথে মনটাও ভরে গেলো.. (রাসেল)
-Tnku
-রান্নাটা সেই হয়েছে ভাই... কে করলো? আপনি?
আমি একটা হাসি দিলাম...
-আরে না না আমি রান্না জানি না....
-তাহলে?
-আমার ফ্রেন্ড...
-ছেলে?
-না না মেয়ে...
-একটু আগে যে ফোনে কথা বললেন সে?
-হুম...
-কি ভাই... ফোনে ফোনে কথা... গিফট শপে যাওয়া.. এখন থেকে টিফিন.... কি ভাই কিছু চলছে নাকি...?
কথাটা শুনে আমি বেশ খানিক্ষন হাসলাম...
-আপনি যে কি বলেন ভাই.... ও তো আমার বেস্ট ফ্রেন্ড...
-বেস্ট ফ্রেন্ড তো কি হইসে.. গার্লফ্রেন্ড হইতে কতো ক্ষন..!
আমার রাসেল ভাইয়ের কথা শুনে শুধু হাসি পাচ্ছে....
-কি ভাই.. শুধু হেসেই চলেছেন... প্রেমে পড়ে পাগল হলেন নাকি?
-হাহাহা না.. আপনার কথা শুনে হাসি পাচ্ছে...
-কেন?
-এমনি কেন জানি হাসি পাচ্ছে... (হাসতে হাসতে)
-ধ্যত মিয়া...
এমন সময় রাসেল সাহেবের বসের কাছ থেকে ডাক পড়লো.
-ভাই এখন যাই পরে কথা হবে.. (রাসেল)
-আচ্ছা....
রাসেল ভাই চলে গেলে নূপুরের সাথে বেশ কিছুক্ষন কথা বললাম..
.
অফিস শেষ হলে বাসার দিকে রওনা হলাম..
আজ ততো বেশি কাজ ছিল না অফিসে..
অন্য জায়গায় ট্রান্সফার হবো তো এখানে কাজের তেমন চাপ নেই...
অফিস থেকে বাসায় যাচ্ছি... মনটা বেশ ফুরফুরা লাগছে....
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন