গল্প ঃ 💚খালাতো বোন যখন বউ 💚
পার্টঃ ৩
_______________________
এই কথা বলে অধরা বাসার ভিতরে চলে গেল।
আর আমি পোরা কপাল নিয়ে ভাবছি ।এইটা তার মানে ওর ৪ নাম্বার বয়ফ্রেন্ড,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
আমার বউয়ের বিয়ের আগেই ৪ টা বয়ফ্রেন্ড (জ্ঞান হারিয়ে ফেলছি)
জ্ঞান ফেরার পর নিজেকে রুমে আবিষ্কার করলাম।
চোখ মেলে দেখি খালামনি, অধরা,ভাইয়া, ভাইয়ার সাথে আরো ২জন।
খালামনি ঃকি হয়েছে বাবা তোর ।
আমি ঃ খালামনি তুমি কান্না করছো কেন। আমার কিচ্ছু হয়নায় তো শুধু মাথায় একটু বেশি চাপ নিয়ে ছিলাম তো তাই।।(অধরার দিকে চোখ গরম করে তাকিয়ে)।
তারপর খালামনি কে চুপ করিয়ে পাঠিয়ে দিলাম।
এখন অধরার দিকে চোখ গরম করে তাকিয়ে আছি। আর অধরা ভয়ে মাথা নিচু করে আছে।
ধ্যান ভাংলো ভাইয়ার কথায়।
ভাইয়া ঃ ছেলেটা কে ছিল? (তাকিয়ে দেখি ভাইয়া আমার আর অধরার দিকে কেমন করে যেনো তাকিয়ে আছে।
অধরা ঃ (খুব ভয় পেয়ে) না মানে ছেলেটা,,,,,, মানে,,,
ভাইয়া ঃ সেইটা তো আমি নিজেই খুজে নেবো।
আগেই বলে রাখি অধরা ভাইয়াকে খুব ভয় পায়।কারণ অধরার কোন বড় ভাই নাই। বড় ভাই তো দুরের কথা অধরা আসলে ওর বাবা-মার একমাত্র সন্তান।সেই ছোট বেলা থেকেই অধরা ভাইয়াকে খুব ভয় পায়।
ভাইয়া চলে গেলো। আমি অধরাকে অভয় দিয়ে বললাম।
আমি ঃ ভয় পেয়ো না আমি তো আছি,,,,,, আর আমার একটা প্রশ্ন আছে?
অধরা ঃ হুমমমম,,, কি প্রশ্ন??
আমি ঃ মনে কর তোর যে ৪ টা বয়ফ্রেন্ড আছে। সেই ৪ জনের সাথেই যদি তোর বিয়ে হয়, আর ৪জনের সাথেই এক সাথে বাসর হয় তখন তোর কেমন হবে।
অধরা ঃ (কিছুক্ষণ চিন্তা করে) মানে কি (চিতকার করে) ছিঃছি তুই এই সব কি বলছিস
আমি ঃ বাহ রে তুমি প্রেম করবা আর আমরা বললে দোষ।
অধরা ঃনা মানে অত জনের সাথে আমার বাসর হলে কি আমি আর আমি বেচে থাকবো।
কথা শুনে হাসবো নাকি কাদবো বুঝতে পারছি না। ওকে আরেকটু ভয় দেখিয়ে বললাম।
আমি ঃ এতক্ষণে তো ভাইয়া মনে হয় ছেলেটা খুজে বের করে ফেলছে।
তাকিয়ে দেখি অধরা খুব ভয় পেয়ে গেছে। কান্না করে দেবে এমন অবস্থা।
আমি ঃ এখন বল কি করবি
অধরা ঃআমি ভেবেছি আর কখনো এইসব করবো না।(অধরা কান্না করতে করতে)
আমি ঃ আরে কাদছিস কেনো আমি আছি তো
সেইদিনের মতো চলে গেল।পরের দিন যেই ছেলেটা আধরার হাত ধরে টানাটানি করছিলো সেইছেলেটা এসে আমার কাছে মাফ চাইছে। আমি বরাবরের মতই তাকে মাফ করে দিলাম।
এরপর ছেলেটা অধরার কাছে মাফ চাইলো
ছেলেটা ঃ অধরা প্লিজ আমাকে মাফ করে দাও ওরা আমাকে খুব মেরেছে। প্লিজ আমি তোমার হাত ধরে বলছি আমাকে প্লিজ মাফ করে দাও।
আমি ঃঠাসসসসসসসসসসসস।সালা যেইজন্য আজকে তোর এই অবস্থা,,,, তুই আবার সেই একই কাজ করছিস। তুই কোন সাহসে অধরার হাত ধরলি?
ছেলেটা ঃ( কান্না কান্না ভাব) অধরা আমি তোমার পাঁ ধরছি আমাকে তুমি মাফ করে দাও।
ছেলেটা জেই অধরার পা ধরতে যাবে,,, অমনি অকে ধাক্কা দিয়ে।
আমি ঃতোর এত্তো বড়ো সাহস তুই আমার বউ এর পা ধরতে চাস।
সবাই (খালামনি, ভাইয়া)কেমন জেনো আমার দিকে তাকিয়ে আছে। শুধু অধরা নিচের দিকে তাকিয়ে আছে
আমি ঃ কি ব্যাপার তোমরা আমার দিকে এইভাবে তাকিয়ে আছো কেনো।
ভাইয়া ঃ তুই একটু আগে কি বললি?
আমি ঃ কত বড় সাহস আমার বউয়ের হাত ধরে,, (একথা বলেই মুখ চেপে ধরলাম। এটা আমি কি বলে ফেললাম)
না মানে এইটা তো আমার মুখ ফসকে বেরিয়ে গেছে।
এই কথা বলে কোন মতে চলে আসলাম সেখান থেকে।
কেটে গেলো কয়েক সপ্তাহ। এখন অধরা সারাক্ষন আমার সাথে থাকে। আমার সাথে গল্প করে,ওর মনের কথা শেয়ার করে। (তবে কিছু দিন থেকে মনে হচ্ছে অধরা আমাকে কিছু একটা বলতে চায়।)
তো একদিন ঘটে গেলো এক অকল্পনীয় ঘটনা। যা আমি কল্পনাও করতে পারি না।
আমি অধরার রুমে গিয়ে দেখি ও রুমে নেই। আর ওর বিছানায় খুব সুন্দর একটা ডাইরি। তো আমি কৌতুহল বসত ডাইরিটা হাতে নিলাম পরার জন্য।[বিঃদ্রঃ কারো ব্যাক্তিগত জিনিসে হাত দেয়া ঠিক না।ডায়েরিতে তো অবশ্যই না।]
কিন্তু পরা আর হলো না। এতো সুন্দর হাতের লেখা কারো হতে পারে। আমি ডাইরির পেজ উল্টাচ্ছি আর লেখা গুলো দেখছি। এমন সময় অধরা কোথা থেকে জেনো এসে
অধরা ঃঠাসসসসসসসসসসসস।তোর সাহস কি করে হয় আমার ডাইরি পরার। (চিৎকার করে)
আমি ঃ (অবাগ হয়ে) তুই আমাকে মারতে পারলি। আর আমি তোর ডাইরি পড়ি নাই।(কথা শেষ করার আগেই।)
অধরা ঃ চুপ একদম চুপ, তোকে চেনা হয়ে গেছে আমার। তুই এক্ষুনি বের হয়ে যা আমার বাসা থেকে।
আমি কথা বলার ভাসা হারিয়ে ফেলেছি।
অধরা ঃ কি হলো তুই এখনো দারিয়ে আছিস কেনো। দূর হ আমার চোখের সামনে থেকে।
আর দেরি করলাম না সোজা রুমে গিয়ে ব্যাগ গুছিয়ে চলে আসলাম স্টেশন এ খালামনি কেও কিছু বলিনি। জানি বললে আস্তে দেবে না। কিন্তু প্রিয় মানুষের এতো বড়ো আঘাত আমি মেনে নিতে পাচ্ছি না। কি দোষ ছিলো আমার। আমি তো ওর ডায়েরি পড়িই নাই।
অধরা আমার সাথে এমনটা করতে পারলো। চোখ দিয়ে কয়েক ফোটা অশ্রু গরিয়ে পড়লো।
কিন্তু আমাকে যে যেতেই হবে। ও যে আর আমার মুখ দেখতে চাই না।
বড্ড বেসি অভিমান হচ্ছে পাগলিটার ওপর। কি দোষ করে ছিলাম আমি। এইসব কথা ভাবছি আর চোখ দিয়ে অঝোর নয়নে পানি পরছে। আসলে ওকে একটু বেশি ভালোবেসে ফেলেছি তো। তাই কস্ট টা মেনে নিতে পাচ্ছি না ।
আসে পাশের মানুষ গুলো কেমন করে জেনো তাকিয়ে আছে আমার দিকে। হয়তো ভাবছে ছেলেটা কাদছে কেন।
নাহ আর ঠিক থাকতে পারছি না। খুব কস্ট হচ্ছে আমার। চিৎকার করে কাদতে ইচ্ছে করছে। (মাথা নীচু করে বসে আছি।আর ভাবছি এই জীবনে অধরাকে না পেলে আর বিয়েই করবো না)
হঠাৎ কারো কান্নার আওয়াজ আসছে। (আমার মতো আর কার এত কস্ট হতে পারে যে স্টেশন এ কাদছে। সামনে তাকিয়ে দেখি,,,,,,,
আমি ঃ কিরে তুই এখানে আর তুই কাদছিস কেন ( বলতে বলতে আমি দারিয়ে গেছি)
হঠাৎ অধরা আমাকে জরিয়ে ধরে ফুপিয়ে কান্না শুরু করল। (যার জন্য আমি একদম প্রস্তুত ছিলাম না)
আধরা ঃ চলে যাচ্ছিস আমাকে ফেলে। একবার চলে যেতে বলেছি বলে চলে যাচ্ছিস।তুই কেনো বুজিস না আমি তোকে কতটা ভালবাসি।তোকে কতোভাবে বুঝিয়েছি যে আমি তোকে ভালবাসি।তুই বুজিস না কেনো। আর এখন নিজেও কস্ট পাচ্ছিস, আর আমাকেও কস্ট দিচ্ছিস। জানিস তোর সাথে তখন কেনো এতো খারাপ ব্যবহার করেছি।খুব রাগ ছিলো আমার তোর ওপরে তুই আমার ভালবাসা বুঝিসনাই তাই। তাই তোকে ইচ্ছা মতো বকে দিয়েছি। আর তুই হয়তো আমার ডাইরিটা সত্যিই পরিসনি ।ডাইরির প্রতিটা পাতায় যে শুধু তুই।(একদমে অধরা কথা গুলো বললো)
জানিনা কেনো আমি অধরার প্রতি রাগ করতে পারছি না।আমার তো এজন্য রাগ হচ্ছে যে, আমি কেনো ওর প্রতি রাগ হতে পাচ্ছি না। অধরা এখনও আমাকে খুব শক্ত করে জরিয়ে ধরে আছে।
স্টেশনের সবাই কেমন অদ্ভুদ ভাবে তাকিয়ে আছে। সবাই কি ভাবছে,,কে জানে?
অধরা ঃকিরে তুই আমাকে ভালোবাসবি না।তুই আমাকে গ্রহন করবি না। তাকা আমার দিকে।
অনিচ্ছা শর্তে তাকালাম ওর দিকে।।। আবার হারিয়ে গেলাম ওর মাঝে। সেই মায়াভরা চোখ, লাল টুক টুকে হয়ে আছে চেহারা । কেদে কেদে চোখ দুটো ফুলিয়ে ফেলেছে।
আর পারলামনা অভিমান করে থাকতে জরিয়ে ধরলাম খুব শক্ত করে জেনো ছেড়ে জেতে না পারে কোনও দিনো।
ওর মুখ টাকে সামনে এনে আবার আমি ওর দিকে এগুচ্ছি। এখন আমি ওর নিশ্বাস এর শব্দটা অনুভব করতে পারছি। হঠাৎ ফু দিলাম ওর চোখে। ও চোখ বন্ধ করে ফেলেছে।
আর আমি এই সুজোগে ওকে ছেরে দিয়ে হাটু গেরে বসে একটা লাল গোলাপ ফুল দিয়ে _
তুমি কি আমার হাসি মুখের কারন হবে,,,
তুমি কি আমার জ্যোৎস্না রাতের শঙ্গি হবে,,,
তুমি কি আমার শীতের রাতের চাঁদর হবে,,,
কি অপরুপ সৃস্টি, মুখে হাসি চোখে জল।মনে হয় সারাটি জিবন এই ভাবে তাকিয়ে থাকি।
অধরা ঃ ছেড়ে যাবে না তো কখনো ও
আমি ঃ জীবন থাকতে না।
এর পর থেকে শুরু হল এক নতুন কাহিনী
আচ্ছা গল্পটা কি এখানেই শেষ। না গল্পটা এখানেই শেষ নয়।
এর পর কেটে গেছে
১ বছর
২ বছর
৩ বছর
৪ বছর
৫ বছর
এখন আমি আর অধরা অধরাদের বাসার ছাদে বসে চন্দ্র বিলাস করছি।
হ্যা অধরা আর আমার বিয়ে হয়েছে। আর এখন আমরা ছাদে বসে আমাদের বাসর রাতকে স্বরনীয় করার চেস্টা করছি।
আমি ঃ আচ্ছা অধরা তোর কি কোন সপ্ন আছে। যা পূরন করার খুব ইচ্ছে তোর। (দুজনে বসে চাঁদ দেখছি।)
অধরা ঃহুম আছেতো অনেক। তোরও কি স্বপ্ন আছে?
আমি ঃ হুমমমম, অনেক দিনের ইচ্ছে আছে একটা।যা পূরন করার খুব সখ।
অধরা ঃ (একদম আমার কাছে এসে) কি স্বপ্ন?
আমি ঃ তুই আর আমি আমরা দু'জনে হেটে যাবো গ্রামের সেই আঁকা বাকা পথে। গভীর রজনী তে কোন এক জ্যোৎস্না বিলাসি রাতে। পথের দু পাশে ছোট বড়ো গাছের ফাকে দিয়ে আসা জোস্নার আলোয় তোর মায়াবি মুখ,, এ জেনও এক আলো আধারের খেলা। রোমাঞ্চকর এই মুহুর্তে শুধু তুই আর আমি । তোর পায়ের ঝুমঝুম নূপুরের শব্দে জেনো মাতাল করে রাখছে প্রকৃতি। জেন ভয়ের বিন্দু মাত্র রেশ নেই এ মদ্ধরাতে।
অধরা ঃ (খুব আগ্রহি হয়ে) তারপর
আমি ঃ লোকালয় পেরিয়ে, গাছ পেরিয়ে হেটে যাবো বুহুদুর।পায়ের নিচে পড়া গাছের শুকনো পাতার মরমর শব্দ । যেখানে দাড়িয়ে ভেবে যাবো পিছনে ফেলে আসা প্রকৃতি। যেখান থেকে লোকালয় বহুদুর। পেছনে ফেলে এসেছি দূর বহু দূর,সামনে তাকালেও লোকালয় বহুদূর। ডানে আর বামে সবুজ ফসলের মাঠ।
দূরের ঐ নিল আকাশে থালার মতো পুর্ন চাঁদ।যেনো এর সমুজ্জ্বল আলো তোমারি গায়ে এসে পড়ছে। কি এক অপরুপ সে দৃশ্য। আর তারা ★ দের লুকোচুরি। এ জেনো রোমান্টিকতার শীর্ষে। এ জেন আমরা চলে এসেছি এক রুপ কথার দেশে। যেখানে শুধু সুখ আর সুখ। সেখানে বসে তুমি আর আমি চন্দ্র বিলাস করব।
আমি ঃ আচ্ছা তুই কি জানিস তখন সময় কতো❓ (বস্তবে ফিরে)
অধরা ঃ না( কিছুটা বিরক্ত হয়ে)
আমি ঃ তখন সময় রাত ২: ৩০ মিনিট। আমি অধরার চোখে চোখ রেখে_
জানিস আজ আকাশে এতো সুন্দর চাঁদ উঠেছে কেনো❓
অধরা ঃ ___
আমি ঃ তোর আর আমার ভালবাসার চিরসাক্ষি হবে তাই।
জানিস আকাশে এতো তারার ☆ লুকোচুরি কেনো❓
অধরা ঃ _
আমি ঃ আমাদের এতো ভালোবাসা দেখে তারাদের যে হিংসে হয়।
(আমাদের দেখে হয়তো বাতাসেরও ভালো লেগেছে, তাইতো এমনও মুহূর্তে বয়ে গেলো হৃদয় শীতল করা বাতাস। এ সময় কখনোই ভুলবার নয়।)
আমি ঃ আজকের এই আকাশ সাক্ষী, বাতাস সাক্ষী, সাক্ষী ঐ নীল আকাশের ধ্রুব তারা ☆
এই হৃদয়ের সবটুকু দিয়েই ভালোবাসি শুধু তোমায় "অধরা"
বাস্তবে এসে,,
আরে পাগলী তুই কাদছিস কেনো।
অধরা ঃ তুই আমায় এতো ভালোবাসিস। আমায় ভুলে জাবিনা তো কখনও। ( আমায় জরিয়ে ধরে)
আমি ঃ কখনোই না। ( আস্তে আস্তে ওর কাছে গিয়ে, সেই ১ম & ২য় বারের মতো এবারও ওর ঠোঁট গুলো কাপছে মুখটা লাল হয়ে গেছে। আমি ওর নিশ্বাস এর শব্দ সুনতে পাচ্ছি। তারপর সময় স্তব্ধ।
আমি ঃ এরবার না! চার ঠোঁট এক করে দিলাম। এখন আর নেই কোন বাধা। উম্মম্মম্মম্মমম্মমমম্মমম্মমাহ
আচ্ছা গল্পটা কি এখানেই শেষ❓ হ্যা গল্পটা এখানেই শেষ।
সমাপ্ত
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন