পাগল পর্বঃ ৩ (শেষ)
পর পর আরও চারটা মেয়ের লাশ পাওয়া গিয়েছে শহরের বিভিন্ন কোনায়৷ বিষয়টা নিয়ে এখন দেশ জুড়ে বেশ তোলপাড় চলছে৷ কেসটা এখন পুরোপুরি প্রশাসনের হাতে চলে গিয়েছে৷ জলিল মিয়া কেইসের দ্বায়িত্বে না থাকলেও তাকে স্থির বসে থাকতে দেখা যায় না৷ উপর মহল থেকে বেশ চাপের উপরেই আছেন তিনি৷ প্রথম দুইটা লাশের পোস্টমর্টেম আজমল করলেও কেসটা প্রশাসনের হাতে চলে যাওয়ার পর সেটার দ্বায়িত্ব পেয়েছেন ডঃ ইবসেন৷ এই বিষয়টা নিয়ে আজমলকে দেখলাম সে বেশ চিন্তিত৷ প্রথম চারটা লাশের পোস্টমর্টেম করার পর তার দেওয়া মতামত অনুযায়ী এটা কোনো মানুষের কাজ না এক অলৌকিক শক্তি করেছে৷ এই বিষয়টা নিয়েও এখন বেশ তাল মাতাল অবস্থা চলছে৷ মানুষের মাঝে এক ভয় কাজ করছে কেউ প্রয়োজন ছাড়া যেনো সন্ধ্যার পর বাসা থেকেই বের হতে চাননা৷ ডঃ ইবসেন বাকি দুইটা লাশের পোস্টমর্টেম করার পর মিডিয়াকে জানিয়েছেন
"এটা কোনো অলৌকিক শক্তি বা ভুতপ্রেত এর কাজ নয় বরং মানুষই করেছে। যে এই কাজটা করেছে সে বেশ নিখুঁত ভাবে সব কিছু করেছে৷ আমি লাশ দুইটার শরীরে নখের আঁচড়ের দাগ পেয়েছি সেটা কোনো জন্তু বা জানেয়ারের নখের আঁচড়েরই দাগ তবে সেগুলো ব্যবহার করা হয়েছে৷ এটা প্রমাণ করার জন্য যে এটা মানুষের কাজ না৷ তাদের ক্ষতস্থানটা তেমন বেশি না যেটা থেকে বোঝা যায় এটা মানুষের কাজ। ডঃ আজমল মাহমুদ স্যার বাকি চারটা লাশ নিয়ে কি মতামত দিয়েছেন আমি দেখেছি৷ তবে আমি যদি সেগুলো দেখতে পারতাম তাহলে বোধ হয় বিষয়টা ক্লিয়ার হওয়া যেতো৷ তিনি আমার থেকে বড় মাপের ডাক্তার বুঝতে পারছি না কোন কথার উপর ভিত্তি করে তিনি এসবকে অলৌকিক শক্তির কাজ দাবি করেছেন৷ যে খুন গুলো করেছে সে একটা সাইকো ছাড়া আর কিছুই না৷ "
এই সবকিছুর মাঝে একটা বিষয় খেয়াল করে দেখেছি যে সকল মেয়ে মারা গিয়েছে তাদের সকলেই বাড়ি থেকে বের হয়েছিলো রক্ত দেবার কথা বলে৷ কেসটার অনুসন্ধান আমাকে লুকিয়ে লুকিয়ে করতে হচ্ছে যেহেতু এটা এখন পুরোপুরি প্রশাসনের হাতে আর আমি অফিসিয়ালি চাকরি করছি না তাই আমাকে এটা থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে৷
সকালে আজমল ফোন করে তার বাসায় আসতে বললো তার কন্ঠ শুনে তাকে বেশ ভৃত মনে হচ্ছিলো তাই তাড়াতাড়ি ওর বাড়িতে এসেছি৷ এখন দুজনে সামনা সামনি বসে আছি৷ ঘরের চারপাশটায় বেশ জিনিসপত্র ভাঙচুর করে ফেলে রাখা হয়েছে। সে চেয়ারে গুটিসুটি মেরে বসে আছে৷ তার শরীর কাঁপছে চোখে ভয়ের চিত্র।
-আজমল তুই ঠিক আছিস?
- হ্যা আমি ঠিক আছি ( তার চোখে মুখে এখনও ভয়ের ছাপ স্পষ্ট ফুটে উঠছে)
- ঘরের এই অবস্থা হলো কি করে?
- ও ও করেছে।
- ও করেছে মানে বুঝলাম না?
- ও-ই লোকটা করেছে ( হাতের ঈশারা দিয়ে আমার পিছনের দিকে দেখালো)
- কোথায় ওখানে তো কেউ নেই।
- আরে ওইযে ওখানে দাঁড়িয়ে আছে আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে।
এক দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়লাম। আজমলের মাথা ঠিক নেই এই কয়েকদিনে সে অনেকটা বদলে গিয়েছে৷
- আচ্ছা মানলাম সে করেছে কিন্তু কেনো এসব করেছে?
- কারণ আমি ওই লাশ গুলোর পোস্টমর্টেম করেছিলাম।
- মানে তুই বলতে চাচ্ছিস যে ওই মেয়ে গুলোকে খুন করেছে সেই তোর সাথে এটা করেছে?
- হ্যা
- আজমল আমার মনে হয় তোর ডাক্তার দেখানো উচিত তাছাড়া তুই তো এমন ছিলিও না৷ তোর মনে আছে কলেজে থাকতে তুই একদিন ভুত সেজে হোস্টেলের দাড়োয়ানকে কি ভয়টাই না দেখিয়েছিলি আর আজ সেই তুই কিনা ভুতে ভয় পাচ্ছিস।
কথাটা শেষ করতেই হঠাৎ করে মনে হলো কেউ একজন পিছন থেকে আমার মাথায় সজোড়ে আঘাত করেছে৷ মাথায় হাত দিয়ে নিচে লুটে পড়ার সময় দেখলাম আজমল কেমন ভয়ার্ত দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। যখন জ্ঞান ফিরলো তাকিয়ে দেখি আমি আজমল এর বিছানায় শুয়ে আর আজমল আমার পাশে বসে আছে৷ তার চোখে মুখে ভয়ের কোনো চিহ্ন নেই৷ মাথায় প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করছি।
- দেখেছিস তুই ওকে অবমাননা করাই সে তোর কি হাল করেছে৷
আমি কোনো কথা বাড়ালাম না৷ বিছানা থেকে উঠে বের হবার প্রস্তুতি নিচ্ছি৷ আমি নিশ্চিত এটা কোনো মানুষের কাজ হবে তবে সেটা কে? আজমল না সে তো আমার সামনে ছিলো তাহলে?
দরজা থেকে বের হবার সময় আজমল বলে উঠলো
- সে আমাকে এটাও বলেছে যে তাকে বিশ্বাস করবে না তাকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে।
আজমল পাগল হয়েছে।
পরের দিন সকাল ৭ টা। এক ফোন কলের মাধ্যমে নিজের ঘুমটা ভেঙে গেলো৷ জলিল মিয়া ফোন করেছে ডঃ ইবসেন এর লাশ পাওয়া গিয়েছে তার বাড়ির পাশের নর্দমায়৷ তাকেও ঠিক অন্যসব মেয়েদের মতোই খুন করা হয়েছে৷ বিষয়টা নিয়ে আবারও মিডিয়ায় তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছে। ডঃ ইবসেন মারা যাওয়ায় যেনো মানুষের মাঝে ভয়টা আরও তিব্র হয়ে জন্ম নিয়েছে৷ হঠাৎ করেই কালকে বলা আজমল এর কথাটা মনে হলো সে বলেছিলে যে তাকে অবমাননা করবে তাকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। তাহলে কি আজমল যা বলছে সব সত্য? এর মানে কি আমার জীবনেরও ঝুঁকি রয়েছে? কিছু একটা তো আছে তবে সেটা কি? কি মিস্টেক হচ্ছে? ওয়েট এ মিনিট
" হ্যালো জলিল স্যার"
- হ্যা অনিকেত বলো।
- আপনি কেথায় আছেন এখন?
- ডঃ ইবসেন এর বাসায় কেনো?
- দ্রুত একটু আমার সাথে আসুন মনে হয় আমি খুনি কে খুজে পেয়েছি
- মানে কি বুঝাতে চাইছো তুমি?
- সেটা নিয়ে পড়ে আলোচনা করা যাবে দ্রুত আসুন।
- কি ব্যাপার অনিকেত তুমি আমাকে আজমল এর বাসায় নিয়ে আসলে কেনো?
- খুনি কে খুজতে হলে আজমল কে আমাদের দরকার হবে।
আজমল দরজা খুলেই আমাদের দেখে যেনো কিছু অবাক হলো৷
- স্যার সকাল করে আপনি এখানে?
- অনিকেত নিয়ে আসলো এই সকল খুনের পেছনে কে আছে সেটা নাকি অনিকেত খুজে পেয়েছে আর তুমিও নাকি চিনো।
- কে আমি? কই নাতো অনিকেত আমাকে তো কিছু বলেনি৷
- বলছি ভিতরে গিয়ে বসি চল।
- ও হ্যা আয়
- আজমল তুই ঠিকই বলেছিস এই সব কিছু এক অলৌকিক শক্তিই করেছে।
আমার কথায় আজমলের ঠোঁটের কোনে দেখলাম এক চাপা মৃদু হাসি৷
- তুই শুনেছিস ডঃ ইবসেন মারা গিয়েছে?
- হ্যা খবরে দেখলাম তাকে ঘিরেই তো মিডিয়া এখন তোলপাড় হয়ে আছে৷
- আচ্ছা এক কাপ চা হবে? চা খেতে খেতে গল্প করা যেতো?
- আচ্ছা ওয়েট কর আমি বানিয়ে নিয়ে আসছি।
আজমল উঠে কিচেন রুমের দিকে গেলো৷
- এটা কি অনিকেত তুমি বললে খুনি পেয়েছো আর এখানে বসে চা খাবে?
- পেয়েছি তো ওইযে এক অলৌকিক শক্তি চিন্তা করবেন না আস্তে আস্তে পুরো বিষয়টা ক্লিয়ার হয়ে যাবে শুধু আপনি একটু চুপ করে বসে থাকবেন এই আরকি।
আজমল চা নিয়ে এসেছে।
- আচ্ছা আজমল আজকে আমার তোর সেই গল্পটা আর একবার জানতে ইচ্ছে হচ্ছে৷
- কোনটা?
- আরে ওই যে সেদিন বললি যে বাইরে পড়ার সময় তোর হোস্টেলে পাশের রুমের যেই ছেলেটা মারা গেলো ওইটা৷
আজমল বেশ নড়ে চড়ে বসলে যেনো গল্পটা বলার জন্য সে তৈরি হয়ে বসে আছে৷
- পুরোটা বলতে হবে না আচ্ছা তার আগে একটা কথা বল তোর পাশের যে রুম মেট টা ছিলো তার রুমে যাবার জন্য কি রুমের মাঝে অন্য কোনো দরজা ছিলো সদর দরজা বাদে?
আজমল বেশ কিছুক্ষণ ভাবার পর জবাব দিলো
" হ্যা ছিলো "
- আচ্ছা তুই বলেছিলো একদিন রাতে এক ডিটেকটিভ ছিলো আর সেই রাতে তুই সেই রুম থেকে দু'জনের গলার আওয়াজ শুনতে পেয়েছিলি
- হ্যা
- তাহলে মাঝের দরজাটা খুলে সেই রুমে ঢুকে দেখলি না কেনো অন্যজন কে ছিলো।
আজমল বেশ কিছুটা নড়েচড়ে বসলো।
- আমি তোকে বলেছি আমি ভুতে ভয় পায় আর সে জন্যই আমার সাহস হয়নি কিন্তু হঠাৎ এত কিছু জানতে চাইছিস কেনো?
- কারণ সেই দ্বিতীয় জনের আওয়াজটা আর কারও না সেটা তোরই আওয়াজ আর সেই দ্বিতীয় লোকটা তুইই ছিলো।
আজমলের হাতে থাকা চায়ের কাপটা নিচে পড়ে গেলো। তার কপাল বেয়ে মৃদু ঘাম ঝড়িয়ে পড়ছে৷ জলিল মিয়া অবাক হবার দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
- অনিকেত তোর মাথা ঠিক আছে তুই কি বলছিস?
- হ্যা বলছি কিভাবে,,,তোকে কালকে বলেছিলাম তুই কখনই ভুতে ভয় পেতি না বরং মানুষ কে কিভাবে ভয় দেখানো যায় সেই কৌশল খুজে বেড়াতি৷ তুই বিদেশে থাকা কালিন যখন তোর পাশের রুমমেট মারা গেলো তখন তুই সেটার সুযোগ নিলি মানুষকে ভয় দেখানোর৷ যে-ই সে রুমে থাকতো কোনো না কোনো ভাবে তুই তাদের ভয় দেখাতি আর এই ভয়টা তাদের মাথায় এমন ভাবে গেঁথে যেতো যার ফলে হয়তো তারা পাগল নয়তো মারা যেতো৷ কিন্তু তুই সেই ডিটেকটিভ কে ভয় দেখাতে গেলে সে ভয় পায় না৷ আর এর পেছনের আসল রহস্য মানে তোকে খুজে বের করে৷ যার পর তোদের দুজনের মাঝে এক কথা কাটাকাটির সৃষ্টি হয় এমন পর্যায়ে তুই তাকে মেরে ফেলিস৷ আর সেটা থেকে বাঁচার জন্য তার লাশটা নর্দমায় ফেলে রাখিস যেনো মনে হয় এটা সেই ছেলেটার আত্মা করেছে যেমনটা ঠিক তুই ডঃ ইবসেন এর সাথে করেছিস৷
- অনিকেত এটা বেশি হয়ে যাচ্ছে
আজমল কথাটা বলে চেয়ার ছেড়ে উঠে কোমরের পিছন থেকে পিস্তল বের করে আমার মাথার কাছে ধরতেই জলিল মিয়া নিজের পিস্তলটা বের করে আজমল এর বা হাতের বাহুতে শুট করে বসে৷ আজমল নিচে ফ্লোরে শুয়ে পড়েছে৷ আমি তার কাছ থেকে পিস্তলটা নিয়ে ক্ষত স্থানটা এক শক্ত কাপড় দিয়ে বেধে আজমল কে আবারও চেয়ারে বসিয়ে দিলাম৷ সে ব্যাথায় গোংরানির আওয়াজ বের করছে৷
- এখন বল এই খুন গুলো তুই কেনো করেছিস?
আজমল কোনো কথা না বলে হো হো করে হেঁসে উঠলো। তার হাসির আওয়াজই বলে দিচ্ছে সে এই বিষয়টা নিয়ে খুশিই হয়েছে৷
- হ্যা অনিকেত তুই ঠিকই ধরেছিস আমিই করেছি। কারণ আমি মানুষকে ভয় দেখাতে ভালোবাসি আর আমি চাই মানুষ ভুতে ভয় করুক৷ তারা যখন ভয় পায় তা দেখলে আমার কাছে সেটা ভালো লাগে৷ হ্যা সেই মেয়ে গুলোকে খুন আমিই করেছিলাম৷ কারণ আমি চেয়েছিলাম পুরো দেশে এটা ছড়িয়ে পড়ুক মানুষ বিশ্বাস করুক অলৌকিক শক্তি বলতে কিছু আছে হা হা হা হা হা হা।( এক বিদঘুটে হাসি দিয়ে)
আর মেয়ে গুলোকে মারার সময় যখন তারা বাঁচার জন্য আমার কাছে আর্তনাদ করে আমি বলে বোঝাতে পারবো না তখন যে আমার কি খুশি লাগে।
- আজমল তুই একটা সাইকো। আর একটা সাইকো ছাড়া এই কাজ আর কেউই করতে পারে না৷ তোর পাগলামোর জন্য কত গুলো নিরিহ মেয়ের প্রাণ গেলো এটা নিয়ে কি তোর মনে বিন্দুমাত্র অনুশোচনা বোধ কাজ করছে না৷
আজমল কোনো কথা বলছে না হেসেই চলেছে৷ যেনো সে এই বিষয় গুলো নিয়ে সে কোনো লজ্জিত নেই৷
- একটা কথা বল আকবর মোল্লার মেয়ের শরীর থেকে তুই রক্ত বের করলি কি ভাবে৷
আজমল হেসে উঠে৷
- তাকে তো মেরেছিলাম পরম যত্নে৷ সত্যি বলতে তাকে মেরে যা শান্তি পেয়েছি তার আর কাউকে মেরে পায়নি৷ তুই জানিস তার রক্ত দিয়ে আমি গোসলও করেছিলাম আহ্ কি গন্ধ ভাবলে এখনও ইচ্ছে করে যদি আবারও তার রক্ত পেতাম৷
আজমল এতটুকু বলে থামে তবে সে বলে না কিভাবে সে রক্তগুলো বের করে নিয়েছে৷
- ডঃ ইবসেন কে খুন করলে কেনো? (জলিল মিয়ার প্রশ্ন)
- কারণ সে মানুষকে বলেছে ওই খুন গুলো কোনো জন্তু জানোয়ার নয় বরং মানুষই করেছে আর সে আমাকে অপমানও করেছে৷ মানুষকে বিশ্বাস করানোর জন্য তাকে খুন করাটা দরকার ছিলো৷ তার আগে অনিকেতকে কালকে তখনই যদি খুন করে ফেলতাম তাহলে বোধ হয় আজ আমি ধরা পড়তাম না৷
এতটুকু বলে আজমল আবারও হো হো করে হেঁসে উঠে।
- আজমল ভাবতেই ঘৃণা লাগে তোর মতো একজন ডাক্তার এতো জঘন্য কাজ করতে পারে৷ তুই আসলেই একটা সাইকো৷ এখন তোর ব্যবস্থা তো প্রশাসনই করবে৷ জলিল স্যার নিয়ে চলেন ওকে৷
জলিল মিয়া আজমল কে থানায় নিয়ে যায়৷ যাবার সময় বলেছে
"আজমল এর মতো ছেলে! ছি ভাবতেই অবাক লাগে। ধন্যবাদ অনিকেত তোমার জন্যই তাড়াতাড়ি খুনিকে পেয়েছি নয়তো এটা এভাবেই চলতে থাকতো। আবার অফিসে জয়েন করো না কেনো তাহলেই তো ভালোভাবে কেস এর অনুসন্ধান করতে পারবে৷
- না স্যার তার দরকার পড়বে না৷
আমি সেখাম থেকে এসে রফিকের চায়ের দোকানে বসার সময় দেখলাম সেদিনের সেই লোকটা আজকেও বসে আছে৷
- রফিক চা দাও
- দিতাছি ভাই
লোকটা আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে৷ তার চোখ মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছে সে এখনও উত্তর পাবার আশা কৌতুহল আছে৷
চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে লোকটা বলতে শুরু করলাম
- দেখেন ভাই আপনি যখন কড়া চা খাবেন সেটার এক রকম স্বাদ৷ দূধ চায়ের এক রকম স্বাদ। আর যদি কড়া চায়ের মাঝে সামান্য দূধ দিয়ে চা খান সেটা অন্যরকম স্বাদ পাবেন কিছুটা কড়া কিছুটা দূধ। আর এই দূধ দেবার কারণে কড়ার যে ভাব কিছুটা কেটে যায় সেটাইকেই বলে বলে কড়া করে হালকা দূধচা।
লোকটা আমার কথা শুনে হা করে মুখের দিকে তাকিয়ে বললো " আচ্ছা"
সে যে বুঝেনি এটা স্পষ্ট তারপরও বুঝেছি সরুপ উত্তর৷ আমি যে লোকটাকে কি বুঝিয়েছি সেটা আমি নিজেও জানি না৷ চা শেষ করে সিগারেট ধরিয়ে বাসার পথে হাঁটা দিলাম৷
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন