অভিনয়
পর্বঃ১০
এই কান্না করতে করতে তো চোখ লাল করে ফেলেছ এইবার কান্না থামাও প্লিজ..
তিশা;না থামাবো না আমি কান্না করবো..
মামুনঃকেনো কান্না কেনো করবে?
তিশাঃতুমি আমার জন্য ব্যাথা পেলে তাই কান্না করবো
মামুনঃআচ্ছা তুমি কান্না করলে কি আমার ব্যাথা কমে যাবে..
তিশাঃঅহহ হ্যা তাইতো আমি সেই কখন থেকে কান্না করে যাচ্ছি তোমার পা কেটে গেছে মলম দিতে হবে তো,,আচ্ছা তুমি একটু বস একদম উঠবে না আমি মলম নিয়ে আসছি..
তিশা মলম আনতে চলে গেলো..
আর মামুন ভাবছে একটা মানুষের সাথে অন্য একটা মানুষের এতো মিল কিভাবে হয়??
তিশা মলম নিয়ে এসে মামুনের পায়ে লাগিয়ে দিলো.
তারপর ফ্লোরে পরে থাকা কাচের টুকরো গুলো পরিষ্কার করে নিলো...
রাতে খাওয়া দাওয়া শেষ করে যে যার যার মত ঘুমাতে চলে গেলো..
মামুন আর তিশা পাশাপাশি ঘুমালেও মামুন কখনো তিশাকে স্পর্শ করেনি।।
ঘুমের ঘোরেই হঠাৎ মামুন কি যেনো বলছে শুনে তিশার ঘুম ভেঙে যায়..
তিশাঃমামুন তুমি এইসব কি বলছ??
মামুন কোনো উত্তর না দিয়ে আবোল তাবোল বলেই যাচ্ছে..
তিশাঃকি হলো মামুন তুমি আমার কথা শুনতে পাচ্ছ না এমনভাবে প্রলাপ কেনো বকছ
এই বলে যখন তিশা মামুনকে ধাক্কা দিলো..
মামুনের শরীর অনেক গরম তিশা সেটা বুঝতো পেরে মামুনের মাথায় হাত দিয়ে দেখে শরীরে অনেক জ্বর
মামুন এই মামুন.
ওম্মম(আস্তে করে)
তিশাঃতোমার কি খুব বেশি খারাপ লাগছে??
হুম্ম
তিশাঃমাথায় পানি নিবে নাকি জল পট্রি নিবে
মামুন কোনো উত্তর দিলো না..
তবে শরীরে যে পরিমাণ জ্বর তাতে করে মাথায় পানি দিয়ে সারা শরীর মুছে দিলেই ভালো হবে তিশা উঠে পানি আনতে চলে গেলো
কিছুক্ষণ পর এসে বালিশের নিচে একটা বড় পলিথিন দিয়ে মাথায় পানি ঢালতে লাগলো
বেশ কিছুক্ষণ পানি দেবার পর তিশা মামুনকে জিজ্ঞাস করলো এখন কেমন লাগছে??
মামুনঃহুম অনেক ভালো লাগছে।তবে আমার পা খুব ব্যাথা করছে
তোমাকে আমি ব্যাথার ওষুধ খেতে বলছিলাম তুমি তখন খেলে না কেনো দাড়াও আমাএ ব্যাগে দেখি জ্বরের ওষুধ আছে কিনা দেখি..
তিশা নিজের ব্যাগ খুঁজে ওষুধ বের করলো.
সেটা মামুনকে খাইয়ে দিলো..
সারারাত তিশা ঘুমাতে পারেনি..
কতক্ষণ পর পর মাথায় পানি ঢেলেছে আর জল পট্রি তো দিয়েই গেছে..
রাতের থেকে সকালের দিকে জ্বর অনেক কম..
মামুন ঘুমিয়ে ছিলো তিশা উঠে মামুনের জন্য সুপ করতে গেছে..
সুপ করে নিয়ে এসে মামুনকে ডেকে তুললো.
মামুনঃআমি উঠে বসতে পারবো না আমার ভালো লাগছে না..
তিশাঃএকটু কষ্ট করে উঠে বস,, সুপ টুকু খেয়েই আবার শুয়ে থেকো..
মামুন উঠে বসলো আর তিশা মামুনকে সুপ খাইয়ে দিচ্ছিলো..
মামুনঃএই তোমার চোখ এতো ফুলছে কিভাবে?
তিশাঃমনে হয় সারারাত ঘুমাইনি তাই এতো ফুলেছে..
মামুন;তুমি কিছু খেয়েছ??
তিশাঃনাহ তোমাকে খাইয়ে দিয়ে তারপর খাবো
আর তারপর তোমাকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাবো..
মামুনকে সুপ খাইয়ে দিয়ে তিশা নিজেও কিছু খেয়ে নিলো কিন্তু খেতে একদম ইচ্ছা করছিলো না..তাই অল্প কিছু খেয়ে রেডি হয়ে মামুনকে নিয়ে বের হলো..
ডাক্তারকে দেখিয়ে ওরা বের হলো..
মামুনঃএই আমার না ঘুরতে যেতে ইচ্ছা করছে
তিশা;কি বলো এই শরীর নিয়ে তুমি ঘুরতে যাবে?ম
মামুনঃহ্যা চলো না আমরা ঘুরতে যাবো চলো চলো..
তিশাঃআচ্ছা বাবা যাবো কিন্তু কোথায় যেতে হবে বলো?
মামুনঃআমরা পাহাড় দেখতে যাবো..
তিশাঃএই তুমি কি বলো এই শরীর নিয়ে এতোদূর জার্নি করে যেতে পারবে??
মামুনঃযেতে তো আমাকে হবেই চলো..
তিশা আর কোনো উপায় না পেয়ে যেতে লাগলো..
কিন্তু পাহাড়ি রাস্তায় ঢোকারর আগ মুহূর্তে মামুন বললো.
মামুনঃআমি পানি খাবো গাড়িতে পানি আছে??
তিশাঃনাহ পানি নেই আচ্ছা তুমি একটু বসো আমি ওই দোকান থেকে পানি নিয়ে আসছি..
তিশা পানি আনতে গেলো.।
পানি কেনা শেষে যখন ফিরে তাকিয়েছে তখন দেখে গাড়ি নেই সাথে
মামুনও নেই..
তিশা তো অস্থির হয়ে গেলো।।মামুন গেলো কোথায়??
কোনো উপায় না পেয়ে তিশা মামুনের নাম্বার কল দিলো..
হ্যালো(মামুন)
তিশাঃতুমি কোথায়??
মামুনঃআমি তো পাহাড়ি রাস্তায় ঢুকে গেছি..
তিশাঃমানে কি তুমি গাড়ি ড্রাইভ করছ??
মামুনঃহ্যা করছি জানো একটুর জন্য ট্রাকের সাথে ধাক্কা লাগায়নি..
তিশাঃমামুন তুমি কোথায়?আর যেখানে আছ সেখানেই ব্রেক করো সামনে আর একটুও যাবে না..
মামুনঃসেটা বললে হয়?আজ আমি অধরার কাছে চলে যাবো..
তিশাঃচুপ শয়তান এইসব কি বলছ..
হঠাৎ বিকট একটা শব্দ আসলো.।
তিশাঃএই মামুন কি হলো তুমি ঠিক আছ তো??
মামুনঃআরে হ্যা শুধু গাড়িটাকে গাছের সাথে লাগিয়ে দিছিলাম
তিশাঃদেখো মামুন তুমি কিন্তু বেশি বাড়াবাড়ি করছ??
মামুনঃসেটা তুমি করছ..তুমি অধরা হওয়া সত্ত্বেও দিনের পর দিন তিশার অভিনয় করে গেছ...
তিশাঃআমি অধরা না..
মামুনঃহ্যা মেনে নিয়েছি তুমি অধরা না তাই তো আমি আমার অধরার কাছে চলে যাবো.গাড়ির স্পিড এখন ৮০+
তিশাঃএই স্পিড কমাও এমন রাস্তায় কেও এতো স্পিডে গাড়ি চালায়..কিছু হয়ে যাবে তো..
মামুনঃহবার জন্যই তো চালাচ্ছি আমি অধরাকে ছাড়া আর থাকতে পারবো না..আর শুনো তোমার সাথে আমি অনেক অন্যায় করে ফেলেছি আমাকে মাফ করে দিও..
তিশাঃমাফ কিসের মাফ আর কত কষ্ট দিবি তুই আমাকে..হ্যা আমি তোর অধরা আমি সেদিন আমি মরেনি মরেছিলো আমার ছোট বোন অদিতি..
মামুনঃসত্যি তুমি আমার অধরাতো??
তিশাঃহ্যা আমি অধরা..
মামুনঃআমি বিশ্বাস করিনা,,তুমি যদি অধরা হও তাহলে তুমি আমাদের মাঝে ঘটে যাওয়া একটা ঘটনা বলো যেটা আমি আর তুমি ছাড়া কেও জানেনা..
তিশাঃতুই আর আমি একবার ঘুরতে গেছিলাম সেখানে অই এলাকার মুরিব্বিরা আমাদের নানান ভাবে অপমান করেছিলো..
মামুনঃহ্যা তুমি আমার অধরা ওকে আমি আসছি..
মামুন ফিরে আসলো তিশা এতোক্ষন নানান চিন্তার মধ্যে ছিলো..
মামুন ফিরেছে সেটা দেখে অনেক সস্থি পেলো
কিন্তু গাড়ির অবস্থা খুব খারাপ হয়ে গেছে..
তিশাঃএই তুমি ঠিক আছ তো?তোমার কোনো ক্ষতি হয়নি তোম্ম
মামুনঃআমি একদম ঠিক আছি এখন সব আমাকে বলো কেনো এই নাটক করলে..
বললবো সব বলবো বাসায় গিয়ে বলবো..
তারপর অধরা গাড়ি ড্রাইভ করে বাসায় আসলো.?
ওরা সোজা রুমে চলে গেলো।
মামুনঃহ্যা বলো এতোদিন কেনো এতোতো নাটক.।আর তোমার জমজ বোন ছিলো সেটা আমাকে বলোনি কেনো.
অধরাঃহ্যা ও অনেক ছোট থেকেই নানু বাসায় থাকে./
আর সেদিন যখন আমি বের হচ্ছিলো তখন অদিতি আমাকে বললো ও নাকি তোমার সাথে ঘুরতে চাই..
আমি অনেকবার না করা সত্ত্বেও ও জেদ করে তাও ওকে পাঠিয়ে দেই/!সেদিন আমি তোমার সাথে থাকলে হয়তো আমি বেচে থাকতাম না..
ওর মৃত্যুর জন্য তোমাকে দায় করেছি,,তাই তো আর তোমার সামনে এসে এটা কখনো বলিনি তোমারর অধরা মরেনি বেচে আছে..
আর তাই কয়েকদিন দেশে থেকেই আমরা চলে যাই লন্ডন...
তোমার খোজ খবর সবসময় নিয়েছি কিন্তু শুনলাম তুমি দিনের পর তোমার অনেক অবনতি হচ্ছে..
তাই নিজের মুখের প্লাস্টিক সার্জারি করে চলে আসলাম দেশে যাতে করে আমাকে চিনতে না পারো..
আমি জানতাম হঠাৎ করে আমাকে দেখলে তোমার বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে..
আর বলতে পারবো যতটুকু দরকার ততটুকু বললাম..
মামুনঃকিন্তু তার পরেও কেনো আমার কাছ পরিচয় লুকালে কেনো??
অধরাঃআমি দেখতে চেয়েছিল তুমি অন্য কাওকে পেয়ে অধরা মানে আমাকে ভুলে যাও নাকি??
কিন্তু আমি যেটা দেখলাম আমি ভুল কাওকে ভালোবাসিনি আমি এমন একজনকে ভালোবেসেছি যে শুধু আমাকেই ভালোবাসে..
এই বলেই অধরা মামুনকে জড়িয়ে ধরলো..
আওওও
অধরাঃকি হলো?
মামুনঃহাতে ব্যাথা...
অধরাঃকিভাবে পেলে?
মামুনঃযখন গাছের সাথে গাড়ি ঘষে গেলো তখন পেয়েছিলাম..
অধরাঃহ্যা তুই তো একটা হারামি কিভাবে সত্যি বের করে নিতে হয়য় ভালোই জানিস হারামি
I love you
মামুনঃllove you too আর কখনো ছেড়ে যাবে নাতো?
অধরাঃনাহ আর কখনো যাবো না
এইভাবেই চলবে তাদের ভালোবাসাময় জীবন
সমাপ্ত
--------------------------------------------
https://banglalovestory247.blogspot.com/
tags:
Banglalovestory247, love story bangla, love story, নতুন রোমান্টিক লাভ স্টোরি, লাভ স্টোরি, রোমান্টিক লাভ স্টোরি বাংলা, ভালোবাসার গল্প, প্রেমের গল্প,নতুন ভালোবাসার গল্প, রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প, সেরা ভালোবাসার গল্প, প্রেমের গল্প ও কবিতা,
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন